ফের ডিভিসি জল ছাড়ল, প্লাবনের আশঙ্কা

Must read

লাগাতার বৃষ্টি হয়ে চলেছে। গোদের ওপর বিষফোড়া ডিভিসির অবিবেচকের মতো ছাড়া জল। রাজ্যবাসীর উদ্বেগ বাড়িয়ে ফের বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ল তারা। রবিবার সকালে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় ৫৯ হাজার ৩৭৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়। ডিভিসি জানিয়েছে, শনিবার সকাল থেকে পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া ও বীরভূম-সহ পার্শ্ববর্তী জেলায় প্রবল বর্ষণ হওয়ায় নতুন করে এদিন জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে এখনই বন্যা-পরিস্থিতি সৃষ্টির শঙ্কা নেই।

আরও পড়ুন-ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, উত্তাল বাংলা

এদিকে ডিভিসি নতুন করে জল ছাড়ায় সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফে। পূর্ব বর্ধমানে দক্ষিণ দামোদর এলাকার মানুষকেও সতর্ক করা হয়েছে। মহকুমাশাসক শেখরকুমার চৌধুরি বলেন, ‘গত সপ্তাহে ডিভিসির পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই বিপুল পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছিল। তাতে প্লাবিত হয়েছিল নিম্ন দামোদরের বেশ কিছু অঞ্চল। প্রশাসন সতর্ক থাকায় বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।’

রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসির হঠাৎ বিপুল পরিমাণ জল ছাড়াকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করলেন শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না। পশ্চিম বর্ধমান জেলার বেশ কিছু কারখানা পরিদর্শনে এসে মন্ত্রী কেন্দ্রীয় এই সংস্থাটির আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দুর্গাপুরের দামোদরের পলি তোলা নিয়ে কেন্দ্রের দীর্ঘদিনের গড়িমসি করার তীব্র সমালোচনা করেন। উদয়নারায়ণপুর ও আমতার অনেক এলাকা এখনও জলমগ্ন রয়েছে। ত্রাণ শিবিরে এখনও বহু মানুষ। এদিকে আমতার রামপুর খালের বাঁধ মেরামতির কাজ প্রায় শেষ। জল কমতেই আন্ত্রিক-সহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব এবং সাপের প্রকোপ রুখতে প্রশাসন কাজে নেমে পড়েছে। রবিবারও উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা ও আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় গিয়ে ত্রাণসামগ্রী বিলি করেন।

জল বাড়তেই পূর্বস্থলীতে ভাগীরথীর ভাঙন সরেজমিনে দেখলেন বিধায়ক। বৃষ্টি ও ডিভিসির জোড়া ফলায় ফুঁসছে ভাগীরথী। ভাঙন শুরু হয়েছে পূর্বস্থলী ২নং ব্লকের তামাঘাটা ও চরকমলনগরে। নদীগর্ভে কৃষিজমি, আস্ত বাঁশবাগান। গ্রামের রেশন দোকান, মন্দির, সমিতির অফিস, ক্লাবঘর থেকে সামান্য দূরত্বে বইছে ভাগীরথী। ভাঙন পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখলেন পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় ও ২নং ব্লকের বিডিও সৌমিক বাগচী। তপন জানান, ‘আশা করছি, দ্রুত ভাঙন মোকাবিলায় কাজ হবে।’ চরকমল নগরেও ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ। অজয়ের জলস্তর নামতে থাকায় কেতুগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বাঁধের মাটিতে ধস নামছে। তৎপরতার সঙ্গে তা রুখতে নেমে পড়েছে ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানেল ডিভিশন।

আরও পড়ুন-ত্রিপুরায় প্রাণ সংশয় অভিষেকের, পাশে বসিয়ে দেওয়া হয় গুন্ডাদের: বিস্ফোরক অভিযোগ তৃণমূল সুপ্রিমোর

বৃষ্টির মধ্যেই চলেছে বিল্বেশ্বর পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের খাঁচা ও বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ মেরামতির কাজ। এই কাজে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এদিকে ভাগীরথীর জল উপচে কাটোয়া পুরসভার ৪টি ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা জলবন্দি। ৫২টি পরিবারকে সরিয়ে ভারতী ভবন স্কুলে রাখা হয়েছে জানিয়েছেন কাটোয়ার পুরপ্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। বললেন, ‘ওই পরিবারগুলির জন্য রান্না করা খাবার, শুকনো খাবার-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ শহরে তিনটি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে।

Latest article