চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়: মহালয়ার বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই বাতাসে পুজোর গন্ধ। পুজোকে কেন্দ্র করে তৎপরতা তুঙ্গে। চলছে শেষ মূহূর্তের প্রস্তুতি। এই মুহূর্তে ব্যস্ততা চরমে প্রতিমার অলঙ্কার শিল্পীদেরও। রাতদিন এক করে কাজ করছেন তাঁরা। কারণ বাকিদের পুজো যখন শুরু হয় তার বেশ কিছুদিন আগেই যাবতীয় কাজ ডেলিভারি করে দিতে হয় অলঙ্কার শিল্পীদের। তাই এই মুহূর্তে তাঁরা মৃৎশিল্পীদের থেকেও বেশি ব্যস্ত।
প্রতিমার গয়না শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হয় মা দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীর রকমারি গহনার সেট ও ডাকের সাজ। প্রতিমার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শোলার গহনার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাপ-ঠাকুরদার হাত ধরে শোলার গহনা তৈরি ও ডাকের সাজে হাত পাকিয়েছেন ওঁরা। এমনই এক শিল্পী সমীরকুমার পাল। তিনি বলছেন, প্রতিমার অঙ্গসজ্জা যথেষ্ট যত্নের সঙ্গে করতে হয়। এর জন্য সময় অনেক লাগে। এ বছর বাজার অনেকটাই ভাল।
আরও পড়ুন-অবিনাশ-তেজিন্দারের সোনা, ২২ পদক নিয়ে রেকর্ড অভিযান শেষ শ্যুটারদের
বংশপরম্পরায় এই কাজই করে আসছেন তাঁরা। এটাই তাঁদের জীবিকা। দুর্গাপুজোর আগে এই মানুষগুলোর ব্যস্ততা তুঙ্গে ওঠে। এই সময় কয়েক মাস প্রতিমার অলঙ্কার, ডাকের সাজ তৈরি করে যে আয় হয় তা দিয়েই সারা বছর সংসার চালান।
তিনি জানালেন, পরিবারের সবাই যদি কাজে হাত লাগায় তবে একটি প্রতিমার সাজ তৈরি করতে সময় লাগে এক সপ্তাহ। বিভিন্ন উচ্চতার প্রতিমার জন্য প্রতিটা সেটের সাজ তৈরি করতে খরচ হয় ৩ হাজার হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন সাজের মধ্যে এখানে তৈরি হয় প্রতিমার মুকুট, আঁচল, চালি, বুক চেলি, ঘাড় বেণী, কলকা ও কান মোগর প্রভৃতি।
আরও পড়ুন-টেস্ট পরীক্ষায় বিতর্কিত প্রশ্ন নয়, নির্দেশ পর্ষদের
গহনার সেট তৈরি হওয়ার পরে কলকাতার বড়বাজার থেকে কুমোরটুলি সব জায়গায় পাইকারি হিসেবে চলে যায় এগুলো। পুজোকে কেন্দ্র করে এই কয়েক মাস চরম ব্যস্ততায় কাটে অলঙ্কার শিল্পীদের। পুজোর বাকি হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন। ফলে এই ক’দিন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই তাঁদের। মৃৎশিল্পীদের পাশাপাশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এই গহনা শিল্পীরাও।