সংবাদদাতা, কাটোয়া : হিন্দু দেবতার শরীরে মুসলিম পোশাক। এভাবেই সম্প্রীতির বার্তা ছড়াচ্ছে কালনার বৈষ্ণবতীর্থ বাঘনাপাড়া। গ্রামে অজস্র মন্দিরের মধ্যে একটিতে পূজিত হন রাধাকৃষ্ণ, কৃষ্ণের অগ্রজ বলরাম ও তাঁর স্ত্রী রেবতী। বছরের একটি দিন কানাই-বলাইয়ের রাজবেশ খুলে পরানো হয় ফকির-দরবেশের কালো পোশাক। হিন্দু দেবতার গায়ে মুসলিম ফকিরের পোশাক পরানোর মধ্য দিয়েই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়ানোর প্রক্রিয়াটি প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো।
আরও পড়ুন-পশ্চিমি ঝঞ্ঝায় ফিরল ঠান্ডা
কৃষ্ণ-বলরামকে এই ‘অভিনব’ পোশাকে দেখতে এলাকার হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান। সেই ভিড়ে শামিল এলাকার বিধায়ক ও মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘এই ছবি বহন করছে বহুকাল আগে হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের দুই ধর্মগুরুর বন্ধুত্বের স্মৃতি।’ কৃষ্ণ-বলরামের ভগ্নপ্রায় মন্দিরটিকে ‘হেরিটেজ’ মন্দিরের স্বীকৃতির জন্য হেরিটেজ কমিশনকে আবেদন করবেন বলে জানান স্বপনবাবু। সেই সঙ্গে এলাকাটিকে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে ওই দফতরকেও লিখিত আবেদন দেবেন তিনি। মন্ত্রী ও এলাকার প্রবীণ মানুষজন জানান, বহুকাল আগে রামাইয়া প্রভু নামে এক বৈষ্ণবভক্ত বৃন্দাবন থেকে বাঘনাপাড়ায় এসে খড়ের চালের ঘর তৈরি করে কৃষ্ণসাধনা শুরু করেন। রোজ ধাত্রীগ্রামে স্নান করতে যেতে তাঁর দেখা হত সত্যপীরের সঙ্গে। দুজনের সখ্য দৃঢ় হয়। কৃষ্ণপুজোয় পীরকে নেমন্তন্ন করলে পীর কৃষ্ণ-বলরামের জন্য নিজেদের সম্প্রদায়ের জোব্বা আনেন তিনি। রামাইয়া কৃষ্ণ-বলরামকে দরবেশের পোশাক পরিয়েই পুজো দেন।