দুর্গাপুরে খোলামুখ খনিতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কয়লা চাপা পড়ে হত চার

Must read

অসীম চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর : ইসিএল-এর খোলামুখ খনি থেকে বেআইনি ভাবে কয়লা কাটতে গিয়ে কয়লার চাল চাপা পড়ে মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হল চারজনের। কয়লার স্তূপের নিচে এখনও অনেকে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুর (Durgapur) -ফরিদপুর ব্লকের মাধাইপুর খোলামুখ খনিতে। মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি আহতদের দুর্ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করার কাজ চলছে। ফরিদপুর থানার পুলিশ, দমকলের কর্মীরা ছাড়াও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন ইসিএল কর্মীরাও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসিএল-এর এই খোলামুখ খনি থেকে প্রায়ই বেআইনিভাবে কয়লা কেটে নিয়ে যায় এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। এদিন ভোরেও একইভাবে কয়লা চুরি করার উদ্দেশ্যে খনিতে উপস্থিত হয় আন্নাহরি বাউরি (৫০), শ্যামল বাউরি (৩০), নটবর বাউরি (২৫), পিঙ্কি বাউরি (২৪) সহ একই পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য, আহতদের মধ্যে কিশোর বাউরি নামে এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন – ৬৪ চা-বাগানের ক্রেশ উন্নয়নে জেলা প্রশাসন 

অবৈজ্ঞানিকভাবে কয়লা কাটার ফলে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে কয়লার চাল। ফলে খনির ভিতরেই কয়লার চাঙড় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই চারজনের। কয়লার স্তূপের নিচে এখনও অনেকে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ইসিএল-এর আধিকারিকরা। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ইসিএল কর্তৃপক্ষ খোলামুখ খনিগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করার ফলেই বারে বারে ঘটে যাচ্ছে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ইসিএল-এর খনিগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে সিআইএসএফ-এর উপর। খনির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট থাকলে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলে এলাকার বাসিন্দারা জানান।

এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি মাধাইপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইসিএল-এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ইসিএল কর্তৃপক্ষ যদি এই খোলামুখ খনিগুলিতে কাঁটাতারের বেড়াও লাগিয়ে দিত, তাহলেও সহজে সেখানে যেতে পারতেন না গ্রামের দরিদ্র মানুষরা।

তিনি নিহত ও আহতদের পরিবারের হাতে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসিএল-এর উদাসীনতার জন্যই বারে বারে ঘটে যাচ্ছে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তোলেন বিধায়ক। এই দুর্ঘটনার জেরে এলাকায় নেমেছে গভীর শোকের ছায়া ।ঘটনাস্থলে রয়েছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত সহ কমিশনারেটের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক বৃন্দ।

Latest article