পাখিদের গানে তো যন্ত্র লাগে না

একেবারে প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ-মাটি-বাংলা এখান থেকে উঠে আসা একজন স্বাভাবিক লোক। যাঁর একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক আনুগত্য ছিল।

Must read

ব্রাত্য বসু: কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় থেকেই প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপ। প্রতুলদা আমাদের কলেজের ডিরোজিও হলের সামনে— তখন নাম ছিল বেকার হল— সেখানে গান গাইতে আসতেন। সেই থেকে শুরু, এরপর কালের নিয়মে বেড়েছে যোগাযোগ, সখ্যতা, ঘনিষ্ঠতা। প্রতুলদা বাংলা গানের কাছে, বাঙালির কাছে অমর। প্রতুলদার থিওরি ছিল, কোনও মিউজিক্যাল বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই উনি দিব্যি গান গাইতেন। প্রতুলদাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করায়, উনি বলেছিলেন, পাখি তো গান গায়, তার কি কোনও বাদ্যযন্ত্র লাগে? কোনও মিউজিশিয়ান লাগে? এটা হচ্ছে প্রতুলদার জীবনদর্শণ।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

একেবারে প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ-মাটি-বাংলা এখান থেকে উঠে আসা একজন স্বাভাবিক লোক। যাঁর একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক আনুগত্য ছিল। প্রতুলদা অসম্ভব ভরসা করতেন, স্নেহ করতেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রতুলদার মতো এতো বড় শিল্পী এই মা-মাটি-মানুষের সরকারের সঙ্গে সবসময় থেকেছেন। নানাভআবে প্রতুলদাকে দেখেছি, কখনও নন্দীগ্রাম, কখনও সিঙ্গুরে সরকারের নানা জনমুখী প্রকল্পের জন্য ছুটে যেতেন। ওঁর চিকিৎসার যাবতীয় দায়ভার বহন করেছে রাজ্য সরকার। সামনেই ২১ ফেব্রুয়ারি। মুখ্যমন্ত্রী প্রতি বছর দেশপ্রিয় পার্কের অনুষ্ঠানে বাংলার শিল্পীদের জড়ো করে সম্মান দিয়েছেন। সেখানে প্রতুলদা গাইতেন— ‘আমি বাংলায় গান গাই।’ তবে বড় আক্ষেপ, একুশে ফেব্রুয়ারিতে আর ওঁর কণ্ঠ শোনা যাবে না। প্রতুলদা চলে গেলেন। কিন্তু বাংলা ও বাঙালি যতদিন বেঁচে থাকবে প্রতুল মুখোপাধ্যয় চিরজীবী হয়ে থাকবেন। অমর হয়ে থাকবেন।

Latest article