প্রতিবেদন : শনিবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে আবার সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্য। দু’দিন পরে কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন দুর্ঘটনায় মৃত আরও পাঁচ পর্যটক। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে সুদূর উত্তরাখণ্ডে পাড়ি দিয়েছিলেন রাজ্যের পাঁচ পর্যটক। কিন্তু সেখানেই নিভে গেল জীবনদীপ।
সশরীরে আর বাড়ি ফেরা হল না। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন একই পরিবারের তিনজন। ২৭ অক্টোবর উত্তরখণ্ডে বাগেশ্বরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাংলার পর্যটকদের গাড়ি। মৃত্যু হয় দুর্গাপুরের দম্পতি সুব্রত ভট্টাচার্য ও রুনা ভট্টাচার্যের। সঙ্গে ছিলেন সুব্রতবাবুর বোন চন্দনা খাঁ। তিনিও প্রাণ হারান ঘটনাস্থলেই। চন্দনাদেবী রানিগঞ্জের বাসিন্দা। এছাড়াও পর্যটকদের দলে ছিলেন রানিগঞ্জের কিশোর ঘটক ও আসানসোলের শ্রাবণী চক্রবর্তী। তাঁদের মরদেহও দিল্লি হয়ে শনিবার সকালে আসে দমদম বিমানবন্দরে। এখানে রাজ্য সরকারের তরফে উপস্থিত ছিলেন দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও মলয় ঘটক। তাঁরাই বিমানবন্দরে দেহগুলি তুলে দেন পরিবারের হাতে।
দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দারা সুব্রত ভট্টাচার্য ও রুনাদেবী। সুব্রত পেশায় স্টিল প্ল্যান্ট-হুইল অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান্টের কর্মী। এলাকাবাসীরা জানান, স্বামী-স্ত্রী দু’জনই ভ্রমণপিয়াসি। প্রকৃতির টানেই লক্ষ্মীপুজোর দিন তাঁরা বেরিয়ে পড়েন। কৌশানি থেকে নৈনিতাল যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁদের।
আরও পড়ুন : শার্দূলকে নিয়ে ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখলেন বিরাট
উত্তরাখণ্ড প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পিথোরাগড় জেলার মুন্সিয়ারি থেকে পর্যটকদের নিয়ে একটি গাড়ি বাগেশ্বরের কাছে কৌশানি অঞ্চলে যাচ্ছিল। উল্টোদিক থেকে ছুটে আসা অন্য একটি গাড়ি মুখোমুখি ধাক্কা মারে এই পর্যটকদের গাড়িটিকে। দ্বিতীয় গাড়ির যাত্রীরা সামান্য জখম হন। কিন্তু ৫ বাঙালি পর্যটক-সহ গাড়িটি খাদে তলিয়ে যায়। তাতেই মৃত্যু হয় রানিগঞ্জের কিশোর ঘটক এবং প্রাক্তন শিক্ষিকা চন্দনা খাঁ-র। মৃত্যু হয় সুব্রত ভট্টাচার্য, রুনা ভট্টাচার্য এবং সুব্রত ভট্টাচার্যর বোন শ্রাবণীর।
শনিবার কলকাতা বিমানবন্দরে কফিনবন্দি দেহগুলি পৌঁছনোর পরে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং মলয় ঘটক। প্রিয়জনরা সেখানেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁদের সান্ত্বনা দেন দুই মন্ত্রী। তাঁদেরই তত্ত্বাবধানে মৃতদের প্রিয়জনেরা কফিনবন্দি দেহ নিয়ে রওনা হন দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ এবং আসানসোলের উদ্দেশে।