প্রতিবেদন : দূষণের জালায় জর্জরিত গোটা বিশ্ব। দূষণের কারণেই বাড়ছে বিশ্ব উষ্ণায়ন। তাই দূষণ কমিয়ে উষ্ণায়ন হ্রাস করতে বিশ্বব্যাপী সচেতনতার প্রচার চলছে৷ সতর্ক করছে রাষ্ট্রসংঘও৷ এই পরিস্থিতিতে লিখিত প্রশ্নের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত মন্ত্রকের কাছে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েকটি প্রশ্ন রাখেন। জানতে চান, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ১ বিলিয়ন টন কমানোর জন্য কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে? দেশে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০৩০ সালের মধ্যে বর্তমানের ৯৬ জিগা ওয়াট থেকে বাড়িয়ে ৫০০ জিগা ওয়াট করার জন্য কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে? এই পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে যে খরচ হবে তা কীভাবে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে বণ্টন করা হবে? গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ২০৭০ সালের মধ্যে দেশে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনা হবে, তা কীভাবে করা হবে? ২০৭০ সালের মধ্যে দেশে কার্বনের নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনতে কী পরিমাণ অর্থ খরচ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার? জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে সরকারের কি আলাদা করে কোনও পরিকল্পনা নিয়েছে?
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ দফতরের প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে বলেন, দূষণ ও বিশ্ব উষ্ণায়ন কমাতে ভারত প্রথম থেকেই সক্রিয় হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত বিভাগের সুপারিশ ও পরামর্শ মেনেই ভারত দূষণ কমাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। সে কারণেই ভারত অচিরাচরিত শক্তি থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ জিগা ওয়াট বিদ্যুৎ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের ৫০ শতাংশ অচিরাচরিত শক্তি থেকেই উৎপাদন করতে চায় সরকার। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত কার্বন নির্গমনের পরিমাণ এক বিলিয়ন টন কমানোর বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার কার্বন ভিত্তিক অর্থনীতি ৪৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে চায়। সরকার চায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্বন নির্গমন ২০০৫-এর স্তরে নিয়ে যেতে। ধাপে ধাপে ২০৭০ সালের মধ্যে দেশ কার্বন নির্গমন সম্পূর্ণ শূন্যে নেমে আসবে বলে আশা করা যায়।
আরও পড়ুন : লাগামছাড়া আলু, কড়া কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, সরকার দূষণ কমানোর জন্য একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সৌরশক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি। শক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যবহার যাতে পূর্ণমাত্রায় হতে পারে সে বিষয়ে উপযুক্ত নজরদারি দরকার। কৃষি, সেচের পাশাপাশি হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের পরিবেশ যাতে দূষণমুক্ত রাখা যায় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ আগামী দিনে ‘গ্রিন ইন্ডিয়া’ গঠনই সরকারের মূল লক্ষ্য।
মন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে রেল দফতর তাদের কার্বন নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনতে চায়। এজন্য এখন থেকেই তারা প্রতি বছর ৬০ মিলিয়ন টন কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। গৃহস্থালির ক্ষেত্রেও যাতে কার্বন নির্গমন কমে তার জন্য এলইডি বাল্ব ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ যদি দেশের প্রতিটি ঘরে এলইডি বাল্ব জ্বলে তাহলে বছরে কার্বন নির্গমন কমবে ৪০ মিলিয়ন টন। দূষণ কমানোর লক্ষ্যে মানুষ যাতে আরও বেশি করে সৌরশক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত হয় সেজন্য সুইডেন সরকারের পরামর্শ নিয়ে এদেশেও কিছু পরিকল্পনা রূপায়ণের চেষ্টা চলছে।