প্রতিবেদন : টিভি বিতর্ক এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ক্যাঙারু আদালত দেশকে পিছন দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না (Justice NV Ramana)। শনিবার, টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনা করে প্রধান বিচারপতি তাদের আচরণকে পক্ষপাতদুষ্ট, অজ্ঞাত এবং এজেন্ডা-চালিত বলে সমালোচনা করেছেন। পাটনা হাইকোর্টের রাঁচি সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিচারপতি এস বি সিনহা স্মারক বক্তৃতা দেন রামান্না (Justice NV Ramana)। সেখানেই প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো প্রচার চলছে। বিচারকরা অবিলম্বে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন না। দয়া করে এটিকে দুর্বলতা বা অসহায়ত্ব বলে ভুল করবেন না। প্রধান বিচারপতি বলেন, মিডিয়ার নতুন ব্যবস্থায় তাদের প্রচার চালানোর প্রভূত ক্ষমতা রয়েছে। তবে ঠিক এবং ভুল, ভাল এবং খারাপ, আসল এবং নকলের মধ্যে পার্থক্য করতে পারছে না তারা। মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক হতে পারে না মিডিয়া ট্রায়াল। আমরা মিডিয়াকে ক্যাঙারু কোর্ট চালাতে দেখি। এসবের কারণে অনেক সময় অভিজ্ঞ বিচারকদেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। বিচার প্রদানের সঙ্গে জড়িত ইস্যুতে অজ্ঞাত এবং এজেন্ডা-চালিত বিতর্ক গণতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক প্রমাণিত হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, মিডিয়ার পক্ষপাতদুষ্ট মতামত গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ক্ষতি করছে। এর ফলে ন্যায়বিচার প্রদানের প্রতি বিরূপ প্রভাব পড়ে। টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ার উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা নিজেদের দায়িত্ব লঙ্ঘন করে দেশের গণতন্ত্রকে দুই ধাপ পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রিন্ট মিডিয়ার এখনও একটি নির্দিষ্ট মাত্রার জবাবদিহিতা রয়েছে। কিন্তু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জবাবদিহিতার কোনও দায় নেই। কারণ এটি যা দেখায় তা হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়া আরও খারাপ। মিডিয়াকে স্ব-নিয়ন্ত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রামান্না বলেন, মিডিয়ার উচিত স্ব-নিয়ন্ত্রিত হওয়া এবং তথ্য যাচাই করে কথা বলা। আমি ইলেকট্রনিক এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাই। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার উচিত তাদের ভয়েস ব্যবহার করে মানুষকে শিক্ষিত করা এবং জাতিকে শক্তি জোগানো।
আরও পড়ুন: ট্রলার থেকে পড়ে নিখোঁজ মৎস্যজীবী