প্রতিবেদন: ঘটনার বৈচিত্রে সোমবার রীতিমতো জমে উঠল চতুর্থদফার নির্বাচন। অন্ধ্রপ্রদেশে ভোটের লাইনে এক ভোটারের গালে থাপ্পড় কষালেন তেনালির ওয়াই এস আর কংগ্রেসের বিধায়ক এ শিবকুমার। সঙ্গে সঙ্গে ওই বিধায়ককেও পাল্টা চড় কষালেন ওই যুবক। এই নিয়ে ব্যাপক ধস্তাধস্তি বেধে যায় ভোটের লাইনে। বিধায়কের লোকজন ব্যাপক মারধর করে ওই প্রতিবাদী ভোটারকে। এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অন্ধ্রেই টাকার বিনিময়ে ভোটের দাবিতে পথ হয়েছে বেশ কয়েকটা জায়গায়।
আরও পড়ুন-পরিস্রুত জল দিতে মহানন্দায় নমুনা সংগ্রহ করল শিলিগুড়ি পুরনিগম
শহরাঞ্চলে ভোটের শর্ত হিসেবে জেনারেটর দাবি করেছেন একটি আবাসনের বাসিন্দারা। গেরুয়া রাজ্য মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে ভোটার টানতে আয়োজন করা হয়েছিল পোহা, জিলিপি এবং আইসক্রিমের প্লেটের। সোমবার চতুর্থদফার নির্বাচনে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৬২.৩১ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন সূত্রে পাওয়া খবর, ভোটের হারে দেশের শীর্ষে রয়েছে বাংলা। ভোট পড়েছে ৭৫.৬৬ শতাংশ। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে জম্মু-কাশ্মীরে, ৩৬.৫ শতাংশ। তবে ১৯৯৬-এর পরে এখানে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়ল এবারেই। এদিন দেশের ৯টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোটগ্রহণ হয়।
টাকার বিনিময়ে ভোট, পথ অবরোধ টাকার বিনিময়ে ভোটের দাবিতে রবিবার থেকেই রাস্তায় মিছিল বের হয় অন্তত ৫টি জায়গায়। রাস্তা অবরোধও হয়। পালনাড়ু সাত্তেনাপল্লিতে মিছিলকারীদের অভিযোগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, ভোটপিছু ৫০০০ টাকা করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পালন করা হয়নি। পিথাপুরমে এক প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনেও একই অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান একদল মহিলা। সোমবার সকালে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের মাত্রা এমন জায়গায় পৌঁছায় যে ছুটে আসতে হয় বিশাল পুলিশবাহিনীকে। বিক্ষোভকারীদের অনেকের আবার ৫০০০ টাকা পছন্দ নয়, তাঁদের দাবি, ভোটার পিছু দিতে হবে ৬০০০ টাকা করে। বিজয়ওয়াড়ায় পুরসভার একটি অফিস থেকেও নাকি এক বিধানসভার প্রার্থী ভোটারপিছু ১০০০-১৫০০ টাকা করে বিলিয়েছেন বলে খবর। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয়, একটি আবাসনের বাসিন্দারা দাবি করেন, জেনারেটর সেট কিনে দিতে হবে তাঁদের জন্য। তবেই মিলবে ভোট। তবে টাকার বিনিময়ে ভোট কিনতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর থেকে ৫০০ বা ১০০০ টাকা বেশি দিতে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু প্রার্থীকে। পুরোপুরি স্বেচ্ছায়।
আরও পড়ুন-বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগ নাইটদের
ভোট দাও, জিলিপি খাও
তবে প্রতিশ্রুতি পালিত হয়েছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। এখানে জেলা প্রশাসন আগেই জানিয়েছিল, সকাল ৯টার মধ্যে ভোট দিলে বিনামূল্যে মিলবে পোহা, জিলিপি এবং আইসক্রিমের প্লেট। স্থানীয় খাবারের দোকানে আঙুলে ভোট দেওয়ার কালি দেখালেই করা হবে আপ্যায়ন। স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। মূলত, প্রবীণ এবং নবীন ভোটারদের জন্য। সোমবার দেখা গেল, ভোটের লাইনের তুলনায় দীর্ঘ লাইন খাবারের দোকানের সামনেই। যদিও প্রশাসনের দাবি, ভোটদানে উৎসাহ বৃদ্ধি করতেই এই আয়োজন। কিন্তু নেপথ্যে আসলে কলকাঠি নাড়ছে বিজেপিই। কারণ ইন্দোরে কংগ্রেস প্রার্থী নাম প্রত্যাহার করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে। ফলে গুটিকয়েক সাধারণ প্রার্থী ছাড়া বিজেপি প্রার্থীর সামনে এখন ফাঁকা মাঠ। এই অবস্থায় কংগ্রেস ডাক দিয়েছিল, ভোট দিন নোটায়। তা রুখতেই বিজেপির লোভনীয় জলখাবার-কৌশল। এদিনই দাক্ষিণাত্যে সমাপ্ত হল ভোটপর্ব। অন্ধ্রে লোকসভা এবং বিধানসভার সব আসনেই ভোটগ্রহণ হল। তেলেঙ্গানায় লোকসভার সব আসনেই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন মানুষ। ওড়িশায় ৪টি আসনে ভোট হল এদিন। ওই ৪ আসনের সবকটি বিধানসভা আসনেও ভোট দিলেন মানুষ। সবমিলিয়ে ভোটপর্ব চুকল বাংলার ৮টি, অন্ধ্রের ২৫টি লোকসভা আসন, বিহারের ৫টি, ঝাড়খণ্ডের ৪, মধ্যপ্রদেশের ৮, মহারাষ্ট্রের ১১, ওড়িশার ৪, তেলেঙ্গানার ১৭, উত্তরপ্রদেশের ১৩ এবং জম্মু-কাশ্মীরের
একটি আসনে।