প্রতিবেদন: চলতি বছর লাগাতার তাপপ্রবাহের সাক্ষী থেকেছে ভারত-সহ এশিয়ার একটা বড় অংশ। উত্তর-পশ্চিম ভারতের পরিচিত তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তো আছেই, গোটা এপ্রিল মাস জুড়ে পূর্ব ভারতও লাগাতার তাপপ্রবাহের শিকার হয়েছে। কিন্তু ঠিক কী কারণে তাপমাত্রা এতটা বাড়ছে? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জলবায়ুর (Climate) পরিবর্তনের প্রভাবেই তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। আর তার জেরেই গত এপ্রিলে ভারতে তাপপ্রবাহের আশঙ্কা বেড়েছে ৪৫ গুণ! জলবায়ুর (Climate) তারতম্যের জেরেই বিশ্ব জুড়ে তাপমাত্রা অন্তত ১.২ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন-এর রিপোর্টে। এর জেরে বিপদে পড়তে চলেছেন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষজন। বিজ্ঞানীদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনে ভিলেন মানুষই। অত্যধিক গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ও গাছ কাটার মতো হঠকারী পদক্ষেপের মাশুল গুনছে মানবসভ্যতা।
আরও পড়ুন-বিভাজনের রাজনীতিই শেষ ভরসা এবার মরিয়া মোদির
জানা গিয়েছে, মালয়েশিয়া, ব্রিটেন, সুইডেন, নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন আবহাওয়া সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৩ জন বিজ্ঞানী এই বিস্ফোরক রিপোর্টটি তৈরি করেছেন। আবহাওয়ার তথ্য পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, শিল্পবিপ্লব পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় বর্তমানে তাপমাত্রা বেড়েছে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। নতুন রিপোর্টে এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল বিশ্লেষণের জন্য পৃথক মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, চলতি বছরে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১ ডিগ্রি। তবে ভবিষ্যতে পশ্চিম এশিয়ায় তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। তাঁদের মত, ২০৪০ বা ২০৫০ সালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি ছুঁতে পারে। নিশ্চিতভাবেই এর ফল হবে মারাত্মক।
গ্রান্থাম ইনস্টিটিউটের গবেষক মরিয়ম জাকারিয়ার বক্তব্য, বিশ্ব জুড়ে যদি অবিলম্বে তাপ নিঃসরণের হার নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, সেক্ষেত্রে তাপমাত্রা এভাবেই উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আগামী দিনে এই বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর তাপপ্রবাহও তখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠবে। বর্তমান সময়ে তীব্র দাবদাহের ব্যাপক প্রভাব পড়ছে জনজীবনে। অত্যধিক গরমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষআবাদের কাজ। ফলে খাদ্যশস্যের জোগানে ঘাটতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এবছর তীব্র জলসঙ্কটের সাক্ষী থেকেছে বেঙ্গালুরু-সহ বহু শহর। পাশাপাশি তাপমাত্রাজনিত কারণে গত এপ্রিলে এদেশে মৃত্যুর সংখ্যাও রেকর্ড ছুঁয়েছে।