প্রতিবেদন : সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ঘটনা নিয়ে অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিজেপি ও সিপিএমকে একেবারে ধুয়ে দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা যোগেশ ভার্সনেই যখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথার দাম ১১ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছিল, সেসময় এ-রাজ্য থেকে সিআইডির টিম তাকে ধরতে গেলে তাদের বন্দি করে মারধর করা হয়। তখন বিজেপি এতে দোষ দেখতে পায়নি। কোনও পদক্ষেপও নেয়নি। এ-রাজ্যে বাম জমানায় ডিসি পোর্ট বিনোদ মেহতাকে তাড়া করে নৃশংসভাবে কুপিয়ে-পুড়িয়ে মারা হয়। ডিসি পোর্ট ওই অঞ্চলে দুষ্কৃতী ধরতে গিয়েছিলেন। এই যাদের অতীত ইতিহাস তাদের কাছ থেকে এখন আইনশৃঙ্খলার জ্ঞান শুনতে হবে! এত তাড়াতাড়ি এগুলো ভুলে গেলেন! তোপ কুণালের। এদিন দিনভর দফায় দফায় বিজেপি-সিপিএমের কুৎসা ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে হারার পর যেভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নামিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে অপদস্থ করছে তাতে বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছে বিজেপির আসল উদ্দেশ্য। ফলে মানুষ রুখে দাঁড়াতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচারকের আসনকে ঢাল করে যেভাবে নিজের রাজনৈতিক উইশলিস্ট পূরণ করছেন তার বিরুদ্ধেও কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- বিচারপতি নাকি রাজনৈতিক নেতা! মেলামঞ্চে বেলাগাম আক্রমণ
এই ঘটনার (Sandeshkhali) পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা বলেন, প্ররোচনা দিয়ে রাজ্য সরকারকে বদনাম করার জন্যই এ-কাজ করা হয়। তাঁর কথায়, বাংলাকে সস্তা মনে করেছে ওরা। সেই কারণে বাংলার ক্ষেত্রে নাটক করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক উচ্ছৃঙ্খল একপ্রকার মানুষ থাকেন। তাঁদের উসকে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারকে জানিয়ে যদি এই অভিযান চালানো হত, তাহলে এই বাধার সৃষ্টি হত না। নিদেনপক্ষে মুখ্যসচিবকে জানাতে পারত। কিন্তু ওদের উদ্দেশ্যই হল কাউকে জানাব না। তিনি বলেন, ভোট আসছে, তাই বিজেপির মদতে এই হেনস্থা। ভোটের আগে তা ফলাও করে প্রচার করাই উদ্দেশ্য। সেইসঙ্গে দেখানোর চেষ্টা যে, বাংলার আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। প্রতিবার নির্বাচনের আগে পরিকল্পিত চেষ্টা করা হয়। একুশেও হয়েছে, ২৪-শেও হবে। কিন্তু বাংলার মানুষ সব জানে। আবার ওরা যোগ্য জবাব পাবে। শশীর সাফ কথা, হিংসাকে আমরা সমর্থন করি না। কখনও দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেনি তৃণমূল। আসলে কেন্দ্র তদন্ত প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে। এটাকে একটা অ্যাজেন্ডায় রূপান্তরিত করেছে বিজেপি। কুণাল ঘোষ বলেন, এই ঘটনা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। তবে এর পেছনে রয়েছে প্ররোচনা। যেভাবে যেখানে-সেখানে কেন্দ্রীয় এজেন্সিদের লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষ ক্ষেপে যাচ্ছেন। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। শান্তিপূর্ণ রাজ্যে অশান্তি ছড়াতে বিজেপি প্ররোচনা দিচ্ছে। তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া ও আইটি সেলের রাজ্য সভাপতি দেবাংশু ভট্টচার্য বলেন, আজকের ঘটনাটি ছিল বাংলার মানুষের প্রতি নির্লজ্জ অবজ্ঞা আর অতিরিক্ত উসকানির স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া! মনে হচ্ছে, সমস্ত ইডি-সিবিআই অভিযান বিরোধী দলের জন্য সংরক্ষিত। কারণ ‘পুতুল’গুলি নিরাপদে বিজেপির ক্ষমতার আড়ালে লুকিয়ে চলছে।