নকিব উদ্দিন গাজি বারুইপুর: বারুইপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে দুর্গাপুজোর শুরু ২৭৪ বছর আগে। প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগে মহিষাদল রাজবাড়ির কুলপুরোহিত সহস্রদল বন্দ্যোপাধ্যায় এই কল্যাণপুরে এসে জঙ্গল সাফ করে জমিদারির পত্তন করেছিলেন। জমিদারির রীতি মেনে পরিবারের পুজো-আচ্ছার শুরু তখন থেকেই। কিন্তু ২৭৪ বছর আগে তৈরি হয় আজকের এই ঠাকুর দালান। সেই থেকেই টানা চলে আসছে এই দুর্গাপুজো। সম্পূর্ণ সাবেকি ভাবধারায় আজও জেলার সেরা বনেদিবাড়ির দুর্গাপুজো হিসেবে বিবেচিত হয় এই বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজো।
আরও পড়ুন-বিজেপি সাংসদের ছবিতে মুখে কালি দিল সমর্থকরা
আজও সন্ধিপুজো শুরু হয় বন্দুকের গর্জনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। লক্ষণীয়, এই জমিদারবাড়িতে পুজোর আয়োজনে মহিলাদের চেয়ে পুরুষরাই বেশি সক্রিয়। পুজোর নৈবেদ্য সাজনো থেকে শুরু করে ফলকাটা সবই করেন বাড়ির ছেলেরা। বারুইপুরের আদি গঙ্গা সংলগ্ন কল্যাণপুরের বন্দোপাধ্যায় বাড়িতে এখন সাজ-সাজ রব। প্রস্তুতি দেখতেই দুবেলা ভিড় জমাচ্ছেন আশপাশের মানুষ। দুর্গামন্দিরে চলছে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রঙের প্রলেপ পড়ছে মন্দিরে। প্রতিমায় শেষ তুলির টানে ব্যস্ত শিল্পীরা। রথের দিন থেকে কাঠামোর পুজো দিয়ে শুরু হয় প্রস্তুতি। প্রতিপদেই বসে ঘট। তবে মহালয়া থেকেই কার্যত দুর্গাপুজো শুরু হয়ে যায় এই বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়িতে। কুলপুরোহিতের সঙ্গে বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুরুষেরা মহালয়া থেকে প্রতিদিনই অংশ নেন চণ্ডীপাঠে।
আরও পড়ুন-দূষণমুক্ত পরিবেশের লক্ষ্যে ৪০ কোটি টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার, কলকাতা পুলিশে ২০০ বৈদ্যুতিক গাড়ি
মহালয়ায় ঘট বসে দুর্গা মন্দিরে। সেইদিন থেকেই পরিবারে মাংস, ডিম, পেঁয়াজ সবকিছুই খাওয়া বন্ধ। যা চলে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত। মায়ের বোধন শুরু হয় দরমার বেড়া দিয়ে বেলগাছ ঘিরে। শুধুমাত্র দীক্ষিত মহিলারাই পান পুজোর ভোগ রান্নার অনুমতি। এখনও এই পুজোয় বলির প্রথা রয়েছে। অষ্টমী, নবমী ও সন্ধিপুজার সময় পাঁঠাবলির রীতি রয়েছে। কারণ, দশমীর দিন অরন্ধন পালিত হয়। সেদিন রান্না হয় না। নবমীর ভোগের পর ফের দশমীর রান্নার আয়োজন করা হয়।