নয়াদিল্লি : দেশের সেরা তদন্তকারী এজেন্সির নমুনা! বেমালুম এক সাক্ষীকে মৃত বলে চালিয়ে দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই ধোঁকাবাজি টিকল না৷ খোদ সাক্ষীই আদালতে এসে জানিয়ে দিলেন, তিনি এখনও বহাল তবিয়তে বেঁচে আছেন৷
বিহারের মুজফফরপুরের সাংবাদিক রাজদেব রঞ্জন হত্যা মামলায় এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা৷ দেশের অন্যতম সেরা তদন্তকারী সংস্থার যোগ্যতা এই জমানায় কোথায় পৌঁছেছে তা আরেকবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই নির্লজ্জ গাফিলতি৷ প্রকৃত সত্য ফাঁস হতেই মুখ পুড়েছে সিবিআইয়ের৷ কেন্দ্রীয় সংস্থার এই গাফিলতির ইচ্ছাকৃত কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে৷ শুক্রবার মামলার অন্যতম সাক্ষী বাদামি দেবী (Badami Devi) নিজেই আদালতে চলে আসেন৷ বিচারককে বলেন, হুজুর আমি বেঁচে আছি৷ অথচ সিবিআই (CBI) আমাকে মৃত বলে ঘোষণা করেছে৷ এরপরেই শোরগোল পড়ে যায়৷ সিবিআইয়ের কাছে এই ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে আদালত৷
গত ২৪ মে সাংবাদিক হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী বাদামি দেবীকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে আদালতে রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই৷ শুক্রবার নিজেই আদালতে হাজির হয়ে ‘মৃত’ সাক্ষী সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন৷ আদালতে নিজের ভোটার আই কার্ড, প্যান কার্ড, আধার–সহ যাবতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে জানান, এই কাণ্ডে তিনি (Badami Devi) স্তম্ভিত৷ তাঁর কথায়, আমার বয়স ৮০ পেরিয়ে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমি এখনও বেঁচে আছি৷ অভিযুক্তদের যোগসাজশে সিবিআই আমাকে মৃত ঘোষণা করে দিয়েছে৷ বাদামি দেবীর আইনজীবী শরদ সিনহা বলেন, এটা গুরুতর অবহেলা৷ দেশের সবচেয়ে বড় তদন্তকারী সংস্থা যদি এই কাজ করে তাহলে তদন্তের উপর কী করে ভরসা করা যাবে? সিবিআই তদন্তকারীরা সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ না করেই একতরফা তাঁকে মৃত ঘোষণা করে দিয়েছেন, এমনকী আদালতে এ নিয়ে রিপোর্টও দাখিল হয়েছে৷ এর পিছনে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র রয়েছে৷ আদালতের কাছে আরজি, গোটা বিষয়টি বিস্তারিত অনুসন্ধান করে দেখা হোক৷ বাদামি দেবীর পক্ষ থেকে এই ঘটনার মধ্যে সাংবাদিক হত্যা মামলার অভিযুক্তদের প্রত্যক্ষ যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়েছে৷
আরও পড়ুন: অবশেষে ছুটি
২০১৬ সালের ১৩ মে সাংবাদিক রাজদেব রঞ্জনকে সিওয়ানের স্টেশন রোডে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল৷ একদল প্রভাবশালী ও দুষ্কৃতী মিলে বাদামি দেবীর বাড়ি দখলের চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ৷ তার প্রতিবাদেই সোচ্চার হন সাংবাদিক রাজদেব রঞ্জন৷ তখনই তাঁকে খুন করা হয়৷ জানা যায়, অন্যতম অভিযুক্ত লাদন মিঞা–সহ অন্য চক্রীরা ভেবেছিল সাংবাদিককে হত্যার পরেই বাদামি দেবীর বাড়ি দখল করে নেওয়া হবে৷ পরবর্তীকালে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে৷ তদন্তে প্রাক্তন সাংসদ মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন–সহ আট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিশেষ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিবিআই৷