প্রতিবেদন : তিন কৃষি আইন নিয়ে যা হয়েছিল প্রায় তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে মোদি সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্পে। সেনায় অস্থায়ী নিয়োগ নিয়ে দেশজোড়া প্রবল বিক্ষোভের মুখে কৃষি আইনের মতোই পিছু হঠতে বাধ্য হল কেন্দ্রীয় সরকার। অগ্নিপথ প্রকল্প ঘোষণার পরদিন থেকেই প্রবল বিক্ষোভে পুড়ছে একাধিক রাজ্য। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এই বিক্ষোভের প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি ও প্রবল বিক্ষোভের জেরে প্রকল্প ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রথমবার মোদি সরকার প্রকল্পে নিয়োগের শর্ত বদল করতে বাধ্য হয়।
আরও পড়ুন-কলকাতা সাজাতে বিদেশি সহায়তা
প্রথম দফায় পিছু হঠে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানায়, প্রথম ব্যাচের অগ্নিবীর নিয়োগে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ২১ থেকে বাড়িয়ে ২৪ বছর করা হচ্ছে। কিন্তু শুধু বয়সসীমা বাড়িয়ে বিক্ষোভ সামাল দেওয়া যায়নি। তাই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ফের আরও চারটি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী ও অসম রাইফেলসে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ শূন্য পদ সংরক্ষিত থাকবে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম ব্যাচের অগ্নিবীররা ৫ বছর এবং পরবর্তী ব্যাচগুলির জন্য তিন বছর বয়সের ছাড় পাবেন। বর্তমানে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনীতে যোগদানের বয়সসীমা ২০ থেকে ২৫ বছর। অর্থাৎ চার বছর চাকরি করার পর অবসর নেওয়া অগ্নিবীররা কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন-পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে হাতিয়ে নেওয়া সাইকেল, বাইক, নিলাম করে কয়েক কোটি ঘরে তুলল যোগী সরকার
এর পাশাপাশি শনিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ঘোষণা করেছেন, তাঁর মন্ত্রকের বিভিন্ন শাখাতেও অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হবে। একইসঙ্গে মন্ত্রীর ঘোষণা, অগ্নিবীররা আজীবন সেনা কর্মীদের মতোই তাঁদের ‘অগ্নিবীর’ পরিচয় নামের সঙ্গে বহন করতে পারবেন। এছাড়া জাহাজ ও ক্রীড়া মন্ত্রকেও অগ্নিবীরদের জন্য আসন সংরক্ষণের কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রক। তিনদিনের মধ্যে চাপে পড়ে কয়েক ধাপ পিছিয়ে আসার পরেও মোদি সরকার প্রতিবাদকারীদের ক্ষোভ সামাল দিতে পারবে কিনা তা ভবিষ্যতই বলবে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দল ও বিশেষজ্ঞরা অনেকেই দাবি তুলেছেন, প্রকল্প আপাতত স্থগিত রেখে আলোচনার ভিত্তিতে বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য শুনে সমস্যা মেটাতে হবে। নাহলে তিন কৃষি আইনের মতোই অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়েও শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি পিছু হঠতে হবে কেন্দ্রকে।