কাবুল : প্রায় দু’সপ্তাহ হল পঞ্জশির বাদ দিয়ে প্রায় গোটা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে তালিবান জঙ্গিরা। জঙ্গিদের শাসনে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা দেশে। আতঙ্ক কতটা চেপে বসেছে তার প্রমাণ মিলেছে রাষ্ট্রসংঘের সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে।
রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে আফগানিস্তানের ৫০ শতাংশ প্রাণহানি বেড়েছে। তিন লাখেরও বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই ঘরছাড়া। সংখ্যাটা প্রতিদিনই বাড়ছে।
আরও পড়ুন : সতর্কতা সত্ত্বেও কাবুলে হামলা, দায় কার?
ওই রিপোর্ট থেকে আরও জানা গিয়েছে, গত দু’দিনে আফগানিস্তান থেকে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অন্যত্র পাড়ি দিয়েছেন। কোথায় ঠাঁই মিলবে তা না ভেবেই আফগানরা অসহায়ভাবে দেশ ছাড়ছেন। তালিবানরা সাধারণ নাগরিককে নিরাপদে থাকার আশ্বাস দিলেও কেউই জঙ্গিদের সেই কথা বিশ্বাস করছে না। তালিবানরা সবচেয়ে অত্যাচার চালাচ্ছে মেয়েদের ওপর।
ইতিমধ্যেই কর্মরত মহিলাদের চাকরি করতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকী, মেয়েদের লেখাপড়াও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ব্রিটেনের এক সংবাদপত্রের কাছে সেদেশের কান্দাহার প্রদেশের এক শিক্ষক বলেছেন, তিনি মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন। তালিবানদের কাছ থেকে তিনি ছিনিয়ে আনবেন মেয়েদের শিক্ষার অধিকার। এর জন্য যদি তাঁর প্রাণ যায় তাতেও কোনও দুঃখ নেই। ওই শিক্ষক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে শিক্ষকতা করতেন। ওই সংগঠনটি আফগানিস্তানে বিভিন্ন পিছিয়ে পড়া এলাকায় ১০০-রও বেশি স্কুল চালু করেছিল।
আরও পড়ুন চলার ক্ষমতা হারালেন কেয়ার্নস
আফগানিস্তানে চলতি পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। সে দেশে নারী নির্যাতন নিয়েও বিশ্ব ব্যাঙ্ক নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে বুধবার স্পষ্ট জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানকে কোনওরকম অর্থ সাহায্য করা হবে না। বিশ্ব ব্যাঙ্ক আফগানিস্তানে যে-সমস্ত কাজ করত তা-ও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আফগানিস্তান পরিস্থিতির ওপর তাঁরা নজর রাখছেন। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তবেই তাঁরা আফগানিস্তানকে সাহায্য করবেন। আতঙ্কিত আফগানবাসী দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলেও তাঁদের সেই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে তালিবান। তালিবানের মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, বিদেশি নাগরিকরা চাইলে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারেন। আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না।