মণীশ কীর্তনিয়া, ময়নাগুড়ি: তৃণমূল নেতা-কর্মীর বাড়ি নয়, দোমহনির একজন সাধারণ গৃহশিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে মাটিতে আসন পেতে বসে মাছ-ভাত খেলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Domohani- Abhishek Banerjee)।
তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচিতে জনসংযোগ যাত্রায় অভিষেক। দুমাস ধরে ঘুরবেন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। সফর শুরু হয়েছে উত্তর দিয়ে। শনিবার, ময়নাগুড়ির দোমহনিতে (Domohani- Abhishek Banerjee) যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এক বছর আগে এখানেই ১২ জুলাই সাংগঠনিক সভা করতে গিয়ে ওই বাজার এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক। স্থানীয়রা বাজার সংস্কারের আবেদন জানান। অভিষেকের উদ্যোগে জেলা পরিষদ এই বাজার সংস্কার করে দেয়। তখনই স্থানীয় বাসিন্দা জীবন রাউত তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন অভিষেককে। শনিবার, সেই এলাকা ঘুরে দেখতে গিয়ে কথা রাখলেন অভিষেক।
জীবন রাউতের কোনও দলীয় পরিচয় নেই। তিনি গৃহশিক্ষকতা করেন। দোমহনির পুরাতন বাজারে রাজবংশী প্রধান এলাকায় তাঁর বাড়ি। সেখানেই মধ্যাহ্নভোজ সারেন অভিষেক। জীবনের পুত্র সৌরদীপ, নাতি ও ভাই সঞ্জীবকে পাশে নিয়ে খেতে বসে তৃণমূল সাংসদ।
মেনুতে ছিল- ভাত, ডাল, পোস্ত, বোরলি মাছের ঝোল, আড় মাছ, টক দই, মিষ্টি। ছিল রাজবংশীদের বিশেষ পদ সজনে পাতা বাটা।
আরও পড়ুন: নিম্নবর্গের ইতিহাস সাধনার অন্যতম পথিকৃৎ রণজিৎ গুহর জীবনাবসান
বাড়িতে রান্না সেই সব খাবার খান অভিষেক। শুধু তাই নয়, তাঁর পাশে বসা কিশোর যে নিজে হাতে খেতে পারছে না, তার দিকেও নজর দেন তিনি। বলেন, “ডাল দিয়ে মেখে খাও।“ তাঁকে একে বারে বাড়ির সদস্যের মতোই আপন করে নেন মহিলারা। জোর করে পাতে ভাত দিয়ে বলেন, “এটুকু খেতেই হবে।“ যৌথ পরিবারে পাতে পেড়ে খেয়ে তৃপ্ত অভিষেক। পরিবারের লোকও আপ্লুত তিনি আতিথেয়তা গ্রহণ করায়।
আর এখানেই বিজেপি নেতাদের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। বিজেপি নেতা নাড্ডা-শাহরা কারও বাড়ির দাওয়ায় বসে বাইরের হোটেল থেকে আনা দাবি খাবার বাহারি প্লেটে খান। ঘিরে থাকেন দলের নেতানেত্রীরা। সেই পরিবারের লোকেদের সঙ্গে বিন্দু মাত্র সৌজন্য বিনিময়ও করেন না। আর অভিষেক ঘরের ভিতরে বসে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে একেবারে আত্মীয়ের মতো খেলেন। এমনকী, জোর করে তাঁর পাতে ভাত বেড়ে দিতেও দ্বিধা করলেন না বাড়ির মহিলারা। আর এখানেই নীবিড় জনসংযোগে কয়েক কদম এগিয়ে গেলেন অভিষেক।