প্রতিবেদন : ক্ষমাপ্রার্থনা কি বিজ্ঞাপনের মতোই বড় ছিল? খবরের কাগজে তো গোটা পাতা জুড়ে বিজ্ঞাপন দিতেন, ক্ষমাও চেয়েছেন কি সেভাবেই? ক্ষমা চাওয়ার বিজ্ঞাপন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখতে হবে না তো? মঙ্গলবার রামদেবকে রীতিমতো ভর্ৎসনার সুরে এই প্রশ্ন করল শীর্ষ আদালত। বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের জন্য রামদেবের ক্ষমাপ্রার্থনা ভঙ্গিমায় আদালত যে আদৌ সন্তুষ্ট নয় তা এদিন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। কারণ শীর্ষ আদালত মনে করে, ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিমা আদৌ আন্তরিক ছিল না। পতঞ্জলি সংস্থার ‘অসত্য বিজ্ঞাপন’ মামলায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করা নিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টের নিন্দার মুখে পড়লেন যোগগুরু রামদেব। যোগগুরুকে ফল ভোগ করার জন্য তৈরি থাকার কথাও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। গত মাসে সংস্থার অসত্য বিজ্ঞাপন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছিলেন পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা যোগগুরু রামদেবের সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণ। তবে সেই ক্ষমা চাওয়া নিয়ে আদালত খুশি নয় বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার পতঞ্জলির ‘অসত্য বিজ্ঞাপন’ মামলায় সশরীরে সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দেন রামদেব। সেখানেই শীর্ষ আদালতে ফের ভৎসর্নার মুখে পড়তে হয় রামদেবকে। যদিও আদালতের নির্দেশ অমান্য নিয়ে আদালতে ক্ষমাও চান রামদেব। যোগগুরুর আইনজীবী হাত জোড় করে আদালতকে বলেন, আমরা ক্ষমা চাইতে চাই এবং আদালত যা বলবে তা মানতে প্রস্তুত। এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করে, ফল ভোগ করার জন্য তৈরি থাকুন।
আরও পড়ুন-ভোট পিছোনোর ইঙ্গিত
গত মঙ্গলবারই পতঞ্জলির এই বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত মামলায় রামদেব এবং তাঁর সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণকে তলব করেছিল শীর্ষ আদালত। আদালত অবমাননা সংক্রান্ত একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলিকে নোটিশ দিয়ে কৈফিয়ত তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সেই নোটিশের কোনও জবাব না মেলায় ক্ষুব্ধ হয় আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমান্নুলার বেঞ্চ রামদেব এবং বালকৃষ্ণকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। জানায়, ২৩ এপ্রিল আদালতে হাজিরা দিতে হবে রামদেব এবং বালকৃষ্ণকে। এর পরেই সেই নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সশরীরে হাজিরা দিলেন যোগগুরু রামদেব।
আদালতের কাছে জনসমক্ষে লিখিত ভাবে ক্ষমা চাইবেন বলে আর্জি জানিয়েছিলেন রামদেব। কিন্তু সেই আবেদনে কান দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শুনানি চলাকালীন রামদেবের আইনজীবী জানান, মোট ৬৭টি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন যোগগুরু। তার জন্য মোট ১০ লক্ষ টাকাও ব্যয় হয়েছে। বিচারপতি হিমা কোহলির সাফ প্রশ্ন, রামদেবের ক্ষমাপ্রার্থনাটা কি খুব স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে? যেভাবে খবরের কাগজের গোটা পাতা জুড়ে বড় বড় অক্ষরে পতঞ্জলির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হত, সেরকমভাবে কি ক্ষমাপ্রার্থনার বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছে? যত টাকাই ব্যয় হয়ে থাকুক না কেন, সেই নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। বিচারপতি কোহলি জানান, পতঞ্জলির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার অপরাধে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের থেকে ১০০০ কোটি টাকা জরিমানা চেয়ে একটি আবেদন জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। এটাও কি আপনাদের কোনও পদক্ষেপ? আমাদের কিন্তু সন্দেহ রয়েই যাচ্ছে।