চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: দৃশ্যটা দেখে বোঝার উপায় নেই, বৃহস্পতিবার থেকে ইডেন গার্ডেন্সের ২২ গজ যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। ৩৩ বছর পর রঞ্জি ট্রফি জয়ের খরা কাটাতে ঘরের মাঠে নামছে বাংলা। গোটা দলের ফোকাস সেদিকেই। অথচ রঞ্জি ফাইনালের (Ranji Final) আগের দিন যুযুধান দুই দলের দুই প্রধান সেনাপতি খোশগল্পে মত্ত। এক জন বাংলার (Wes Bengal) অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি, অন্যজন সৌরাষ্ট্র (Saurashtra) অধিনায়ক জয়দেব উনাদকাট।
সেই কেকেআরে (KKR) দু’জনের খেলার সময় থেকেই বন্ধুত্ব দু’জনের। এদিনও মাঠের মধ্যে দু’জনের মজা করার দৃশ্য বুঝিয়ে দিল, বন্ধুত্ব অটুট। প্র্যাকটিসের পর মনোজ বললেন, ‘‘আমি প্র্যাকটিস শেষে যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছি, জয়দেব তখন মন্ত্রী…মন্ত্রী…বলে ডাকছিল। তখন আমি গিয়ে কথা বলি। ও আমার থেকে একটু জুনিয়র হলেও পুরনো সম্পর্ক রয়ে গিয়েছে। ও আমার ছোট ভাইয়ের মতো। কেকেআরে যখন একসঙ্গে খেলতাম, এক রুমে প্লে-স্টেশন খেলতাম।’’
অথচ ইডেনের সবুজ উইকেটে এই উনাদকাটের বাঁ-হাতি পেস বোলিং ঠিকঠাক সামলানোই হবে বাংলার ব্যাটারদের বড় পরীক্ষা। দু’দিন ধরে তার মহড়াও সেরে রাখলেন মনোজ, অনুষ্টুপ মজুমদাররা। সৌরাষ্ট্রের ক্লাব ক্রিকেটে খেলা এক বাঁ-হাতি পেসারকেও নেটে দু’দিন খেলে নিজেদের তৈরি রাখলেন বঙ্গ ব্যাটাররা। অর্থাৎ উনাদকাটদের সঙ্গে বন্ধুত্বটা শুধু মাঠের বাইরে।
আরও পড়ুন-ইডেনে বদলার রঞ্জি ফাইনাল ঘিরে চড়ছে পারদ, একপেশে ম্যাচে আমরাই জিতব, হুঙ্কার মনোজের
সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বন্ধুত্ব পর্ব শুনিয়েও নির্মম ক্রিকেটের বার্তা দিয়ে রাখলেন বাংলার অধিনায়ক। মনোজ বললেন, ‘‘মাঠের বাইরে সকলের সঙ্গেই বন্ধুত্ব রাখতে হবে। তবে যখনই মাঠে প্রবেশ করব, তখন আমি জয়দেবকে চিনি না। আমরা নির্মম হয়ে যাব। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে আমরা সেটা করেছি। সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ফাইনালেও এই মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামব।’’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০ হাজার রানের মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে মনোজ। কিন্তু বঙ্গ অধিনায়কের কাছে ব্যক্তিগত কীর্তির কোনও গুরুত্ব নেই। বললেন, ‘‘আমি যে নেতৃত্ব দিতে পারি সেটা আগেও ট্রফি জিতিয়ে প্রমাণ করেছি। কিন্তু রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বপ্নপূরণ হয়নি। এবার পারব কি না, সেটা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই জানা যাবে। বাংলার মানুষের সমর্থন চাইছি।’’
দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছে মনোজ-লক্ষ্মীরতন শুক্লার বাংলা। একটা জায়গাই ফাইনালের (Ranji Final) আগে ভাবাচ্ছে থিঙ্ক ট্যাঙ্ককে। ওপেনিংয়ে ফের হয়তো নতুন জুটি দেখা যাবে। টিম সূত্রে খবর, করণ লালের জায়গায় খেলতে পারেন সুমন্ত গুপ্ত। তিনিই সম্ভবত ওপেন করবেন অভিমন্যু ঈশ্বরণের সঙ্গে। আরও একটা পরিবর্তন কার্যত নিশ্চিত।
বাঁ-হাতি স্পিনার প্রদীপ্ত প্রামাণিকের জায়গায় খেলবেন পেসার-অলরাউন্ডার আকাশ ঘটক।