চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: এ যেন ডার্বির উৎসাহ, উদ্দীপনাকেও হার মানাবে। সাম্প্রতিক অতীতে ভারতের কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচের একটা টিকিটের জন্য এতটা আকুল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। যতটা সুনীল ছেত্রীর বিদায়ী ম্যাচ ঘিরে তৈরি হয়েছে। আইএফএ কোনও অফলাইন টিকিট না ছাড়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সুনীলভক্তদের মধ্যে।
ভারতীয় ফুটবলের জন্যও মাইলফলকের ম্যাচ হতে পারে বৃহস্পতিবারের যুবভারতীতে ভারত-কুয়েত (India vs kuwait) দ্বৈরথ। একেই সুনীলকে ঘিরে আবেগের বিস্ফোরণ, অন্যদিকে কুয়েতকে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে ইতিহাস গড়ার হাতছানি—ফুটবল-আবেগে ভাসছে ফুটবলের মক্কা। আইএফএ-র তরফে মাঠে প্রবেশের সময় দর্শকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে সুনীলের মুখোশ। ৬০ হাজার ‘সুনীল’ চিৎকার করে বিদায়ী ম্যাচে গোলের জন্য ভারত অধিনায়ককে উৎসাহ দেবেন।
আরও পড়ুন-বিশ্ব উষ্ণায়ন নয়া প্রোজেক্ট কলকাতা পুলিশের
রেষারেষি ভুলে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের দু’টি ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা ক্লাবের প্রাক্তনী সুনীলকে নিয়ে বিশেষ টিফো তৈরি করে যুবভারতীতে আসার পরিকল্পনা করেছেন। বেঙ্গালুরু এফসি-র সমর্থকরাও তাঁদের আইকনকে বিদায়ী অভ্যর্থনা জানাতে আসছেন। যুবভারতীতে সুনীলের বিদায়ী ম্যাচে হাজির থাকবেন রেনেডি সিং, আইএম বিজয়ন, জো পল আনচেরি, দীপেন্দু বিশ্বাস, মেহতাব সিং, রহিম নবির মতো প্রাক্তন সতীর্থরা। গ্যালারিতে থাকবে সুনীলের পরিবারও। ফেডারেশনের তরফে আর্মি ব্যান্ড এনে ভারত অধিনায়ককে বিদায়-সংবর্ধনা জানানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। আইএফএ-র তরফে ম্যাচ শেষে ড্রোনের মাধ্যমে পুষ্পবৃষ্টিতে সুনীলকে বিদায়-সম্ভাষণ জানানো হবে। তুলে দেওয়া হবে পোর্ট্রেট ও রুপোর স্মারক।
আবেগ, আয়োজন দেখেও নিরুত্তাপ ভারতীয় দলের হেড কোচ ইগর স্টিমাচ। তাঁর ও গোটা দলের কাছে কুয়েত-বধ করে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে ইতিহাস গড়া ছাড়া আর কোনও লক্ষ্য নেই। সুনীলকে পাশে নিয়ে প্রাক-ম্যাচ সাংবাদিক বৈঠকে স্টিমাচ বললেন, ‘‘কুয়েতকে আমরা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ওদের মাঠেই হারিয়েছি। সেদিন সেরা ম্যাচ খেলেছিলাম। রক্ষণে শৃঙ্খলা দেখিয়ে ওদের কোনও সুযোগ দিইনি। সেটাই আবার এই ম্যাচে করতে চাই। ঐতিহাসিক জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ভারত। ধৈর্য ধরে আমাদের পাশে থাকুন। আপনারাই টিমের (India vs kuwait) দ্বাদশ ব্যক্তি। আমার ফুটবল ও কোচিং কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। ১৫০ কোটি ভারতবাসীকে খুশি করতে চাই।’’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৩৯-এ থাকা রুই বেন্টোর কুয়েত তাদের সেরা স্ট্রাইকার শাবায়েব আল খালদিকে পাচ্ছে না সুনীলদের বিরুদ্ধে। স্টিমাচ বলছেন, ‘‘কুয়েতের ফুটবলাররা উচ্চতায় শুধু এগিয়ে নেই। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যেও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। আমাদের সন্দেশ ঝিঙ্গান নেই। ওদের সেরা স্ট্রাইকার নেই। কাতারের বিরুদ্ধে ওদের পারফরম্যান্স দেখেছি। আমরা সতর্ক।’’