প্রায় ৭২% ভোট, হারের ভয়ে মেজাজ হারালেন ট্রেনি সভাপতি

Must read

প্রতিবেদন : ভোট শুরু হওয়ার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই বিজেপির ট্রেনি সভাপতি বালুরঘাটের প্রার্থী সুকান্ত বুঝে যান পরিস্থিতি অনুকূলে নেই। বিশেষ করে দ্বিতীয় দফার ভোটে শুক্রবার সকাল থেকেই বুথে বুথে মহিলাদের উপচে পড়া লাইনের ছবি ভয় ধরায় সভাপতিকে। এরপরেই হারের ভয়ে মেজাজ হারাতে শুরু করেন সুকান্ত। প্রথমে নিজের বুথে ভোট দিতে গিয়ে সিরিয়াল নাম্বার ভুলে যাওয়া দিয়ে শুরু। এরপর পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। আইসিকে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে। দিনভর নাটক চলতেই থাকে। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে বালুরঘাটের প্রার্থীর ভয়ার্ত-দিশেহারা মুখে দেখে বোঝাই যাচ্ছিল হারের ভয় বেশ ভালই চেপে বসেছে। বাংলার তিনটি কেন্দ্র-সহ দেশের ৮৮টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ হল। দ্বিতীয় দফার এই ভোটপর্ব মিটেছে মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই। বিশেষ করে রাজ্যের দার্জিলিং, রায়গঞ্জ ও বালুরঘাটের ভোটকেন্দ্রগুলিতে মানুষের লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। অন্যদিকে, সন্দেশখালিতে এনএসজি নামিয়ে বিজেপির নাটক সারাদিন ধরে টেলিভিশনের পর্দায় দেখল মানুষ। এছাড়াও বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল করেছে কমিশন। এই ঘটনাগুলিও দ্বিতীয় পর্বের ভোটের সঙ্গে সমান্তরালভাবে মিশে গিয়েছে। বিশেষ করে পরবর্তী ভোটগুলিতে ভোটারদের প্রভাবিত করতে এনএসজির কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে রোবোট নামিয়ে যে দিনভর নাটক সন্দেশখালিতে চলল তাতে মানুষ কতটা প্রভাবিত হবেন সেটা পরের বিষয় কিন্তু বিনোদনের অভাব ছিল না। বাংলার তিন কেন্দ্রে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে ভোটগ্রহণ, প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দার্জিলিং কেন্দ্রে ৭১.৪১ শতাংশ, রায়গঞ্জ কেন্দ্রে ৭১.৮৭ শতাংশ এবং বালুরঘাট কেন্দ্রে ৭২.৩০ শতাংশ ভোট পড়েছে।

আরও পড়ুন-স্ত্রীধনে অধিকার নেই স্বামীর: সুপ্রিম কোর্ট

এদিন, ভোট শেষে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Bratya Basu- Chandrima Bhattacharya) রাজ্য বিজেপিকে তুলোধোনা করেছেন। ব্রাত্য বলেন, যে বালুরঘাটকে বিজেপি বালুঘাট বা বেলুরঘাট বলতেই বেশি অভ্যস্ত, সেই বালুরঘাটে আজ সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে। বালুরঘাটের মানুষ আজ সেই অপমানের জবাব দিয়েছে। বালুরঘাটের বিজেপির প্রার্থী ট্রেনি সভাপতি প্রাক্তন সাংসদ তকমা নিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে বেরবেন। এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। আজকেও পুলিশের আইসিকে হুমকি দিয়েছেন, আইসির দিকে তেড়ে গিয়েছেন। তৃণমূলকর্মীদের উপর চড়াও হয়েছেন। পুরোটাই দিশেহারা দেউলিয়া রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। নিজে অধ্যাপক হওয়া সত্ত্বেও কোনও অধ্যাপক তাঁর সঙ্গে থাকেন না। অন্তত ২০টি এফআইআর রয়েছে যার বিরুদ্ধে, এমন লোকজনকে নিয়ে ঘুরে বেরান তিনি। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, বাংলার ৩ কেন্দ্রেই ভোট দেওয়ার জন্য মহিলাদের স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছ্বাস প্রমাণ করে দিয়েছে, মেয়েরা বিজেপির মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তাঁদের জবাব ছুঁড়ে দিয়েছে।
রায়গঞ্জে অনেক কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হবে না। রায়গঞ্জের নির্বাচিত প্রার্থীকে বিজেপি যোগ্য মনে করেনি, তাকে কলকাতার একটি কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, বিজেপিও জানে রায়গঞ্জের মানুষের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারেনি তারা। সেখানেও ভোটদানে অনেক বাধা দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু মানুষ তা মানেনি।
দার্জিলিংয়ে বিজেপির সাংসদ ৪০টি বুথে পুনরায় ভোটগ্রহণ চেয়েছেন। আবার নির্বাচন চাইছেন মানে ফলপ্রকাশের আগেই তিনি বুঝে গিয়েছেন যে তিনি হেরে বসে আছেন।

Latest article