প্রতিবেদন : আরও ১০ দিন। মোদিবাবু বিদায় হবেন। তিনি আর ১০ দিনও না থাকলেই ভাল। তাহলে দেশ বেঁচে যায়। শনিবার বসিরহাটের মিনাখাঁ ও বারাসতের বাগুইআটির জনসভা থেকে বিজেপির বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, বিজেপিকে হারাবই। এটা আমাদের শপথ। বাংলাই বিজেপিকে হটাবে, ইন্ডিয়া জোটকে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে। বিজেপির বিষদাঁত ভেঙে দেবেন বাংলার মায়েরাই।
এখনই বিদায় হলে ভাল : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন তাঁর বায়োলজিক্যাল ফাদার-মাদার নেই। তাঁকে নাকি ঈশ্বর পাঠিয়েছেন! ঈশ্বর নাকি ওনাকে বলে দিয়েছেন, ২০৪৭ সাল পর্যন্ত উনি দেশের হয়ে কাজ করবেন। আমি বলি, এখনই বিদায় হলে ভাল হয়। আরও ১০ দিন সময় আছে, সেটাও না থাকলে ভাল। তাহলে দেশ বেঁচে যায়। লজ্জাও করে না! মিথ্যেবাদী। একটা ঝুটা দল, ভাঁওতাবাজ-জুমলাবাজ দল। এদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে বিদায় করে দিন।
আরও পড়ুন-বাহিনী-এজেন্সি দিয়ে ভোটে, জেতার স্বপ্ন চুরমার বিজেপির
বাংলাই বিজেপিকে হটাবে : মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, বিজেপি টাকা নিয়ে এলে, তা পকেটে রেখে দিন। বলুন, ১৫ লক্ষ টাকা দাও, তারপর ভোট দেব। লক্ষ লক্ষ টাকা ধরা পড়ছে। প্যাকেট করে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। টাকা দিয়ে ভোট কিনবে। টাকা দিয়ে অনেককে কিনবে মনে করেছে এরা। কিন্তু বাংলাই বিজেপিকে হটাবে, ইন্ডিয়া জোটকে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে।
ভোট ভাগাভাগি করবেন না : তাঁর সাফ কথা, বিজেপি ভোটের সময় টাকা নিয়ে রাজনীতি করে। আমরা করি না। যে করে দল তাকে মনেও রাখে না। পরিষ্কার বলছি, দল কোনও অন্যায়কে প্রশয় দেয় না, দেবেও না। আগামী দিন ভোটটা ভাগাভাগি করবেন না, বিজেপিকে জিততে দেবেন না। আপনার একটা ভোট অন্য দল পেলে, বিজেপি হাসবে। বিজেপিকে হাসতে দেবেন না, কাঁদতে দিন। বিদায় করে দিন।
সংরক্ষণ কাড়তে দেব না : তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, বিজেপি আম্বেদকর সাহেবের সংবিধান নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আদিবাসী-সংখ্যালঘুদেরও সংরক্ষণ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা তফসিলি-ওবিসিদের সংরক্ষণ কাড়তে দেব না। এনআরসি-সিএএ করতে দেব না। ইউনিফর্ম সিভিল কোড করতে দেব না। আমরা ভাইবোনেদের চাকরিতে নজর দেব।
আরও পড়ুন-শাহজাহানপুরে বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষ, মৃ.ত ১১
রাজনৈতিক বদলা নেবই : মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, বিজেপি নেতাদের এত সাহস, সন্দেশখালিকে অসম্মান করে! লজ্জা করে না মানুষের ভোটে জিততে পারো না। নন্দীগ্রামে ফের গুন্ডামি করেছে গদ্দার। শুক্রবার মধ্যরাতে আমাদের মেন লোকটাকে খুন করিয়েছে। তারপর সকাল থেকে নন্দীগ্রাম ও খেজুরি দখল করেছে। কী ভেবেছো, নন্দীগ্রাম ও খেজুরি নিয়ে বাংলা জয় হয়ে যাবে, দিল্লি জয় হয়ে যাবে? মানুষ বুঝে নেবে। তুমি ওই ৮-১০টি বুথ নিয়ে থাকো। আমি ছাড়ব না। রাজনৈতিক বদলা নেবই নেব।
মোদির ভিক্ষা চাই না : সমুদ্রসাথীরা যাঁরা দু’মাস সমুদ্রে যেতে পারেন না, তাদের ১০ হাজার টাকা ভাতা দিচ্ছি। কিসান ভাতা, সবুজসাথী, স্মার্ট ফোন, দেড় বছরের মধ্যে বিনা পয়সায় জল, সারাজীবন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চলছে চলবে। বিনা পয়সায় রেশনও চলবে। ওরা পাকাবাড়ি দিচ্ছে না, একশো দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না। নো গ্যারান্টি, ফোর টোয়েন্টি। আমরা একশো দিনের টাকা দিয়েছি, কর্মশ্রী করে দিয়েছি। ১১ লক্ষ পাকাবাড়িও করে দেব। মোদির ভিক্ষা চাই না।
বিষদাঁত ভেঙে দেবে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জোড়াফুল চিহ্নে ভোট দিয়ে তৃণমূলকে জেতান। জেতার পর তারপর মিনাখাঁয় আসব আবার। আমাকে ওরা খালি করতে চায়। কিন্তু আমি খালি হব না, বিজেপিকে খালি করে দেব। মানুষের জন্য লড়ে যাব। আবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবে বলছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে হাত দিলে মায়েরা বিষদাঁত ভেঙে দেবে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
বাংলা থেকেই চালাব : মুখ্যমন্ত্রীর বলেন, দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছেন মোদিবাবু। স্বাধীন দেশকে পরাধীন করে রেখেছেন। সেই শিকল ভেঙে বিজেপিকে উপড়ে ফেলবে বাংলাই। বাংলাই পথ দেখাবে। ইন্ডিয়া জোটের সরকার বাংলাই গড়বে। বাংলা থেকেই দিল্লি চালাব। এই বাংলা না থাকলে স্বাধীনতা হত না। বাংলা না থাকলে বিজেপিও শেষ হবে না। ৩৪ বছরের বাম সরকারকে যদি উপড়ে ফেলতে পারি, বিজেপিকেও উপড়ে ফেলতে পারব। বিজেপির ডার্টি গেম অনেক হয়েছে, আর নয়।
পিএম কেয়ারের টাকা কোথায় : তৃণমূল নেত্রীর প্রশ্ন, ১৫ লক্ষ দেবেন বলেছিলেন, বছরে ২ কোটি লোককে চাকরি দেবেন বলেছিলেন, দিয়েছেন? পিএম কেয়ারের টাকা কোথায় গেল, রেল, সেল, কোল ইন্ডিয়া সবই তো বিক্রি করে দিয়েছেন! কয়লা-গরুর কথা বলেন, ওইগুলো সেন্ট্রালের দায়িত্বে। উচিত তো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের গ্রেফতার করা। কয়লা আমদানি নিয়ে আদানির বিরুদ্ধে কেস চলছে।
পরিবারগুলো বাঁচত না : মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা অ্যাসেম্বলিতে বিল পাশ করলাম জেশপ আর ডানলপ খুলব বলে। আজ পর্য়ন্ত পারমিশন দিল না কেন্দ্র। কর্মীরা না খেয়ে মারা যেত। আমরা ১০ হাজার করে মাসোয়ারা দিই, ৪২৫ টাকা করে ইএসআই স্কিমে দিই। না হলে পরিবারগুলো বাঁচত না।