প্রতিবেদন : প্রায় এক মাস হতে চলল ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া (Russia)। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার অনলাইনে ন্যাটোর বিশেষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করলেন, রাশিয়া তাঁদের বিরুদ্ধে ফসফরাস বোমা ব্যবহার করেছে। রাশিয়ার এই ফসফরাস বোমা হামলায় বৃহস্পতিবার বহু শিশু ও বয়স্ক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়া একের পর এক গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করছে। একইসঙ্গে জেলেনস্কি এদিন ন্যাটোর বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ ও শহরগুলিকে বাঁচাতে আমরা বারবার ন্যাটোর কাছে সামরিক সহায়তার আর্জি জানিয়েছি। কিন্তু ইউক্রেনকে কোনওরকম সাহায্য করা হয়নি। আমরা কিন্তু কখনওই যুদ্ধ করতে চাই না। আমরা সুস্থভাবে বাঁচতে চাই। ইউক্রেনবাসী শান্তিতে থাকতে চায়। উল্লেখ্য, পশ্চিমি দেশগুলির সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করেছিল ইউক্রেন। এই বিষয়টি নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। ন্যাটোর সদস্য পদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ দিতেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে রাশিয়া। অন্যদিকে রাশিয়া অবশ্য ইউক্রেনের এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ১৫০ কোটি টাকার মাস্টারপ্ল্যানে নতুন দিশা
এদিনই যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে খবর করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন রাশিয়ার তরুণী সাংবাদিক ওকসানা রাউলিনা। সংবাদসংস্থা আল-জাজিরার দাবি, কিয়েভের একটি বহুতলে ছিলেন ওকসানা। রুশ গোলায় ওই বহুতল আবাসনের কীরকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটাই ক্যামেরাবন্দি করছিলেন তিনি। সে সময় ওই আবাসনে ফের আছড়ে পড়ে রুশ গোলা। তাতেই প্রাণ হারান এই তরুণী সাংবাদিক। ওকসানা ছাড়াও ওই হামলায় আরও দুই সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই রুশ হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ফক্স নিউজের এক চিত্রসাংবাদিক।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে কীভাবে সাহায্য করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠকে বসছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশের শীর্ষ নেতারা। দু’দেশের এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনের প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রায় ১৫০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেনের দাবি, তাদের পাল্টা হামলায় রাশিয়ার প্রায় ১৫ হাজার সেনার মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে বেশকিছু সাঁজোয়া গাড়ি, যুদ্ধবিমান ও ট্যাঙ্ক। অন্যদিকে ফের ভারতের সাহায্য চাইলেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ইগর পোলিখা। বৃহস্পতিবার ইগর বলেন, ভারত যদি ইউক্রেনকে সব ধরনের সাহায্য করত তাহলে রাষ্ট্রদূত হিসাবে তিনি সবচেয়ে খুশি হতেন। রাশিয়ার ভূমিকায় আমাদের নাৎসিদের অত্যাচারের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। নাৎসিরা যেভাবে সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছিল রাশিয়াও (Russia) ঠিক সেই একই কাজ করছে।