সোমনাথ বিশ্বাস: তৃণমূলের চাপের কাছে নতিস্বীকার। সুরমায় তৃণমূল কর্মীর উপর হামলার মূলচক্রী বিজেপি নেতা বলাই মালাকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই গ্রেফতারির পর আবার প্রমাণ হয়ে গেল তৃণমূলের জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়েই দলের কর্মী-সমর্থকদের উপর লাগাতার সন্ত্রাস চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। আহত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করেছে কচুছড়া থানার পুলিশ। বিজেপির প্রত্যক্ষ মদতে ঘটা হামলার অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার ধলাইয়ের পুলিশ সুপার রমেশ যাদবের কাছে ডেপুটেশন দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বৃহত্তর আন্দোলন ও প্রতিবাদের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁরা। অন্যদিকে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছিলেন তৃণমূলের ৬ সাংসদের প্রতিনিধিদল। এরপর কার্যত চাপে পড়ে বিজেপি নেতা বলাই মালাকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই বলাই বিজেপির সুরমা মণ্ডলে কিসান মোর্চার সহ-সভাপতি।
আরও পড়ুন-বুলডোজার রাজনীতি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি
প্রসঙ্গত, বুধবার ত্রিপুরার ধলাই জেলার সুরমা বিধানসভা কেন্দ্রে ৭০টি পরিবারের সদস্যরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মালাকার পরিবারের চার সদস্য। জনসমর্থন হারানোর আক্রোশে ওইদিনই গভীর রাতে হামলা চালায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বলাই মালাকারের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানকারী ব্রজবল্লভ মালাকার ও তাঁর ছেলে দীপক মালাকারের উপর নৃশংস আক্রমণ চালায়। দীপকের আট বছরের ছেলে তাপস মালাকারকেও রেহাই দেয়নি তারা। ওই রাতেই আক্রান্তদের ধলাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে সংকটজনক ব্রজবল্লভ মালাকার। প্রত্যেকে এখনও চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন-আসছে ‘বেঙ্গল বীমা কোম্পানি’
বিরোধী দলের নিরীহ কর্মী-সমর্থকদের উপর এই হামলার ঘটনা ঘিরে উত্তাল ত্রিপুরার রাজ্য-রাজনীতি। তৃণমূলের অভিযোগ, ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা মুখে সন্ত্রাসমুক্ত, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছেন। সবটাই লোকদেখানো মিথ্যাচার। উপনির্বাচনের আগে রোজই বিরোধীদের উপর সংগঠিত আক্রমণ চালাচ্ছে শাসকদলের মদতপুষ্ট গুন্ডারা। আসলে এ যেন নতুন বোতলে পুরনো মদ। মুখ্যমন্ত্রী পদে বিপ্লবকে সরিয়ে মানিককে আনা হলেও, বিজেপির চরিত্র বদলায়নি।
আরও পড়ুন-অটিজম ভয় নয়, সচেতন হোন
এদিকে, উপনির্বাচনের আগে ত্রিপুরা জুড়ে বেলাগাম সন্ত্রাস নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানিয়েছেন, আসন্ন চার বিধানসভার উপনির্বাচনে ৬ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী ত্রিপুরায় পাঠানো হবে। প্রতি বুথে হবে ওয়েব কাস্টিং। দিল্লি থেকেও নজরদারি চলবে।