অসীম চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: নির্বাচনী প্রচারে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসানসোলের মানুষকে বলেছিলেন, এই নির্বাচন শুধু জয়ের জন্য নয়, এই নির্বাচন হল ‘ভোট টু প্রটেস্ট’। তাঁর আবেদন ছিল, আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে, কেন্দ্রের স্বৈরাচারের প্রতিবাদে, গণতন্ত্রকে হত্যার চক্রান্তের প্রতিবাদে আপনার মূল্যবান ভোটটা দিন। শনিবার গণনার শুরু থেকে শেষ— আগাগোড়াই দেখা গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাত্ত আহ্বানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছেন আসানসোলের জনতা। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের তারকাপ্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা জিতেছেন রেকর্ড ভোটে। গেরুয়া প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালকে প্রায় ৩ লক্ষের বেশি ভোটের ব্যবধানে ধরাশায়ী করে দিয়ে বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন এই লোকসভা কেন্দ্রটি। লক্ষণীয়, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র এই প্রথম দখলে এল তৃণমূল কংগ্রেসের।
আরও পড়ুন-ডুবন্ত ট্রলার থেকে উদ্ধার
পরাজিত বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল অজস্র অজুহাত খাড়া করেছেন তাঁর বিপর্যয় ঢাকতে। দোষ চাপিয়েছেন দলেরই একাংশের ঘাড়ে। দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা, অনৈক্যের সেই পুরনো অজুহাত। ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন বিপর্যয়ের দায়ভার। কিন্তু যেটা ঘটনা, অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে আসানসোলের মানুষের তীব্র ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে ভোটের ফলে। আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক হয়েও গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এলাকার জন্য কিছুই করেননি অগ্নিমিত্রা। তলানিতে এসে ঠেকেছিল জনসংযোগ। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস সব সময়ই দাঁড়িয়েছে এলাকাবাসীর পাশে। সবচেয়ে বড় কথা রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা বন্ধের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা। অগ্নিমিত্রার সওয়ালে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে গিয়েছিল শ্রমজীবী মানুষের মনে। এই কারণেই সকলে দলবদ্ধভাবে ভোট দিয়েছেন অগ্নিমিত্রার বিরুদ্ধে।