প্রতিবেদন : মুখে এত বড় বড় কথা বলছে, ক্ষমতা থাকলে বীরবাহা হাঁসদার (Birbaha Hansda- Kunal Ghosh) চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করুক। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে গিয়ে বিরোধী দলনেতাকে এই ভাষাতেই আক্রমণ শানিয়ে তাঁকে আরও কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Birbaha Hansda- Kunal Ghosh)। লক্ষণীয়, মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে উদ্দেশ্য করে কিছুদিন আগে অত্যন্ত আপত্তিকর এবং কুরুচিকর মন্তব্য করেছিলেন বিরোধী দলনেতা। এরজন্য ক্ষমাও চাননি, দুঃখপ্রকাশও করেননি শুভেন্দু। শুধুই হাজরা কিংবা কাঁথিতে সভা করার বড় বড় বুলি আউড়ে চলেছেন। এরই জবাবে বীরবাহা কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতার দিকে। তাঁর শর্ত, আমি মন্ত্রী, কিন্তু আমার সঙ্গে কোনও নিরাপত্তারক্ষী থাকবে না, বিরোধী দলনেতার সঙ্গেও কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না। হিম্মত থাকলে তিনি ক্ষমা না চেয়ে ঝাড়গ্রামে ঢুকে দেখান। শনিবার রামনগরে তৃণমূল কংগ্রেসের এক চাটাই বৈঠকে এই কথা মনে করিয়ে দিয়ে কুণাল ঘোষ আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিলেন শুভেন্দুকে। চাটাই বৈঠকে আন্তরিকতার সুরে কুণাল গ্রামের মহিলাদের কাছে জানতে চান, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধে সকলে পাচ্ছেন তো? মহিলারা হাত তুলে সমস্বরে জানালেন, ‘‘হ্যাঁ, পাচ্ছি।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন সমাজকল্যাণ প্রকল্প গ্রাম বাংলার মহিলা সমাজকে কেমন করে সমৃদ্ধি এবং প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তা চাটাই বৈঠকে বসে ব্যাখ্যা করলেন পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলারাই। সমস্বরে হাত তুলে জানালেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প বদলে দিয়েছে তাঁদের জীবনধারাকেই। শনিবার কাঁথির অদূরে দেপাল-দয়ানিধিবারে এই গ্রাম্য চাটাই বৈঠকের আয়োজন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বক্তা স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী অখিল গিরি এবং দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এই চাটাই বৈঠককে কেন্দ্র করে গ্রামের মহিলাদের উদ্দীপনা ছিল লক্ষ্য করার মতো। গৃহস্থলির কাজকর্ম তাড়াতাড়ি সেরে নিয়ে রীতিমতো উৎসবের মেজাজে, কিছুটা আড্ডার মুডে বৈঠকে হাজির হন অজস্র মহিলা। হাসি-গল্প-কুশল বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে এক বিশেষ মাত্রা পায় চাটাই বৈঠক। তাঁদের মুখোমুখি বসে কুণাল ঘোষ জানতে চান, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, সবুজসাথী, সমব্যথীর মতো জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধে তাঁরা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না। হাসিমুখে সমস্বরে একটাই উত্তর, ‘‘হ্যাঁ, খুবই উপকার হচ্ছে।” আপ্লুত মহিলাদের কুণাল বললেন, কোনও অসুবিধে হলে অবশ্যই জানাবেন। তিনি সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী কেমন করে কমিয়ে দিচ্ছেন সংসারের খরচ। বললেন, দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়ে সমস্যার কথা জানাবেন। সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন মন্ত্রী অখিল গিরিও। কুণাল তাঁর কথায়, ভাষণে স্বাভাবিকভাবেই ছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণাত্মক। রেয়াত করেননি সিপিএমকেও। বিরোধী দলনেতাকে গদ্দার, বিশ্বাসঘাতক, জোচ্চোর বলে চিহ্নিত করার পাশাপাশি তুলোধোনা করেছেন গোটা অধিকারী পরিবারকে। চাঁচাছোলা ভাষায় আবারও জানিয়ে দিয়েছেন, জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা ভোগ করে সিবিআই-ইডির হাত থেকে বাঁচতে গেরুয়া শিবিরে গিয়ে ভিড়েছেন শুভেন্দু এবং পরিবার। মোবাইল থেকে অডিও ক্লিপিংস শুনিয়ে প্রমাণ করে দেন এই শুভেন্দুই একদিন বিজেপির বিরুদ্ধে কতটা বিষোদ্গার করেছিলেন। কয়েকদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঁথির জনসভায় রেকর্ড জনসমাগমের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কুণালের শ্লেষাত্মক মন্তব্য, কাঁথিতে জনসভা করার খোয়াব দেখছে। কিন্তু গোটা রাজ্যের বিজেপি মিলেও এখানে অভিষেকের সঙ্গে পেরে উঠবে না। ক্ষমতা নেই অভিষেককে টক্কর দেবার। ওদের সভায় মাঠ ফাঁকাই রয়ে যাবে।