প্রতিবেদন : লোকসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে একের পর এক ফাঁপরে পড়ছে বিজেপি। এবারে গেরুয়া শিবিরকে বিহারে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলল কাকা-ভাইপোর লড়াই। ভাইপোর পক্ষ নিতে গিয়েই ফ্যাসাদে পড়ল গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার পদত্যাগ করে বসলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পশুপতি পরাশ। লোকসভা নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে লোক জনশক্তি পার্টি সুপ্রিমো চিরাগ পাসোয়ানের সঙ্গে দড়ি টানাটানির জেরেই জটিল হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি।
আরও পড়ুন-তলব রামদেবকে, মিথ্যা বিজ্ঞাপনে কড়া সুপ্রিম কোর্ট
বিহারে এনডিএ-র ৩ শরিক বিজেপি, জেডি(ইউ) এবং এলজেপি-র চিরাগ গোষ্ঠীর মধ্যে আসন ভাগাভাগি পাকা হয়ে যাওয়ার পরে রামবিলাসের ভাই এলজেপি-র আর একটি গোষ্ঠীর সুপ্রিমো পশুপতি দেখেন বাদ পড়েছেন তিনি এবং তাঁর দল। এমনকী হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা এবং রাষ্ট্রীয় লোকমোর্চাকে একটি করে আসন ছাড়া হলেও একটি আসনও জোটেনি তাঁর ভাগে। এর পরেই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন পশুপতি। আসলে হাজিপুর কেন্দ্রটির দিকে নজর ছিল কাকা-ভাইপোর দু’জনেরই। পরশ আগ বাড়িয়ে ঘোষণাও করে দিয়েছিলেন, হাজিপুর আসন থেকে লড়াই করবেন তিনিই। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, বিজেপি আসনটি ছেড়ে দিয়েছে এলজেপি-র চিরাগ গোষ্ঠীকেই। এতেই প্রচণ্ড গোঁসা হয় কাকার। পশুপতি সাফ জানালেন, আমার দল আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে অবিচারের শিকার হয়েছে। এর প্রতিবাদেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ ছাড়লাম আমি। আরজেডি সুপ্রিমো লালুপুত্র তেজস্বী যাদব সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, পশুপতি আসতে চাইলে আমাদের গ্র্যান্ড অ্যালায়েন্সে স্বাগত জানাব আমরা। স্বাভাবিকভাবেই গভীর অস্বস্তিতে বিজেপি।
আরও পড়ুন-মুজফফরনগরে প্রতিবাদী শিক্ষককে গুলি করে মারল মদ্যপ হেড কনস্টেবল
দ্বিতীয় প্রার্থীতালিকা প্রকাশিত করার পরেই কর্নাটকের গেরুয়া শিবিরে ছড়িয়ে পড়ছে বিদ্রোহের আগুন। এবারে সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডিভি সদানন্দ গৌড়া। কোনওরকম রাখঢাক না করেই মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, আমার সঙ্গে অন্য দলও যোগাযোগ করেছে। কথাবার্তা চলছে। গৌড়ার কথায় স্পষ্টতই দলবদলের ইঙ্গিত। বোঝাই যাচ্ছে কংগ্রেসের দিকে পা বাড়িয়ে আছেন তিনি। আসলে দু’বারের সাংসদ সদানন্দের নাম এবারে বিজেপির প্রার্থী তালিকাতে না থাকার কারণেই এই বিদ্রোহ। কিন্তু মুশকিলটা হচ্ছে, শুধু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নয়, মোদির মন্ত্রিসভাতেও রেলমন্ত্রী ছিলেন সদানন্দ গৌড়া। ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতিও। ৭১ বছরের এই নেতার ভোক্কালিগগা সম্প্রদায়ের মধ্যেও যথেষ্ট প্রভাব। ফলে গভীর দুশ্চিন্তায় বিজেপি। কারণ কয়েকদিন আগেই প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কে এস ঈশ্বরাপ্পার গোঁসা এবং বিদ্রোহ অস্বস্তিতে ফেলেছে গেরুয়া শিবিরকে।
আরও পড়ুন-সিএএ : কেন্দ্রের জবাবদিহি তলব শীর্ষ আদালতের
গেরুয়া শিবিরে একটার পর একটা জটিলতা দেখা দিচ্ছে মহারাষ্ট্রেও। এতদিন অজিত পাওয়ারের এনসিপি ও শিন্ডের শিবসেনার আবদার মেটাতে নাভিশ্বাস উঠেছিল বিজেপির। কিন্তু সমস্যা মিটেও মিটছে না। সুনির্দিষ্ট কিছু আসনের দাবিতে জেদ ধরে বসে আছেন এক-একজন স্থানীয় নেতা। ফলে শেষ মুহূর্তেও কাটছে না অস্বস্তি। ধিকি ধিকি করে জ্বলছে বিদ্রোহের আগুন৷ সমস্যা মেটাতে দিল্লিতে ডাক পড়েছে গেরুয়া–বন্ধুদের৷ কিন্তু এবারে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা প্রধান রাজ ঠাকরে এনডিএ-র হাত ধরায় গোঁসা হয়েছে পুরনো শরিকদের। কারণ অনেকেরই পছন্দ নয় রাজকে৷ কেউ আবার নিজের জায়গা হারানো আশঙ্কায় ভুগছে৷ এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার প্রবল সম্ভাবনা ভোটের ফলাফলে।