প্রতিবেদন : এগারো বছর আগে ভারতীয় ক্রিকেটের ‘ঈশ্বর’ শচীন রমেশ তেন্ডুলকর বিদায়ী মঞ্চে আবেগ চেপে রাখতে পারেননি। ১৬ বছর আগে এই যুবভারতীতেই বিদায়ী ম্যাচ খেলে উঠে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন কিংবদন্তি জার্মান গোলকিপার অলিভার কান। সেই যুবভারতীতে ৬০ হাজার সমর্থকের সামনে যখন বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যায় দেশের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri), আবেগ কি তাঁকে কোনওভাবেই গ্রাস করবে না? কুয়েত দ্বৈরথের আগে ভারত অধিনায়ক সরাসরি জানিয়ে দিলেন, আবেগ সরিয়ে তিনি বিদায়ী ম্যাচ খেলতে নামছেন। কুয়েতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফুটবলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটা জিততে হবে তাঁদের।
দেশের জার্সিতে ম্যাচের আগে শেষ সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সুনীল (Sunil Chhetri) সেই শান্ত। বললেন, ‘‘অনেক চেষ্টা করছি, আবেগ যেন কোনওভাবেই n এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে আমার বা টিমের বাকিদের গ্রাস না করে। আমি আবার অনুরোধ করছি, এটাকে আমার শেষ ম্যাচ হিসেবে দেখবেন না। ভারত-কুয়েত ম্যাচ হিসেবেই দেখা হোক। এই ম্যাচ নিয়ে ছোট যুদ্ধ লড়ছি। প্রথম দিন শিবিরে যোগ দিয়েই সতীর্থদের বলে দিয়েছিলাম, আমার সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়ে দিয়েছি। এটা ভুলে যাও। ড্রেসিংরুমে আবেগ ঢুকতে দিইনি। চাইব, শেষ ম্যাচ জিতে ৩ পয়েন্ট আনতে।’’
আরও পড়ুন- পিএসজিতে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল, পুরনো ক্লাবকে তোপ এমবাপের
অভিষেক ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গোল করেছিলেন। শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচেও কি গোল করে দলকে জেতাতে চান? সুনীল বলছেন, ‘‘আমি গোল করি, বা অন্য কেউ, কুয়েতের বিরুদ্ধে জয়টাই আসল। তাহলে আমরা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে খেলার সুযোগ পাব। যা আগে কখনও পারেনি ভারত। ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। বিদায়ী মঞ্চে এর থেকে ভাল ম্যাচ আমার জন্য হতে পারত না।’’
সুনীলের সংযোজন, ‘‘ভাবুন, তৃতীয় রাউন্ডে গিয়ে আমরা জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোর সঙ্গে খেলছি। লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি বা না পারি। আমাদের চেষ্টা এমন থাকা উচিত যাতে লক্ষ্যপূরণ করতে পারি। ১৯ বছরের কেরিয়ারে এমন একটা পরিস্থিতির সামনে কখনও পড়িনি। এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে কোনও চাপ নেই আমাদের উপর। কিন্তু মাঠে নেমে ম্যাচটা উপভোগ করতে হবে। তবেই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব।’’
বৃহস্পতিবারের পর প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার হয়ে যাবেন সুনীল। কে হবেন সুনীল-পরবর্তী ভারতীয় ফুটবলে নম্বর নাইন? মজার ছলে দলনায়কের উত্তর, ‘‘দলের সবাই চায়, আমি যেন অবসর ভেঙে না ফিরি।’’ এরপরই সিরিয়াস মুডে সুনীল, ‘‘মনবীর, ডেভিড, শিবশক্তির মতো ফুটবলাররা লাইন দিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে। ওরা প্রত্যেকে ভিন্ন ধরনের স্ট্রাইকার। কোচের কাছে বিকল্প থাকবে।’’ ১১ জুন কাতার ম্যাচেই নতুন নম্বর নাইন বেছে নিতে হবে ইগর স্টিমাচকে। কোচের পাশে বসে সুনীল বললেন, ‘‘আমার স্যুট তৈরি। ভারত যেখানে খেলবে, সমর্থক হিসেবে সেখানে গিয়ে খেলা দেখব।’’