প্রতিবেদন: নির্বাচনী প্রচারে মোদির অসংলগ্ন এবং আপত্তিকর ‘মুজরা’ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র সাকেত গোখেল বুঝিয়ে দিয়েছেন ভোটের লোভে ঠিক কতটা নীচে নেমে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, নিজের আসল চেহারাটা আর লুকোতে পারবেন না মোদি। প্রধানমন্ত্রীর কথার তীব্র নিন্দা করেছেন বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। মুজরা শব্দটি ব্যবহার করে তিনি নিজের পদের যেমন অপমান করেছেন তেমনই অসম্মান করেছেন এই বিশেষ পেশাকে। এক হাত নিয়েছে কংগ্রেস এবং আরজেডিও। কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে মোদির মানসিক স্থিতি নিয়েও। আসলে নিজেকে ঈশ্বরের দূত হিসেবে দাবি করে লোক হাসানোর পরেও থামতে চাইছেন না মোদি। হয়তো জানেনই না, ঠিক কোথায় থামতে হবে। তাই শনিবার আবার অসংলগ্ন কথা শোনা গেল তাঁর মুখে।
আরও পড়ুন-হিমন্ত বিশ্বাসঘাতক, বললেন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার
সারাদেশ জুড়ে যখন ষষ্ঠ দফার ভোট গ্রহণ চলছে, তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিহারের কারাকাত এবং পাটলিপুত্র লোকসভা কেন্দ্রে একের পর এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে বলেছেন, আমি ইন্ডিয়া ব্লকের এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের অধিকার কেড়ে নিয়ে সংখ্যালঘুদের ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেব। ইন্ডিয়া জোট তাদের দাসত্ব করতে পারে এবং ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করার জন্য ‘মুজরা’ করতে পারে। ইন্ডিয়া জোটের নেতারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বিরোধীদের দাসত্ব করার এবং সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের জন্য মুজরা মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁদের কথায়, মুজরা হল নৃত্যের একটি ঐতিহ্যবাহী রূপ যা ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল যুগে জন্ম নিয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখেল এই মন্তব্যের জন্য মোদির সমালোচনা করে বলেছেন, নারীশক্তি থেকে, লোকটি এখন মুজরা-র মতো শব্দ ব্যবহার করতে নেমেছেন। সাকেত গোখেল এক্স-এ লিখেছেন, ১০ বছরের জনসম্পর্ক এবং সাবধানে ইমেজ তৈরি করার পরে, মোদি তাঁর আসল চেহারাকে আর লুকাতে পারবেন না। এত সস্তা ভাষা তাঁর! প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর বিদেশ সফরের সময় তিনি কী বলছেন তা ভাবতে সত্যিই ভয় লাগে। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা এক্স পোস্টে হিন্দিতে লিখেছেন: আজ, আমি প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে মুজরা শব্দটি শুনেছি। মোদিজি, মনের এই অবস্থা কেন? কিছু ওষুধ নিচ্ছেন না কেন? অমিত শাহ এবং জে পি নাড্ডার অবিলম্বে তাঁর চিকিৎসা করা উচিত। সম্ভবত সূর্যের নিচে বক্তৃতা দেওয়া তাঁর মস্তিষ্কে খুব বেশি প্রভাব ফেলেছে। আরজেডি-র মনোজ ঝা বলেছেন, মোদি যা বলছেন তা নিয়ে তিনি চিন্তিত। আরজেডি সাংসদ বলেন, গতকাল পর্যন্ত আমরা তাঁর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছি, এখন আমরা চিন্তিত। আমি সম্প্রতি বলেছিলাম যে তিনি জাঁকজমকের প্রলোভনের শিকার হচ্ছেন। মাছলি, মাটন, মঙ্গলসূত্র এবং মুজরা… এটা কি একজন প্রধানমন্ত্রীর ভাষা? শিবসেনার (ইউবিটি) প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করার সময় লিখেছেন, শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠুন, মোদিজি। সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র ফখরুল হাসান চান্দ বলেছেন, যখন ষষ্ঠ পর্বের ভোটগ্রহণ চলছে এবং পরবর্তী পর্বের প্রচার চলছে, তখন বিজেপি হতাশ হয়ে পড়েছে। তাদের ভাষা বদলে গেছে, তারা এখন ‘মুজরা’ নিয়ে কথা বলছে। বিজেপির কাছে জনগণের প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই এবং তারা শুধু মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। জনগণ ভালভাবে সচেতন এবং নির্বাচনে আমাদের ভোট দেবে এবং নিশ্চিতভাবেই সরকার গঠন করতে চলেছে ইন্ডিয়া ব্লক। আসলে মোদির অসংলগ্ন মন্তব্যের প্রতিবাদেই স্পষ্ট, কতটা ঐক্যবদ্ধ এবং আত্মবিশ্বাসী বিরোধী শিবির।