কেন্দ্রের বিজেপি সরকার প্রতিহিংসামূল আচরণ করছে। এই অভিযোগ আগেও বহুবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সোমবার, সাগরদিঘিতে প্রশাসনিক সভা থেকে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসনকে (Jakir Hossein) আয়কর হেনস্থা এবং তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলের (Saket Ghokhle) গ্রেফতারি নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জাকির হোসেন শুধুমাত্র তৃণমূল করেন বলে বাড়িতে আয়কর হানা! সাকেত গোখেলের গ্রেফতারি নিয়েও এদিন সুর চড়ান তৃণমূল সুপ্রিমো। গণতন্ত্রের উপর বুলডোজার চালালে, কেন্দ্রের শাসকদলকে ক্লোজার করা হবে বলেও তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: অরিজিৎ সিংয়ের পাশে মুখ্যমন্ত্রী, হাসপাতাল তৈরি হবে মুর্শিদাবাদে
১২ জানুয়ারি জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁর বাড়ি, অফিস, বিড়ি কারখানায় তল্লাশি চালানো হয়। তাঁর বাড়ি থেকে পাওয়া টাকা আয় বহির্ভূত নয় বলেই দাবি তৃণমূল বিধায়কের। এদিন কেন্দ্রের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বলেন, “জাকির একটা বিড়ি শিল্পপতি। তার যে ২০ হাজার বিড়ি শ্রমিক আছে জানোনা? কটা বিড়ি শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে? কটা গ্রামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে? জাকির তৃণমূল করে বলে এই অবস্থা। বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে এজেন্সি পাঠাচ্ছে। জাকিরকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছিল। জাকিরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। দোষ করলে জাকিরকে শাস্তি দাও।” নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও সুর চড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “আমার দুর্ভাগ্য কোনও একজনকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে এজেন্সি পাঠাচ্ছে।”
সাকেত গোখেলের গ্রেফতারি নিয়েও এদিন তীব্র প্রতিবাদ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “বঙ্গভবন থেকে গ্রেফতার করেছে। তার আগে রাজস্থানের এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার করেছে। বঙ্গভবন রাজ্যের সম্পত্তি। বিনা অনুমতিতে গেলে আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে। আইন আইনের পথে চলবে। না জিজ্ঞেস করে অনুমতি নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে চাইতে পারো। কিন্তু অনুমতি না দেওয়ার পর বেআইনিভাবে গুজরাট পুলিশ বঙ্গভবনে ঢুকেছে। সব সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে গিয়েছে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বঙ্গভবনে রাজ্যপাল, বিচারপতিরা গিয়ে থাকেন। সেখানে তাঁরা কার সঙ্গে কথা বলেন, সেসব সিসিটিভি-র ফুটেজ নিয়ে গিয়েছে। এটা গণতন্ত্রের উপর আঘাত। এইভাবে বিনা অনুমতিতে ঢুকলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশ মুখ্যসচিবকে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ”গণতন্ত্রে যারা বুলডোজার চালায় তাদের বলি বুলডোজারের পরিবর্তে বুলডোজার নয়। তাদের ক্লোজার হবে।” এরপরেই তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “দিল্লির লাড্ডুরা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারদের কি আটকানো যায়? মাঝে মধ্যে খাঁচায় ধরে রেখে ট্রিটমেন্ট করা যায়। কিন্তু রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার যদি বিপ্লব করে সেসব কুৎসা, অপপ্রচার, দাঙ্গার চক্রান্তকে নস্যাৎ করে দেবে।”