প্রতিবেদন: চরম নির্বাচনী বিপর্যয়ের আশঙ্কায় ভুগছে নরেন্দ্র মোদির দল। প্রথম ৩ দফার নির্বাচনে ভোটের (Vote) হার কম দেখে ঘুম ছুটেছে বিজেপি নেতৃত্বের। নিজেদের হিসেবেই স্পষ্ট, বিদায় আসন্ন। দিল্লির ক্ষমতা থেকে সরতেই হচ্ছে তাদের। কারণ, অতীতের অঙ্ক থেকে গেরুয়া শিবিরের শিক্ষা, একমাত্র ১৯৯৯ ছাড়া যতবারই লোকসভা নির্বাচনে তুলনামূলকভাবে কম ভোট পড়েছে, ততবারই কেন্দ্রে বদল হয়েছে সরকারের। এবারে ইতিমধ্যেই ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ২৮৩টি আসনে ভোট হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি আসনে ভোটপর্ব শেষ। কিন্তু গেরুয়া শিবির হিসেব কষে দেখেছে, ভোটের হারই ভেঙে দিয়েছে তাদের দীর্ঘলালিত স্বপ্ন। বিশেষ করে সদ্যসমাপ্ত তৃতীয় দফার ভোটের ৯৩টি আসনের অধিকাংশতেই বাজিমাত করতে চলেছে ইন্ডিয়া জোট। ফলে রীতিমতো স্নায়ুর চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। কারণ, বিজেপির ঘরের খবর, বিহারে তাদের ভোট কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে।
আরও পড়ুন- দেশের বোঝা মোদি, জুটবে না গরিষ্ঠতা: বিস্ফোরক প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ সিবিআই কর্তা
গেরুয়া হিসেব বলছে, ১৯৮৯-এ রাজীব গান্ধীর কংগ্রেস সরকারের পরিবর্তন ঘটিয়ে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন, তখনও ভোটের হার কমেছিল উল্লেখযোগ্যভাবে। একইভাবে ভোটের হার কমেছিল ১৯৯১-এ নরসিংহ রাওয়ের নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার ফিরে আসার সময়ে। ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছিল শুধুমাত্র ১৯৯৯ সালে। ১৩ মাস ক্ষমতায় থাকার পরে আবার ভোটে যখন বাজপেয়ীর গেরুয়া সরকার ক্ষমতায় ফিরেছিল। এবারে বিজেপির পক্ষে সবচেয়ে ভয়ের কারণ, যার ভরসায় তারা ভোটযুদ্ধে (Vote) নামে সেই মোদি হাওয়া ব্যাপারটাই এবারে উবে গিয়েছে বেমালুম। তারওপর আবার ভোট পড়েছে চোখে পড়ার মতো কম। ঠিক এই জায়গাটাতেই অশনি সঙ্কেত দেখছে বিজেপি। বাকি ৪ দফায় ব্যাপরটা সামাল দেওয়া একেবারেই অসম্ভব বলে মনে করছেন বিজেপির ভোট-ম্যানেজাররা। সম্ভবত সেই কারণেই নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে এবার নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে চাইছে বিজেপি। তারই স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে ভোটের হার প্রকাশে রহস্যজনক বিলম্ব। এবং ভোটের হারের রহস্যজনক বৃদ্ধি। কমিশন প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ভোটের হারের প্রথমে একরকম হিসেব দিলেও পরে তা বদলে ফেলে। দেখা যায়, প্রথম দেওয়া হিসেবের তুলনায় দ্বিতীয় হিসেবে ভোটের হার রহস্যজনকভাবে বেড়ে গিয়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। লক্ষণীয়, কমিশনের ভূমিকায় প্রথম থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইভিএমে বিজেপির কারচুপির ব্যাপারেও আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন তিনি। পরে এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও দিয়েছে তৃণমূল।