পূর্ণেন্দু রায়, দিল্লি : হাইকমান্ডের ভুল কৌশলে হাতে থাকা রাজ্যও ‘হাতছাড়া’ হওয়ার উপক্রম। ভোটের মুখে পাঞ্জাব কংগ্রেসের অবস্থা দেখিয়ে দিচ্ছে সর্বভারতীয় দলটিতে নেতৃত্বের সংকট কত তীব্র! একদা গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংকে চাপ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধুর মানভঞ্জনের চেষ্টা করলেও রাহুল-প্রিয়াঙ্কাদের বেইজ্জত করে হঠাৎ ইস্তফা দিয়েছেন সিধুও। অন্যদিকে বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাড়িতে গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং৷ সব মিলিয়ে কার্যত ল্যাজেগোবরে কংগ্রেস।
পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সিধুর ইস্তফার পর কংগ্রেসের চিন্তা বাড়িয়েছে সিধু ঘনিষ্ঠ একাধিক কংগ্রেস নেতার পদত্যাগ৷ সিধু সরে দাঁড়ানোর পরে তাঁকে অনুসরণ করে ইস্তফা দিয়েছেন ক্যাবিনেট মন্ত্রী রাজিয়া সুলতানা৷ পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের দুই সচিব গৌতম শেঠ এবং যোগিন্দর ঢিংরা দু’জনেই ইস্তফা দিয়েছেন, পদ ছেড়েছেন কোষাধ্যক্ষ গুলজার ইন্দর চহেল৷ এর পরেও বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা পদ ছাড়তে পারেন বলে অনুমান করছে এআইসিসি৷ এতজন কংগ্রেস নেতার পদত্যাগ নিঃসন্দেহে কংগ্রেস হাইকমান্ডকে চিন্তায় ফেলছে৷ কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন৷ তার আগে দলে দলে নেতাদের দলত্যাগ বিরোধী শিবিরে থাকা আপ, অকালি দল এবং বিজেপিকে শক্তিশালী করবে, বুঝতে পেরেই দিল্লিতে এআইসিসি নেতাদের কপালের ভাঁজ আরও চওড়া হয়েছে৷
অন্যদিকে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সম্প্রতি নিজের ঘনিষ্ঠকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে সফল হলেও সামগ্রিক মন্ত্রিসভা গঠনে আদৌ খুশি ছিলেন না সিধু। এমনকী, প্রশাসনিক স্তরে রদবদলের ক্ষেত্রেও সিধুর মতামত সম্পূর্ণ মেনে নেওয়া হয়নি। সে কারণেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। সিধু আদতে গান্ধী পরিবারের উপর চাপের খেলা খেলতে চাইছেন। রাজনৈতিক মহলের সাফ কথা, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিধুর উপর যে ভরসা করেছিলেন সেটা কার্যত ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি রাহুল-প্রিয়াঙ্কা এখন এটাও বুঝতে পারছেন যে, সিধুর সব অন্যায় অনৈতিক দাবি মেনে নিয়ে তাঁরা ঠিক করেননি। বরং সিধুকে আরও আগেই সমঝে দেওয়া উচিত ছিল। সেটা না করার কারণেই সিধুর অন্যায় আবদার ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
আরও পড়ুন: সোনিয়াকে চিঠি আজাদের, ফের প্রকাশ্যে কংগ্রেসের কোন্দল