এক জোড়া তরবারিতে হয় দেবীর ঐতিহ্যবাহী আরাধনা জঙ্গলমহলে

কোনও মূর্তি নয়, রাজাদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া একজোড়া তরবারিকে দুর্গামন্ত্রে আরাধনা করেন ভোল গ্রামের কানাই দিগারের পরিবার

Must read

মিতা নন্দী, ঝাড়গ্রাম: ৩০০ বছরের বৈচিত্রপূর্ণ প্রাচীন রীতির দেবী আরাধনা আজও হয়ে চলেছে জঙ্গলমহলে। গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকের ভোল গ্রামে একজোড়া তরবারিকে দেবী দুর্গাজ্ঞানে পুজো করা হয়। প্রাচীন এই পুজো ঘিরে গ্রামবাসীদের মধ্যে উন্মাদনা বহাল আগের মতোই। নিয়ম-নিষ্ঠাও বহাল প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন পুজোয়। কোনও মূর্তি নয়, রাজাদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া একজোড়া তরবারিকে দুর্গামন্ত্রে আরাধনা করেন ভোল গ্রামের কানাই দিগারের পরিবার।

আরও পড়ুন –কৃতী ছাত্রের হাতে মাতৃমণ্ডপ উদ্বোধন

ভোল গ্রামের প্রান্তিক চাষি দিগারদের ওই জোড়া তরবারি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। ৩৫০ বছর আগে রাজার আমলে দিগার পরিবারের সদস্যরা রাজকোষ ও সীমান্তরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন। প্রায় ৩০০ বছর আগে তাঁদের পাশের রাজ্য দখলের জন্য পাঠান রাজা। সফল হয়ে ফিরলে রাজা তাঁদের দুটি তরবারি উপহার দেন। সেই তরবারির পুজো শুরু করেন দিগাররা। এই উদ্যোগ দেখে রাজা তাঁদের মায়ের পুজোর আদেশ দেন। তারপর থেকেই ভোল গ্রামের দিগার পরিবারে দশভুজার পুজো শুরু হয়। রাজ আমলে রাজ পরিবার থেকে পুজোর সামগ্রী আসত।

আরও পড়ুন –শুক্তো-চচ্চড়িতে জমে ওঠে সিডনির দুর্গাপুজো

এখন নিজেরাই পূর্বপুরুষের রীতি অনুসরণ করে চলেছেন। ওড়িশা থেকে আগত রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দাস প্রহরাজের আমলে শুরু হয় এই অস্ত্রপুজো তথা দেবী দুর্গার আবাহন। প্রতি বছর ভোল গ্রামে শারদোৎসবের সময় আশপাশের দশ গ্রামের মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন। পুজোকে কেন্দ্র করে মেলা বসে। আগে যাত্রাপালা হত। এখন আর হয় না। তবে রীতি মেনে পুণ্যার্থীদের জন্য খিচুড়ি আর পায়েস ভোগের ব্যবস্থা আজও চালু আছে।

Latest article