প্রতিবেদন : জোট বাঁধুন। বদলে দিন বিজেপির সরকার। বাঙালি হিন্দু ও মুসলিম এক হলেই ৭০ শতাংশ নিশ্চিত। বুধবার অসমের শিলচরে নির্বাচনী জনসভা থেকে জোটের অঙ্ক বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Supremo Mamata Banerjee)। প্রচার মঞ্চ থেকে তিনি জোর গলায় বলেন, আপনারা এক হোন। একবার তো জোট বাঁধুন। জোট মানে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলই দেশকে পথ দেখাবে। সর্বভারতীয় স্তরে জোটের নেতৃত্ব দেবে তৃণমূলই।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফ কথা, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রকৃতপক্ষে লড়ছে তৃণমূলই। আমরা সর্বভারতীয় স্তরে জোটে আছি। বাংলায় আমরা একা লড়ছি বিজেপির বিরুদ্ধে। সেখানে কংগ্রেসও নেই, সিপিএমও নেই। ওরা বাংলায় বিজেপিকে সাহায্য করে। যদি আপনাদের সমর্থন পাই গোটা দেশে আমরাই নেতৃত্ব দেব। শিলচরের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Supremo Mamata Banerjee) স্পষ্ট করে দেন, বাঙালি হিন্দু আর বাঙালি মুসলমান— এই দুই গোষ্ঠী এক হলেই ৭০ শতাংশ নিশ্চিত। আপনারা আর কবে এক হবেন! এবার আপনারা এক হোন। আমাদের চার আসনে জেতান। তিনি বলেন, অসমে এবার ট্রায়াল দিতে এসেছি। ফাইনাল খেলতে আসব আবার। অসমেও খেলা হবে।
এরপরই তৃণমূল সুপ্রিমোর ঘোষণা, আমরা জিতলে এনআরসি হবে না। সিএএ হবে না। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হবে না, সব তুলে দেব। অনেকে এখনও ডি ভোটার লিস্টে রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের ভবিষ্যৎ জানেন না, আমি তাঁদের ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেব। বিজেপিকে বিঁধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গর্জন, তোমরা গোটা ভারতকে ডিটেনশন ক্যাম্প বানিয়ে দিয়েছ। জেলখানা বানিয়ে দিয়েছ। এবার মানুষ তোমাদের বর্জন করবে। মা-মাটি-মানুষ যেদিন ঘা দেবে, সেদিন বুঝবে কত ধানে কত চাল। তিনি বলেন, একটা দাঙ্গাবাজ, ভাঁওতাবাজ, লুটেরার সরকার চলছে দেশে। ওদের আর ভয় পাবেন না। সঙ্কল্প নিন ওদের দূর করার। ওরা শুধু বিভাজনের তাস খেলে। এনআরসিতে এখানে যখন লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, আমি আপনাদের পাশে ছিলাম। আমি কলকাতায় রোজ মিছিল করতাম। বিজেপির অত্যাচারের কাহিনি আমি জানি। আমি কলকাতায় আন্দোলন করছি, আর ওরা অসমে আমার নামে কেস দিচ্ছে। দেশ জুড়ে অনেক আগুন ওরা জ্বালিয়েছে, তাণ্ডব চালিয়েছে। আর নয়।
আরও পড়ুন- প্রথম দফায় তিনে তিন পাবে তৃণমূল কংগ্রেস!
মমতা বন্দ্য্যোপাধ্যায় এদিনও জানিয়ে দেন, এবার বিজেপি দুশো পারও করবে না। গতবার তিনশো পেরিয়েছিল, এবার বলছে ৪০০। আমি বলি আগে তো ২০০ পার করো। তারপর সাঁতার কেটো। এবার বিজেপি গোহারা হারবে। কারণ মোদিজি কথা রাখেননি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ১৫ লক্ষ করে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে দেবেন, দেননি। বছরে দু’কোটি করে চাকরিও দেননি। তাই বিজেপিকে এবার একটাও ভোট নয়। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে এখন বিজ্ঞাপনে মুখ ঢাকছেন। মোদিকে আর বিশ্বাস করবেন না। মনে রাখবেন বিজেপি একটা ভয়ঙ্কর দল।
এদিন বাংলায় তৃণমূল সরকারের সাফল্য এবং বিভিন্ন প্রকল্পের কথাও অসমের মঞ্চ থেকে একে একে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো একাধিক প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিজেপির শাসনে এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন না অসমের মানুষ। তা পেতে হলে ভোট দিতে হবে তৃণমূলকে। অসমের মানুষের কাছে তাঁর আবেদন, আপনারা আমাকে জেতান। আমাদের প্রার্থী রাধেশ্যাম এবং অন্যদের জেতান। শিলচরের পাশাপাশি অসমের বাকি তিনটি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনেও প্রচার করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অসমের বরপেটায় আবুল কালাম আজাদ, লখিমপুরে ঘনকান্ত চুতিয়া এবং কোকড়াঝাড়ে গৌরীশঙ্কর শরণিয়াকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।