ঢাকা, ৭ ডিসেম্বর : শেষ ওভারে দরকার ছিল ২০ রানের। শেষ বলে যেটা কমে দাঁড়াল ৬ রান। রোহিত কি পারবেন আঙুলে চোট নিয়েও ভারতকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিতে? না, শেষপর্যন্ত তিনি সেটা পারেননি।
মিরপুর স্টেডিয়ামে তখন দমবন্ধ করা টেনশন। যেটা রোহিত ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নামার পর শুরু হয়েছিল। তার আগে ভারত যখন ৮ উইকেটে ২১৩, নেমেছিলেন রোহিত। ভারত জয়ের কাছাকাছি আসতে পারে তখন ভাবাই যায়নি। কিন্তু মহম্মদ সিরাজকে উল্টো দিকে দাঁড় করিয়ে মারতে শুরু করলেন অধিনায়ক। তবে মুস্তাফিজুরের শেষ বলে তিনি আটকে যেতেই ভারত হেরে গেল ৫ রানে। ০-২ হারে একদিনের সিরিজ হাতছাড়া হয়ে গেল রোহিতদের (India vs Bangladesh Match)। চট্টগ্রামে শেষ ম্যাচের কোনও গুরুত্ব থাকল না।
বাংলাদেশের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলে চোট পেয়েছিলেন রোহিত। তাঁকে স্ক্যান করাতে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। ফিরে এসে তিনি মাঠে নামেননি। যা খবর, তৃতীয় ম্যাচে তিনি নেই। আশঙ্কা টেস্ট সিরিজেও। সেটা রাহুল দ্রাবিড়ও স্বীকার করেছেন। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে এই অবস্থা নিয়েও রোহিতকে ব্যাট হাতে নামতে হল। তখন ৬৫ রানের মধ্যে বিরাট (৫), শিখর (৮), ওয়াশিংটন সুন্দর (১১) ও রাহুল (১৪) ফিরে গিয়েছিলেন।
তবে এরপর শ্রেয়স (৮২) ও অক্ষর প্যাটেল (৫৬) মিলে ১০৭ রান জুড়ে পরিস্থিতি সামলেছিলেন। কিন্তু এই দু’জন পরপর ফিরে যাওয়ায় চোট নিয়েই রোহিতকে নামতে হয়। তিনি পাঁচটি ছক্কা ও তিনটি চারের সাহায্যে ২৮ বলে ৫১ রান করে যান। ১৮তম ওভার টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল। মুস্তাফিজুরের বলে সিরাজ শট খেলতে পারেননি। সিঙ্গলস নিয়ে রোহিতকে স্ট্রাইক দিতেও ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে শেষ দু’বলে দুটি ছক্কার প্রয়োজন ছিল রোহিতের। যার প্রথমটা হলেও দ্বিতীয় ছক্কা আর পেরে ওঠেননি ভারত অধিনায়ক।
আরও পড়ুন-তিন পয়েন্টে চোখ জুয়ানের
প্রত্যাশামতোই উমরান মালিককে এই ম্যাচে খেলিয়েছে ভারত (India vs Bangladesh Match)। তবে তাঁর দলের আসার ব্যাপারটা সহজ হয়ে গিয়েছিল কুলদীপ সেন চোট পেয়ে সিরিজের বাইরে চলে যাওয়ায়। প্রথম স্পেলে এসে উমরান বাংলাদেশ ব্যাটিংকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। শাকিব আল হাসানের গায়ে বল মারলেন। তাঁর হেলমেটে বল লাগালেন। নাজমুল শান্তর স্টাম্প যে বলে উপড়ে দিলেন, গতি ছিল ১৫১ কিমি। সবমিলিয়ে দুটি উইকেট নেন উমরান। নাজমুল ও মাহমদ্দুল্লাকে আউট করেছেন। বোলিং গড় ১০-২-৫৮-২।
৬৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ২৭১ রান তুলেছে। আর সেটা সেই মেহেদি হাসান মিরাজের জন্য। ৮৩ বলে ১০০ নট আউট থেকে গেলেন তিনি। প্রথম একদিনের ম্যাচে অসাধারণ হাপ সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন মেহেদি। বুধবারের ম্যাচেও মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ১৪৮ রানের পার্টনারশিপ খেলেছেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ করেছেন ৭৭ রান। এই ম্যাচে শাহবাজ আমেদের বদলে দলে ফেরানো হয়েছিল অক্ষর প্যাটেলকে। তিনি ৭ ওভারে ৪০ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি।
সিমারদের মধ্যে উমরান ছাড়া শার্দূল ঠাকুর ও মহম্মদ সিরাজ দশ ওভার করে বল করেছেন। কিন্তু দীপক চাহারকে মাত্র তিন ওভার বল করানো হয়। উমরান ছাড়া দুটি উইকেট নিয়েছেন সিরাজ। তবে ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবথেকে সফল ওয়াশিংটন সুন্দর। তিনি ১০ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন। বাংলাদেশ ১১ রানে ওপেনার আমিনুল হককে হারানোর পর থেকে নিয়মিত উইকেট হারিয়েছে। কিন্তু এরপর মেহেদি ও মাহমুদ্দুল্লাহ মিলে দলকে শক্ত জমির উপর দাঁড় করিয়ে দেন।
খেলার পর রোহিত জানান, তাঁর আঙুলের হাড় ভাঙেনি। শুধু ‘ডিসলোকেশন’ হয়েছে। তিনি প্রথম ম্যাচের মতোই এই হারেও বোলারদের দিকেই আঙুল তুললেন। রোহিতের কথায়, ‘‘ওদের ৬৯/৬ করে দেওয়ার পর ২৭১ রান তুলতে দেওয়া অবশ্যই আমাদের ব্যর্থতা। প্রতিটি হারেরই কিছু পজিটিভ ও নেগেটিভ দিক থাকে। আমরা এটা দেখব।’’