মানস ভট্টাচার্য: সাম্বা ঝড়! চেনা ছন্দে সেলেকাওরা। দক্ষিণ কোরিয়াকে (Brazil vs South Korea) ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল ব্রাজিল। অজস্র সুযোগ নষ্ট না করলে ম্যাচটা আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারত নেইমাররা।
একজনের উপস্থিতি কীভাবে একটা গোটা দলকে বদলে দিতে পারে!
সকালেই ফিফার ওয়েবসাইটে জিকোর সাক্ষাৎকার পড়ছিলাম। উনি বলেছেন, তিতের ব্রাজিল বিশ্বকাপ জেতার ক্ষমতা রাখে। তবে শর্ত একটাই, নেইমারকে মাঠে থাকতে হবে। ও এই ব্রাজিল দলের কেকের উপরের চেরি। ব্রাজিল-দক্ষিণ কোরিয়া (Brazil vs South Korea) ম্যাচটা দেখতে দেখতে জিকোর কথাই মনে পড়ছিল। কী খাঁটি কথাই না বলেছেন ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি। কোরিয়ার বিরুদ্ধে নেইমার শুরু থেকে মাঠে নামতেই রিচার্লিসন, রাফিনহা, ভিনিসিয়াস জুনিয়রদের শরীরী ভাষাটাই বদলে গেল। নেইমার যে এই ম্যাচে দারুণ কিছু খেলেছে, তা কিন্তু নয়। কিন্তু ওর উপস্থিতিতে বাড়তি আত্মবিশ্বাস ছড়িয়ে পড়লো সতীর্থদের মধ্যে।
এবারের বিশ্বকাপে এশিয়ার দেশগুলোর পারফরম্যান্স রীতিমতো নজরকাড়া। তাই সন হিউন-মিনদের দিয়ে বাড়তি আগ্রহ ছিল। দক্ষিণ কোরিয়া প্রচণ্ড গতিতে হাই প্রেসিং ফুটবল খেলে। এই ম্যাচে ওদের সেই সুযোগটাই দিল না তিতের ফুটবলাররা। সাত মিনিটেই প্রথম গোল। ডান দিক থেকে কোরিয়ার বক্সে নিখুঁত থ্রু রেখেছিল রাফিনহা। কিন্তু পা ছোঁয়াতে পারেনি নেইমার। বরং সেই বল পেয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে গোল তুলে নেয় ভিনিসিয়াস। ছ’মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোল। পেনাল্টি আদায় করে নিয়েছিল রিচার্লিসন। কোরিয়ার গোলকিপারকে বোকা বানিয়ে গোল করল নেইমার। চলতি বিশ্বকাপে ওর প্রথম গোল। ১৩ মিনিটেই ২-০! ম্যাচটা তখনই শেষ করে ফেলেছিল সেলেকাওরা।
আরও পড়ুন-টাইব্রেকারে বাজিমাত, শেষ আটে ক্রোয়েশিয়া
২৮ মিনিটে রিচার্লিসনের গোলে ৩-০। ভারি চমৎকার একটি আক্রমণের ফসল এই গোল। পাকুয়েতা ও থিয়াগো সিলভার সঙ্গে পাস খেলে দারুণ একটা গোল করে গেল রিচার্লিসন। বিরতির আগেই পাকুয়েতা ব্রাজিলের চার নম্বর গোলটি করে ফেলে। নেইমার ও রাফিনহা সহজ সুযোগ হাতছাড়া না করলে, হাফ ডজন গোল হয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধেও ছবিটা বদলায়নি। ব্রাজিলের পরপর আক্রমণ, সুযোগ তৈরি এবং মিস। উল্টে ৭৬ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে গোল করে দিয়েছিল পার্ক সুং হো। ৮০ মিনিটে নেইমারকে তুলে নেন তিতে। কোয়ার্টার ফাইনালের আগে নিজের সেরা অস্ত্রকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চাননি ব্রাজিল কোচ। কোরিয়ার প্রশংসা করতেই হবে। বড় ব্যবধানে হারলেও, সনরা কিন্তু নব্বই মিনিট ধরে লড়েছে। ব্রাজিলের গোলকিপার অলিসনকে অন্তত বার তিনেক কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলে দিয়েছিল কোরিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালের নেইমারদের খেলতে হবে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে। সেদিন কিন্তু লড়াইটা আরও কঠিন। তবে তিতের দলও কিন্তু ছন্দ পেয়ে গিয়েছে।