প্রতিবেদন : কর্নাটকের হিজাব বিতর্ক ইতিমধ্যে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। দেশজুড়ে একটা সাম্প্রদায়িক অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। কিন্তু এরই মাঝে এক ব্যতিক্রমী ছবি উঠে এল ভূস্বর্গে। কাশ্মীরের শ্রীনগরে একটি শিবমন্দিরে বছরের পর বছর ধরে পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে চলেছে এক মুসলিম পরিবার। বাবা আহমেদ আলি ও ছেলে নিসার দু’জনে মিলে নিয়মিত মন্দিরটির যাবতীয় কাজ করেন। এভাবেই তাঁরা তৈরি করেছেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন।
আরও পড়ুন-অতিমারির অভিজ্ঞতা ভাগ করলেন সাংসদরা
শ্রীনগরের জবরওয়ান এলাকায় পরিচিত গোপী তীর্থ মন্দির। বহু বছর ধরে এই মন্দিরটির দেখভাল করছেন বৃদ্ধ আহমেদ আলি ও তাঁর ছেলে নিসার। বাবা ও ছেলে দু’জনেই সকাল-সন্ধ্যা এই মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় কাজ করেন। তাঁদের দেখে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। স্থানীয় মানুষের দাবি, এই শিবমন্দিরটি হল কাশ্মীরের সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। তাই তাঁরা হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলে হাতে হাত মিলিয়ে এই মন্দিরের যাবতীয় কাজ সারেন।
আরও পড়ুন-ভোট উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডেও
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন সকালে বৃদ্ধ আহমেদ আলি ছেলে নিসারকে নিয়ে মন্দিরে চলে আসেন। এরপর বাবা ও ছেলে মিলে মন্দির চত্বর পরিষ্কার করার পাশাপাশি পুজোর প্রস্তুতি শুরু করেন। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা মহম্মদ ইকবাল বলেছেন, আহমেদ আলি ও তাঁর ছেলে বেশ কয়েক বছর ধরে এই মন্দিরের যাবতীয় তদারকি করেন। কাশ্মীরের মানুষের সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধনের প্রতীক হল এই মন্দির। এই মন্দিরের দেখভাল করা আমাদের সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য। নুরুল হাসান নামে আর এক বাসিন্দা বলেছেন, কাশ্মীরে বহু হিন্দু মন্দির আছে যেগুলি মুসলিমরাই দেখভাল করে থাকে। এটাই হল আসল ছবি।
আরও পড়ুন-সেনার কৃতিত্বের ভাগ চায় নির্লজ্জ বিজেপি
কিন্তু এই ছবি সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরা হয় না। জানা গিয়েছে, আহমেদ ও তাঁর ছেলে নিসার যদি কোনও কারণে মন্দিরের কাজ করতে না পারেন সেক্ষেত্রে অন্য বাসিন্দারা গোপী তীর্থ মন্দিরের যাবতীয় কাজ করেন। এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে এলাকায় বিরাজ করছে এক অপার শান্তি। যেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের মেয়েদের পোশাক নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানে আহমেদ এবং তাঁর ছেলের এই কাজ নিশ্চিতভাবেই সম্প্রীতির প্রকৃত ছবি হয়ে উঠতে পারে দেশের সামনে।