খাস রাজধানীর বুকে ফের নারী নিগ্রহ। তরুণীকে গণধর্ষণের পর নির্যাতিতার মাথা মুড়িয়ে, তাঁকে জুতোর মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন সকলে। দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল (Swati Maliwal) কেন্দ্রের কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও (Arvind Kejriwal)। রাজধানীতে (Delhi) মহিলাদের বারবার নিগ্রহের ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় (Lina Ganguly)। তৃণমূল (Tmc) কাউন্সিলর বসুন্ধরা গোস্বামী (Basundhara Goswami) কোথায় “এরা তালিবানের মতোই বর্বর।” এইসব ঘটনা সারা পৃথিবীর সামনে ভারতকে লজ্জিত করে বলে মত তাঁর।
দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের রাতে দিল্লিতে (Delhi) ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর ওই নির্যাতিতার মাথা মুড়িয়ে তাকে জুতোর মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো হয় এবং সেটা করেন মহিলারাই এই এই ঘটনায় তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে সব মহলে।
আরও পড়ুন – গোয়া নিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাল তৃণমূল কংগ্রেস
দিল্লির ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন তথা লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এর মত দুঃখজনক, দুর্ভাগ্যজনক নিন্দনীয় ঘটনা আর হয় না”। বিভিন্ন নিরিখে অনেক সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের নাম উঠে আসে। অথচ দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে দিল্লিতে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা অত্যন্ত বেশি। একজন মহিলাকে শুধু গণধর্ষণের নয়, তাঁকে তারপরে নিগ্রহ করা হয়েছে। এবং তাতে মদত দিয়েছেন আরও কয়েকজন মহিলা। এর থেকে লজ্জাজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না। একজন মহিলা হিসেবে শুধু প্রতিবাদ করা নয়, এর জন্য অত্যন্ত লজ্জা বোধ করছি। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, নির্যাতিতা যদি সুবিচার পান তাহলে অন্তত কিছুটা স্বস্তি পাবেন। যত দ্রুত সম্ভব দল না দেখে দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। তিনি বলেন, মহিলা নিগ্রহের কোনও নালিশ যদি তাঁদের কাছে আসে, তাহলে তাঁরা কোনো রং না দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। অথচ রাজধানীতে একজন মহিলাকে ২৬ জানুয়ারির মতো দিনে এইভাবে নিগৃহীত হতে হল, এটায় নিন্দার ভাষা নেই। অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা এটি।
তৃণমূল কাউন্সিলর তথা মনোবিদ বসুন্ধরা গোস্বামী বলেন, এই ধরনের ঘটনা উগ্র পুরুষতান্ত্রিকতার প্রমাণ দেয়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা তালিবানের মতোই বর্বর। মহিলাদের এরা শারীরিক পণ্য ছাড়া আর কিছুই মনে করে না। উত্তর ভারতে এই ধরনের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। বসুন্ধরার বলেন, এই ধরনের বর্বোরোচিত ঘটনায় বিশ্বের সামনে ভারতকে লজ্জিত হতে হয়। এই বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বসুন্ধরা। তিনি বলেন, আর কতদিন তিনি আধ্যাত্মিক জীবন নিয়ে ভাববেন! ভারতের অর্ধেক আকাশ মহিলারা। এবার তো তাঁদের নিয়ে ভাবতে হবে। রাজধানীর বুকে বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। অথচ প্রকৃত দোষী শাস্তি পাচ্ছে না। এর ফলে আরও সাহস বেড়ে যাচ্ছে। মহিলাদের শুধুমাত্র শারীরিক শুচিতা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। এসব মানসিকতার ফলে তাদের শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়। একজনকে গণধর্ষণ করা অত্যন্ত অন্যায়। এক্ষেত্রে শুধু গণধর্ষণ নয়, তারপরে তাঁকে এলাকায় প্রকাশ্যে হেনস্থা করা হয়েছে যে মহিলারা কাজ করেছেন তাঁরাও পুরুষতান্ত্রিকতার শিকার। সারা বিশ্বজুড়ে লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা হচ্ছে। অথচ দিল্লি, উত্তরপ্রদেশের মতো জায়গায় মহিলাদের উপর এই ধরনের অত্যাচার থামছে না। এটা অত্যন্ত লজ্জার।