প্রতিবেদন : রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিজেপির ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের ফল যে সন্দেশখালি তা প্রমাণ হয়ে গেল। নির্লজ্জতার সব নজির ভেঙে দিয়েছে বিজেপি। গোটা দেশের কাছে বাংলাকে ছোট করেছে। বাংলার মহিলাদের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে দেশবাসীর সামনে। যদি এতটুকু লজ্জাবোধ থাকে তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাক বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তা না হলে বুঝব তারাও শামিল এই ষড়যন্ত্রে-চক্রান্তে। তাদের অঙ্গুলিহেলনেই সন্দেশখালিতে এই ঘৃণ্য ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিজেপির বুথ সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল, শান্তি দোলুই ও জবারানি সিংহের কথপোকথনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তিনি বলেন, বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাক বিজেপি। বলুন আমরা ভুল করেছি। রাজনৈতিক স্বার্থে ১০ কোটি মানুষের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছি। বাংলার ৫ কোটি মহিলার সম্মানকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে বিজেপি। ভিডিওর কথা অনুযায়ী ২ হাজার টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ করা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে। সন্দেশখালিতে এরকম কোনও ঘটনা ঘটেইনি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ৬-৭ মাস আগের তারিখ দিয়ে অভিযোগ করানো হয়েছে। অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, যারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে মহিলাদের সম্ভ্রম ২ হাজার টাকায় বিক্রি করে সেই দলকে ভোট দেওয়ার আগে অন্তত ১০ বার ভাববেন। বাংলার মানুষের কাছে এটা আমার অনুরোধ। এখন কোথায় গেল জাতীয় মহিলা কমিশন? এসসি কমিশন? তোপ অভিষেকের। বিচারব্যবস্থার একাংশের বিরুদ্ধেও এদিন ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। অভিষেকের কথায়, পুলিশকে তদন্ত করার সুযোগটুকুও দেওয়া হল না। বিজেপি সিবিআই চেয়েছে তাই সিবিআই দেওয়া হয়েছে। বিজেপি ইডি চেয়েছে তাই ইডি দেওয়া হয়েছে। এটা লজ্জার। যারা বিচারব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন তাঁরা কী বলবেন এবার। বিচারের বাণী নিভৃতে নীরবে কাঁদে। সত্যি কথা বলার জন্য যদি আমাকে জেলে ভরা হয়, ফাঁসিতে ঝোলানো হয় তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু সত্যিটা বলবই। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় প্রচারে এসে সন্দেশখালি নিয়ে কত বড়-বড় কথা বলে গিয়েছেন। আপনারা ভেবেছিলেন সন্দেশখালিকে ঢাল করে দেশ জুড়ে প্রচার করে বাংলাকে ছোট করবেন। আজ সন্দেশখালিই প্রমাণ করে দিয়েছে বিজেপি দলটাই জালি। তোপ অভিষেকের। তাঁর সংযোজন, এখন বিজেপির মুখপাত্ররা বলছেন, কে গঙ্গাধর আমরা চিনি না। অথচ সকালে একটি চ্যানেলে গঙ্গাধর কয়াল নিজেই স্বীকার করেছেন এটি তাঁরই ভিডিও। গলার স্বরও তাঁর। কিন্তু বিকেলেই আবার উল্টো কথা বলছেন। এরপরই অভিষেক বলেন, আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছোট করতে চান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছোট করতে চান, করুন। কিন্তু আমাদের ছোট করতে গিয়ে বাংলার মানুষকে ছোট করবেন না। কয়েক দিন আগেই শুভেন্দু অধিকারী বলেছিল, ৩৫৫ করার জন্য যে পরিবেশ তৈরি করার তা আমি করব। এরা বারবার বলেছে ৩৫৫ চাই। শুক্রবারও বলেছে ২০২৬-এ ভোট হবে না। সরকার ভেঙে দেব। আবার নির্বাচন করব। এই তো ওদের চরিত্র। এখন সবটাই জলের মতো পরিষ্কার কীভাবে, কী কারণে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে? বিজেপি নেতাদের অনুরোধ করব, ২০১৯-এ যেমন দেশের মানুষ আপনাদের সুযোগ দিয়েছে তেমনি বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয় বারের জন্য সুযোগ দিয়েছেন। তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। এই অপ্রিয় সত্য আপনাদের হজম করতে হবে।
আরও পড়ুন- বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি নিয়ে জল্পনা খারিজ রাজ্য সরকারের