প্রতিবেদন : বিজেপির নির্দেশ মতো মধ্যরাতে নিশাচরের চিঠি গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। চিঠি গিয়েছে দিল্লিতে তার বসের কাছেও। রাজ্যপাল বোস তার রহস্যময় কাজ জারি রেখেছেন। কিন্তু কী আছে এই তথাকথিত কনফিডেনশিয়াল চিঠিতে? গভীর রাতে পাঠানো এই চিঠির মর্মার্থ সবটা জানা না গেলেও এটুকু জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল বোস ননাবিধ অভিযোগ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে। কিন্তু এই চিঠিতে ঠিক কি আছে তা খোলসা করেনি কেউ। আজ এ বিষয়ে সবটা পরিস্কার হতে পারে। কিন্তু যে উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে রাজ্যেপালের পদের মর্যাদা ক্ষুন্ন তো হয়েছেই, একইসঙ্গে জনমানসে এটা আরও পরিস্কার হয়েছে, তিনি আসলে বিজেপির দেওয়া অ্যাসাইনমেন্ট পালন করছেন। যেমনটা তাঁর পূর্বসূরি করতেন।
আরও পড়ুন-দুটি অনবদ্য ছোটদের বার্ষিকী
কিন্তু এই তথাকথিত যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরিই ছিল। তা না হলে তিনি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে কার্যত কেন হুমকি দিলেন! আনন্দ বোসের হুমকি, আমার খুশি এই আচরণ করছি। অপেক্ষা করুন। দেখুন আজ মধ্যরাতে কী পদক্ষেপ নিই। ঠিক এই ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যপাল। একইসঙ্গে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস তাঁর উপাচার্য নিয়োগের ঘটনায় রাজ্য সরকারের ক্ষুব্ধ হওয়ার প্রসঙ্গেও তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্যের নিয়োগ নিয়ে ভাবিত। কারও অসন্তোষ নিয়ে নয়।
আরও পড়ুন-রানিনগর থানা ও তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর, গ্রেফতার ৩৬
এদিকে, রাজ্যপাল যখন তাঁর মধ্যরাতে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ,তখন নাম না করে একটি ট্যুইট করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি লিখেছেন, মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় দেখতে থাকুন। সাবধান! সাবধান! সাবধান! শহরে নতুন ভ্যাম্পায়ার এসেছে। শহরবাসী আপনারা সতর্ক থাকুন। নিজেদেরকে সাবধানে রাখুন। অধীর আগ্রহে ভারতীয় পুরাণ অনুযায়ী রাক্ষস প্রহরের জন্য অপেক্ষা করছি।
আরও পড়ুন-রাজভবনে মুখ্যসচিব, খোঁজ নিলেন আটকে থাকা ফাইলের
মধ্যরাত? কী করবেন? কোন পদক্ষেপ নেবেন? শিক্ষামন্ত্রীকে কোন জাঁতাকলে ফেলবেন? রাজ্যপালের এমন হুঁশিয়ারি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবির বোসের আচরণকে বলছে, এটা নিশাচরীয় হুমকি। অসুস্থ, অশোভনীয় আচরণ করছেন রাজ্যপাল। ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। বিজেপির চামচে ভাত খেয়ে এসব করছেন। এসব না করে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করুন।
আরও পড়ুন-কোল ইন্ডিয়া বেসরকারীকরণের প্রতিবাদে সরব কয়লাখাদান শ্রমিকেরা
প্রসঙ্গত, রাজ্যে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করে একতরফা ভাবে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করে চলেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। শুধু তা-ই নয়, উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে তিনি নিজেও উপাচার্যের দায়িত্বও পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বিকাশ ভবনে রাজ্যের ৩১ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে বৈঠকে ডেকেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বিকাশভবনে সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন মাত্র ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। বাকি ১৯ জন কেন এলেন না? জানতে চেয়ে প্রত্যেককে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা দফতর। যাঁরা উপস্থিত ছিলেন না, তাঁদের প্রত্যেককে চিঠি পাঠাচ্ছে শিক্ষা দফতর। শুধু তা-ই নয়, সোমবারের মধ্যে উপযুক্ত প্রমাণ-সহ জবাব দিতে হবে সেই চিঠির। রাজ্যপালের অঙ্গুলিহেলনেই যে ১৯ জন রেজিস্ট্রার আসেননি সে-ব্যাপারে নিশ্চিত সংশ্লিষ্ট মহল।