প্রতিবেদন : দুর্গাপুরে বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠককে কেন্দ্র করে বড়সড় তোলাবাজির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। এবং সবচেয়ে তাৎপর্যের হল এই অভিযোগ এসেছে একটি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার মধ্যে থেকেই। বিষয়টি তাঁরা দিল্লিতে জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় আইবি সব খবরাখবর পেয়েছে। আপাতত কড়া বার্তা দিয়ে চেষ্টা চলছে ধামাচাপা দেওয়ার। বিজেপি সূত্রে খবর, দুর্গাপুরের চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভের (Chittaranjan Locomotive) শীর্ষ এক কর্তার সঙ্গে দেখা করে বিজেপির তিন রাজ্য নেতা বলেন, দুর্গাপুরের দলীয় অধিবেশনের জন্য খরচ লাগবে। কিছু বিশেষ আয়োজনেরও দরকার। দেখা যায় এই আর্থিক পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকা। চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভের (Chittaranjan Locomotive) কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, এমনিতেই তাঁরা যথেষ্ট আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে চলছেন। এখন এই খরচ দেওয়া অসম্ভব। বিজেপির যে নেতারা সেখানে গিয়েছিলেন তাঁদের আচরণেও বিরক্ত হন তিনি। সূত্রের খবর, সংস্থার এমডি বা চেয়ারম্যান বা কোনও শীর্ষ পদাধিকারী বিষয়টি দিল্লিতে জানান। তারপরেই নড়াচড়া শুরু হয়। যেহেতু এটির সঙ্গে রেলের যোগাযোগ নিবিড়, ফলে সেখানেও আলোচনা তুঙ্গে ওঠে। জানা গিয়েছে, যে তিনজন নেতার নাম এবিষয়ে সামনে এসেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই, কয়লা ব্যবসায়ী শিবিরের বলে পরিচিত বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, বিজেপির স্থানীয় নেতা দিলীপ দে। আপাতত দলে জোর চেষ্টা হচ্ছে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার। বিজেপির বক্তব্য, তাদের অধিবেশনকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এই ধরনের ভিত্তিহীন খবর ছড়ানো হচ্ছে। তিন নেতার ঘনিষ্ঠ শিবিরই বলছে তাঁরা এতে জড়িত নন। অথচ দলের মধ্যে পুরোদস্তুর এনিয়েই আলোচনা চলছে। এদিকে এর পাশাপাশি যে হোটেলে বিপুল খরচে বিজেপির বৈঠক হচ্ছে তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। হোটেলের নাম পুষ্পাঞ্জলি। যাকে কয়লা মাফিয়া বলা হয়, সেই রাজু ঝাঁ এর মালিক। তিনি আইটিসি ফরচুনকে অপারেশনাল কিছু দায়িত্ব দিলেও মূল মালিকানা তাঁরই আছে। যে বিজেপি কয়লা কেলেঙ্কারি বা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বড়বড় কথা বলে তাদের রাজ্য বৈঠকই যদি কয়লা মাফিয়াদের হোটেলে হয় তাহলে দলের ভাবমূর্তি বলে কিছু থাকে না, এনিয়ে দিল্লিতে নালিশ করেছেন রাজ্য নেতাদেরই একাংশ। এঁদের বক্তব্য, একটা রাজনৈতিক দল যদি বৈঠক করার জন্য এরকম হোটেল ছাড়া অন্য কোনও জায়গার কথা ভাবতে নাই পারেন, তাহলে বাংলার মানুষও সেই দলকে নিয়ে ভাববেন না এটা স্বাভাবিক। আপাতত বিজেপিতে কান পাতলেই এই তোলাবাজি এবং হোটেল বিতর্কের কথা শোনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন-ত্রিপুরায় সব আসনেই প্রার্থী, প্রচারে যাবেন নেত্রী-অভিষেক