সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন : তাঁর যে মস্তিষ্কবিকৃতি ঘটেছে এ নিয়ে প্রায়শই আড়ালে-আবডালে আলোচনা চলে। ইদানীং তা সামনেও চলে আসছে নানা কাণ্ড-কারখানার মধ্য দিয়ে। বিশ্বভারতীর (Visva- Bharati) বিতর্কিত উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নবতম সংযোজন, বছরের শেষ দিকে গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহে বসন্তবন্দনার আয়োজন। যা নিয়ে সমালোচনায় মুখর আশ্রমিক থেকে বিভিন্ন মহল। বুধবার ভোর পাঁচটায় বৈতালিক, সকাল সাতটায় ‘খোল দ্বার খোল, লাগলো যে দোল’ সংগীত ও নৃত্য-সহ গৌরপ্রাঙ্গণে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া উপাচার্যর এই বসন্ত বন্দনার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে প্রবীণ আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার জীবদ্দশায় এমন ঘটনা দেখিনি। গ্রীষ্মের আবহে বসন্ত বন্দনা? বিশ্বভারতী বড় পরিবার বলেই জানি। সেখানে যেমন বর্তমান শিক্ষক-ছাত্ররা আছেন, তেমনই আছেন প্রাক্তনীরা, আছেন আশ্রমিকরা। শুনেছি, বর্তমান শিক্ষক-ছাত্রদের নিয়ে বিশ্বভারতী বসন্তবন্দনা করেছে। এখন কর্তার ইচ্ছেয় কর্ম। কিছু বলার নেই।’ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘১৯০৭ সালে যেভাবে বসন্তবন্দনা হয়েছিল, সেভাবেই এবার বিশ্বভারতী তার ঐতিহ্যে ফিরে গেল। ২০১৯-এ অর্থাৎ তিন বছর আগে বসন্ত উৎসবের নামে তাণ্ডব নৃত্য হয়েছিল। তা চাইনি।’ আরেক প্রাক্তনী বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন উপাচার্যের এই খামখেয়ালিপনাকে কটাক্ষ করে বলেন, চৈত্রের শেষ, সংক্রান্তি পেরিয়ে গেল, তারপর বসন্ত বন্দনা আমি দেখিওনি, শুনিওনি। আসলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুযোগ্য সন্তান রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর বোধ হয় এই উপাচার্যের মতো করে বিশ্বভারতীকে বোঝেননি। শিব ঠাকুরের আপন দেশে, আইনকানুন সর্বনেশে।’
আরও পড়ুন-গণহত্যা নিয়ে বিশ্ববাসীর নিন্দার তোয়াক্কা না করেই হুমকি পুতিনের
বুধবার সকালের এই বসন্তবন্দনা যদিও সংবাদ মাধ্যমের পাশাপাশি সাধারণের কাছে ছিল প্রবেশাধিকারহীন। পাশাপাশি সোমবার বসন্তবন্দনা ছাড়াও বর্ষবরণ ও রবীন্দ্র জন্মোৎসব-সহ তিনদিনের অনুষ্ঠান সূচি প্রকাশ করে বিশ্বভারতী। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় দফতরে আম্বেদকরের জন্মদিবস পালন হবে। শুক্রবার বৈতালিকের মাধ্যমে বর্ষবরণের পর সন্ধ্যায় গৌরপ্রাঙ্গণে হবে নৃত্যনাট্য এবং পঁচিশে বৈশাখ হবে রবীন্দ্র জন্মোৎসব পালন। উল্লেখ্য, গত বছর গোপনে বসন্তবন্দনা করে বিশ্বভারতী (Visva- Bharati)। এবার উপাচার্যর এই গরমকালে বসন্তবন্দনা সত্যিই
লোক হাসিয়েছে।