নয়াদিল্লি : ফেসবুকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বহুদিন ধরেই। বিজেপির প্রতি পক্ষপাত দেখায় শক্তিশালী এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। এবার সেই অভিযোগে নতুন মাত্রা দিলেন সোফি ঝ্যাং। ফেসবুকের প্রাক্তন ডেটা সায়েন্টিস্ট সোফি ঝ্যাং দিল্লি দাঙ্গার পরবর্তী সময়ে উসকানি দিচ্ছে বা জনমত প্রভাবিত করছে এমন ভুয়ো অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করার কাজ করছিলেন। সোফির দাবি, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির সঙ্গে যুক্ত ভুয়ো অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়ার পরে তা ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু বিজেপির এক সাংসদের একাধিক ভুয়ো অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগসাজশের প্রমাণ মিললেও, ফেসবুক কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
আরও পড়ুন-নাইজেরিয়ায় গির্জায় হামলা, মৃত ৫০
বিজেপির ওই নেতার পরিচয়ও জানিয়ছেন ঝ্যাং। তিনি দিল্লি লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বীর সাংসদ বিনোদ সোনকার। সোনকার বিজেপির অন্যতম জাতীয় সম্পাদক। ত্রিপুরার সংগঠনের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। এছাড়াও সোনকার সংসদীয় এথিকস কমিটির চেয়ারম্যান। আসল তথ্য চেপে দেওয়া হতে পারে এই আশঙ্কায় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের কাছে সোফি এই সংক্রান্ত ফেসবুকের গোপন, অভ্যন্তরীণ নথি তুলে ধরেছেন। মার্কিন এই ডেটা সায়েন্টিস্ট ২০১৮ থেকে ২০২০-র সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দু’বছর ফেসবুকে কাজ করেছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সোফির অভিযোগ, প্রায় সব দেশেই ফেসবুক শাসক দলকে একই ভাবে সুবিধা পাইয়ে দেয়। ভারতও ব্যতিক্রম নয়।
আরও পড়ুন-বিপাকে বরিস
ফেসবুকের অভিভাবক সংস্থা মেটা-ও বিজেপির প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফেসবুক ছাড়ার পরেই সোফি মুখ খুলেছিলেন। ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনেও সোফি সাক্ষ্য দিতে চেয়েছিলেন। সাংসদদের খতিয়ে দেখার জন্য যাবতীয় নথিও পাঠিয়েছিলেন। এর জন্য কমিটির সচিবালয় থেকে স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে অনুমতি চাওয়া হয়। কারণ, সংসদীয় কমিটির সামনে বিদেশি নাগরিকের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য স্পিকারের ছাড়পত্র প্রয়োজন। ছয় মাস কেটে গেলেও স্পিকার এখনও রা কাড়েননি। সংসদীয় কমিটিকে তাঁর বক্তব্য জানানোর সুযোগ আর মিলবে না বুঝে সোফি এবার সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
আরও পড়ুন-বিতর্কের কেন্দ্রে দেউলিয়া শিল্পপতি, অনিল আম্বানির ৮০০ কোটির খোঁজে নোটিশ
বিজেপির ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলিকে ফেসবুকের নিজস্ব ব্যবস্থায় গভর্নমেন্ট পার্টনার বা হাই প্রায়োরিটি ইন্ডিয়ান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সোফির মতে, এটা হল মেকি পদ্ধতিতে গণতন্ত্রকে প্রভাবিত করার চেষ্টা। এতে অবশ্য আশ্চর্য় হচ্ছেন না তথ্যাভিজ্ঞ মহল। কারণ, রাজনীতিকদের মধ্যে ট্যুইটারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফলোয়ার সবথেকে বেশি। চার বছর আগে ট্যুইটার তদন্ত করে জানিয়েছিল, মোদির ৬০ শতাংশ ফলোয়ারই ভুয়ো!