থিকথিক করছে লোক। তার মাঝে আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনাহার (Shatrughna Sinha) সমর্থনে রোড শো-র ট্যাবলো থেকে প্রচার সভা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। আর সেখানে থেকেই ২০২২-এ আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলকে (TMC) জেতানোর ডাক দেন তিনি। বলেন, এবারের আসানসোলের উপনির্বাচন প্রতিবাদের নির্বাচন। আসানসোল থেকে আবর্জনা সাফ করার নির্বাচন। বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, বারবার আসানসোলের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বিজেপি (BJP)। প্রতিশ্রুতি দিয়ে, তা রাখেনি। এর আগে এই লোকসভা আসন থেকে কখনও জেতেনি তৃণমূল। এবার সুযোগ এসেছে বিজেপির সব মিথ্যাচারিতার প্রতিবাদ করে, উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলকে জয়ী করুন- বার্তা তৃণমূলের (Trinamool Congress) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের।
বিজেপি-র বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ কর বলেন, বিজেপি মানুষকে ন্যূনতম সম্মান করতে জানে না। বাবুল সুপ্রিয় নিজে বিজেপি-তে থেকে অসম্মানিত হয়েছেন। কাজ করতে চেয়েও পারেননি। তাই মাথা নীচু না করে, মেরুদণ্ড বিক্রি না করে তিনি সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলে (Trinamool Congress) যোগ দিয়েছেন।
কেন্দ্রে বিরোধীদলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের এজেন্সি দিয়ে হেনস্থা করার অভিযোগের তুলে অভিষেক বলেন, ইডি-সিবিআই দিয়ে তৃণমূলকে রোখা যায় না। তৃণমূল বিশুদ্ধ লোহার মতো, যত পুড়বে তত শক্ত হবে।
প্রতিদিন পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়াচ্ছে বিজেপি সরকার। জীবনদায়ী ওষুধের দাম বেড়েছে। লক্ষ-কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে কেন্দ্র এর সব উদাহরণ একের পর এক তুলে ধরেন তৃণমূল সাংসদ। এরপরেই শ্রীলঙ্কার উদাহরণ তুলে অভিষেক বলেন, শ্রীলঙ্কার থেকে ভারতের অবস্থা ২০গুণ খারাপ করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। “যে সব রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার, সেখানকার পরিস্থিতি সঙ্গীন। রবিশঙ্কর প্রসাদ আসানসোলে এসে অনেক কথা বলছেন, তাঁকে বলব আগে নিজেদের জায়গা সামলান।“ মধ্যপ্রদেশে সাংবাদিকদের উপর অত্যাচার করেছে। ত্রিপুরার উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে বেকারত্বের হার বাংলার দেখে অনেক বেশি। গণতন্ত্র ভূলণ্ঠিত।
১৬ এপ্রিল আসানসোলে জোড়াফুল ফুটবে বলে আশাবাদী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেন, খেলা এখনও শুরু হয়নি, আসানসোল জেতার পরে খেলা শুরু হবে। তৃণমূল দরজা খুলে দিলে, বিজেপি থেকে দলে দলে তৃণমূলে যোগ দেবেন নেতা-কর্মীরা।
বাংলায় বিজেপি-র কোনও স্থান নেই। “আমার ফোন ট্যাপ করেও হেরেছে, লজ্জা নেই।“ আর বিজেপি-কে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূলেই লড়াই দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন অভিষেক। বলেন, “কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপি সবার তলায় তলায় সেটিং, একমাত্র লড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস”। শত্রুঘ্ন সিনহার সঙ্গে আসানসোলের সম্পর্ক ৩০ বছরের বলে জানান তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, মাথা উঁচু করে আসানসোলে তৃণমূল প্রার্থীকে জেতালে, শাসকদল মাথা নত করে মানুষের সেবা করবে।
শনিবার, বিকেলে আসানসোল (Asansole) দ্য গ্র্যান্ড হোটেল থেকে গির্জা মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রোড শো হয়। মিছিলে অভিষেক, শত্রুঘ্ন সিনহা, তাঁর স্ত্রী ছিলেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী মলয় ঘটক-সহ বিধায়ক, কাউন্সিলররা। রোড শো-তে জনজোয়ার। তৃণমূলের ফ্ল্যাগ, পোস্টার নিয়ে বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থকদের যোগ দিয়েছেন। ছিল ছৌনাচ-সহ বাংলার সংস্কৃতির খণ্ড চিত্র। শুধু তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরাই নন, স্থানীয়রাও পা মিলান এই রোড শো-তে।