প্রতিবেদন : আজ মঙ্গলবার, চার উপনির্বাচনের ঘোষণা। সমস্ত কেন্দ্রের প্রার্থীরাই জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত। তাঁদের কথাতেই তা স্পষ্ট।
খরদহে তৃণমূল কংগ্রেসের জয় নিয়ে কারও সংশয় নেই। তবে দু’দলের ভাবনা দু’রকম। তৃণমূল কংগ্রেসের চিন্তা কত ভোটের ব্যবধানে তাদের প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জয় পাবেন। বিরোধীদের চিন্তা, হারের ব্যবধান কত হবে। এমনকী জমানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার ভয়ও রয়েছে কোনও কোনও প্রার্থীর। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু হবে নিউ ব্যারাকপুরের আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র কলেজে। ২২টি টেবিলে গণনা হবে। মোট ১৬ রাউন্ড। বিকেলের মধ্যেই ফলাফল স্পষ্ট হবে। ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পার্থ ভৌমিক জানান, আমাদের প্রার্থী তথা কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। মার্জিন কত হয়, সেটাই দেখার। কয়েক রাউন্ড শেষেই বুঝতে পারব জয়ের গতিপ্রকৃতি। ভোটগ্রহণের পর থেকেই ইভিএম বক্স এপিসি কলেজে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে। সেখানে রয়েছে দলীয় কর্মীদের কড়া নজরদারি। কারণ ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পাশে নিয়ে বিজেপি প্রার্থী দফায় দফায় তাণ্ডব চালিয়েছেন।
ফলের আগেই তাঁর জয় হয়েছে। মানুষ তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন। আশীর্বাদ করেছেন। তাই এখন জয়ের মার্জিন নিয়ে ভাবছেন শান্তিপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী। বরবারই আত্মবিশ্বাসী শান্তিপুরের ভূমিপুত্র। প্রচারের শেষ দিনেই তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিজেপিকে কত ভোটে হারাব ভাবছি।’’ জয় ঘোষণার আগেই একপ্রস্থ কাজও এগিয়ে রেখেছেন তিনি। ভোট মিটতেই কর্মীদের কাজের দায়িত্বও ভাগ করে দিয়েছেন।
শান্তিপুরের ভোটগণনা হবে রানাঘাট কলেজে। সোমবার সকালে গণনাকেন্দ্রে যান ব্রজকিশোর। ইভিএম মেশিন দেখে আসেন। এখানে ২৩ থেকে ২৪ রাউন্ড গণনা হবে। পুরসভা ও গ্রামীণ এলাকায় বুথের সংখ্যা ২৬৪টি। শহরে বুথ সংখ্যা ১৩৪টি। রানাঘাট থেকে দুপুরে ফিরে আসেন বাড়িতে। বাড়ির রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহের সামনে মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে প্রার্থনা করেন। হালকা মেজাজে মা-বাবার সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। আলোচনা করেছেন কর্মীদের সঙ্গে। তাঁর অন্যতম সঙ্গী দিব্যেন্দু পোদ্দার জানিয়েছেন, ‘‘ব্রজকিশোর ছোট থেকেই সামাজিক কাজ করেন। শান্তিপুরের মানুষ ওঁকে ভালবাসেন।’’
আরও পড়ুন : ভারতকে ১১০ রানে আটকে রাখা বড় কৃতিত্ব, দাবি স্টিডের
রাত পোহালেই ভোটগণনা। কিন্তু তা নিয়ে একটুও চিন্তিত দেখাল না দিনহাটা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী উদয়ন গুহকে। কারণ জেতার ব্যাপারে এবার ষোলোআনা নিশ্চিত। আগের দিনটা তাই দলীয় কার্যালয়ে খোশমেজাজেই সময় কাটালেন। সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ দিনহাটা শহরের শহিদ কর্নার এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে আসেন। সেখানে উদয়ন দলের কর্মীদের সঙ্গে ভোটগণনা নিয়ে আলোচনা করেন। কে, কীভাবে গণনাকেন্দ্রে কাজ করবেন, নজরদারি চালাবেন, তা নিয়ে কর্মীদের পরামর্শ দিলেন। দলীয় কার্যালয়ে ঘণ্টাখানেক কাটিয়ে বাড়ি চলে যান। উদয়ন বলেন, ‘‘কর্মীদের কাছ থেকে যা ফিডব্যাক পাচ্ছি, তাতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে যাবে।’’ উদয়ন যেরকম আত্মবিশ্বাসী সেরকমই আত্মবিশ্বাসী দলীয় কর্মীরা। দল উদ্বুদ্ধ। জয় নিশ্চিত। তবুও শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উচ্ছ্বাস যেন অন্যের বিড়ম্বনা না হয়।
প্রচারে জয় করেছেন মানুষের মন। কখনও লঞ্চে, কখনও আবার টোটোয় চেপে পৌঁছে গিয়েছেন গোসাবাবাসীর কাছে। পেয়েছেন বিপুল সমর্থন। তাই ফল নিয়ে চিন্তা করছেন না তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল। জয়ের আবির ওড়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। সোমবার বেশ খোশমেজাজেই দেখা গেল তাঁকে। কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করলেন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটালেন। মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে ভোট গণনা শুরু গোসাবা কেন্দ্রের। ক্যানিংয়ের ট্যাংরাখালি বঙ্কিম সরদার কলেজে হবে ভোট গণনা। ৩টি হলে চলবে গণনা। গণনার জন্য একুশটি টেবিল থাকছে। মোট ১৬ রাউন্ড গণনা হবে। এই কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ লক্ষ ৩০ হাজার ৮ জন। প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে এই কেন্দ্রে। এক নির্দল-সহ মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন। তবে লড়াই হবে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি প্রার্থীর মধ্যে। করোনা বিধি মেনে মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভোট গণনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গণনা কেন্দ্রের বাইরে কঠোর নিরাপত্তা। পরিচয়পত্র ছাড়া ভিতরে প্রবেশ নিষেধ।