দোহা, ৪ ডিসেম্বর: বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অটুট লিওনেল মেসির। নিজের হাজারতম ম্যাচ রাঙিয়ে আর্জেন্টিনাকে (Argentina vs Australia) পৌঁছে দিলেন বিশ্বকাপের শেষ আটে। এলএম টেনের জাদুতেই অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে লিওনেল স্কালোনির দল। সামনে এবার নেদারল্যান্ডস। এদিন দুর্দান্ত একটি গোল মেসির। অপর গোলটি জুলিয়ান আলভারেজের। বিশ্বকাপের নক আউটে প্রথম গোল করলেন মেসি (Lionel Messi)। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে দিয়েগো মারাদোনার করা ৮ গোলের রেকর্ড ভেঙে দিলেন। সামনে শুধু আর্জেন্টিনার জার্সিতে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার বিশ্বকাপে ১০ গোলের নজির। হাজারতম ম্যাচে মেসির নয়া কীর্তি। দেশের জার্সিতে ৯৪তম গোল। বল পায়ে গোটা ম্যাচে ইন্দ্রজাল ছড়িয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখলেন গ্যালারিকে। শেষ দিকে মেসির পাস থেকে লওতারো মার্টিনেজ একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারত আর্জেন্টিনা।
পোল্যান্ড ম্যাচে চোট পাওয়া ডি মারিয়াকে বাইরে রেখেই ৪-৩-৩ ফর্মেশনে আক্রমণাত্মক ছকে দল নামিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার (Argentina vs Australia) কোচ স্কালোনি। ডি’মারিয়ার জায়গায় পাপু গোমেজকে খেলান আর্জেন্টিনার কোচ। তবে খেলার প্রথম মিনিট থেকে বলের দখল নেয় আর্জেন্টিনা। ছোট ছোট পাসে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেন মেসিরা। অন্যদিকে, রক্ষণ জমাট রেখে প্রতিআক্রমণ-নির্ভর ফুটবল খেলার চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া। কিছুটা শারীরিক ফুটবল খেলে তারা। ডি’মারিয়া না থাকায় উইং দিয়ে আক্রমণ কম হয় আর্জেন্টিনার। থ্রু বল ধরে পাসিং ফুটবলে জোর দেন মেসি, এনজো ফার্নান্দেজ, রডরিগো ডি পলরা। মাঝমাঠের দখল আর্জেন্টিনার কাছে থাকলেও প্রথম ২৫ মিনিটে একটাও গোলমুখী শট নিতে পারেননি মেসি, আলভারেজরা।
শেষ পর্যন্ত ৩৫ মিনিটে মেসিকে এগিয়ে এসেই ভাঙতে হল অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণ-দুর্গ। বিশ্বকাপের নক আউটে প্রথম গোল এল এম টেনের। প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও ফিরতি বল পান মেসি। ডি’পলের সঙ্গে ওয়াল খেলে বক্সে ঢুকে বাঁ-পায়ের মাটি ঘেঁষা শটে দর্শনীয় গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মেসি। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় নীল-সাদা বাহিনী।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু গোলরক্ষক ম্যাট রায়ানের মারাত্মক ভুলের মাশুল দিতে হল সকারুদের। ৫৭ মিনিটে গোলরক্ষকের ভুলে দ্বিতীয় গোল হজম অস্ট্রেলিয়ার। বক্সের মধ্যে বেশিক্ষণ পায়ে বল রাখার খেসারত দিতে হয় রায়ানকে। তাঁর পা থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে ভুল করেননি জুলিয়ান আলভারেজ। গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করার করার পর আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায় আর্জেন্টিনা। নেতৃত্ব দেন সেই মেসি। স্কিলের ফুলঝুরিতে একাই গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছিলেন মেসি। কিন্তু অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের শেষ লগ্নে ম্যাচে ফেরে অস্ট্রেলিয়া। ৭৭ মিনিটে এক গোল শোধ করে তারা। গুডউইনের শট আর্জেন্টিনার এমিলিয়ানো মার্টিনেজের মাথায় লেগে গোলে ঢোকে। মার্টিনেজের আত্মঘাতী গোল দেওয়া হয়।