ধমকে-চমকে নয়, অবাধ নির্বাচনে বিজেপিকে শূন্য করুন, নেতা-কর্মীদের বার্তা দিলেন Abhishek Banerjee

Must read

বৃহস্পতিবার উত্তর কলকাতায় বড়বাজার থেকে বউবাজার পর্যন্ত ঐতিহাসিক রোড শো-এর পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলের নেতা-নেত্রী, কর্মী-সমর্থক ও প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বললেন, ধমকে-চমকে-গায়ের জোরে নয়, গণতান্ত্রিক উপায়ে মানুষের ভোটে জিতে আসতে হবে। বাংলা তথা কলকাতাকে ত্রিপুরা হতে দেওয়া যাবে না। তাই ভোটে জেতার জন্য সন্ত্রাস নয়, মানুষের ভালবাসাকে পাথেয় করে এগোতে হবে। মাথা নিচু করে মানুষের কাছে যেতে হবে। অন্যথায় দল কড়া ব্যবস্থা নেবে।

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) হুঁশিয়ারি, ”এই তৃণমূল কংগ্রেস নতুন তৃণমূল কংগ্রেস। যদি কেউ মানুষকে চমকায়, ধমকায়, তৃণমূল তাঁকে বাইরের রাস্তা দেখাবে। গোটা দেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে। তৃণমূল আত্মসমপর্ণ করবে না, শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়বে।”

গতকাল রাতেই গোয়া থেকে ফিরে আজ বিকেলে উত্তর কলকাতার জনজোয়ারে ভেসে বিশাল রোড-শো’তে যোগ দেন অভিষেক। রাস্তার দু’পাশে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখার পর এদিন অভিষেকের বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে ঝড়ে পড়ছিল আত্মবিশ্বাস। পুরভোটের প্রচারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেকের বার্তা, সবকটি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ী করতে হবে। এটা তাঁর আবদার। উত্তর কলকাতার উন্নয়নের দায়িত্ব এখন থেকে তিনি নিজের কাঁধে নেবেন।

অভিষেকের কথায়, “উত্তর কলকাতায় সবকটি ওয়ার্ডে তৃণমূলকে জেতাতে হবে। এখানে বিরোধীদের কোনও জায়গা নেই। অনেক রোড-শো করেছি। মানুষের এই আবেগ আগে কখনও দেখিনি। আজকের এই মিছিলে জনসমাগম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। তাই আপনি যখন জোড়াফুল চিহ্নে বোতাম টিপবেন, তখন কোনও নির্দিষ্ট প্রার্থীকে নয়, সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ভোট দেবেন, এটা মাথায় রাখতে হবে। আপনাদের এক একটি ভোট তৃণমূলের জন্য অতি মূল্যবান।”

আরও পড়ুন-রাজ্যে ১০০ শয্যার কোভিড হাসপাতাল

এরপরই গেরুয়া শিবিরকে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, ”বিজেপির কোনও কর্মসূচি নেই। ওদের ধর্মসূচি আছে। ওদের একটাই এজেন্ডা, মানুষে মানুষে বিভাজন। ওরা শুধু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে। তাই আমাদের সম্মিলিতভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে হবে। এখন তৃণমূল আর শুধু বাংলার দল নয়। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারীকা, গোটা দেশের মানুষ তৃণমূলের দিকে তাকিয়ে। তাই আমরা যে রাজ্যে যাবো, সেখান থেকে বিজেপিকে উৎখাত করবো। আর কয়েক মাস পর ফেব্রুয়ারিতে গোয়ায় বিধানসভা ভোট। সেখানে তৃণমূল ক্ষমতা আসবে, নয়তো প্রধান বিরোধী শক্তি হবে। এর মাঝামাঝি কিছু হবে না। আপনারা দেখেছেন, ত্রিপুরায় মাত্র তিন মাসে ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল। এমন নজির গোটা দেশে এর আগে কোথাও কেউ দেখাতে পারেনি।”

এদিন অভিষেক বাংলার দুর্গাপুজো প্রসঙ্গ টেনে খোঁচা দেন বিজেপি ও অমিত শাহকে। দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো (UNESCO)। বিশ্বের ঐতিহ্যশালী উৎসবের (Heritage) তালিকায় স্থান পেয়েছে বাঙালির শারদোৎসবও। এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন, ”দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর
স্বীকৃতি প্রমাণ করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেন, তা করে দেখান। অনেকই ভোটের আগে আসে, ভোটের পর তাদের আর দেখা যায় না। তারা শ্যমাপোকা। বসন্তের কোকিল। দুর্গাপুজো বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পাওয়ার পর এখন তাদের মুখ পুড়েছে।”

উল্লেখ্য, এদিন উত্তর কলকাতায় হুডখোলা গাড়িতে অভিষেকের সঙ্গে মিছিলে সামিল হয়েছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি তাপস রায়, চৌরঙ্গীর বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রার্থীরাও ছিলেন। ছিলেন বিধায়ক বিবেক গুপ্তা, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ , বিধায়ক অতীন ঘোষ সহ নেতৃত্ব।

 

Latest article