বাংলায় বৌদ্ধদের প্রচারক্ষেত্র এবং তার ইতিহাস

বাংলায় বৌদ্ধদের প্রচারের জন্য তৈরি হয়েছে বিভিন্ন বৌদ্ধ মঠ, মিশন এবং সোসাইটি। তবে এ-বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাচীনত্বের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বৌদ্ধদের স্মৃতি এবং ঐতিহ্য। তেমনই কিছু জানা-অজানা বৌদ্ধদের স্মরণের স্থান নিয়ে লিখছেন রাধামাধব মণ্ডল

Must read

নানান বৈচিত্রে ভরা বাংলার মাটি ও অঞ্চল। এই বাংলার নানাস্থানে ছড়িয়ে রয়েছে বৌদ্ধদের স্মৃতি। গৌতমবুদ্ধের স্মৃতিতেই বাংলার মাটিতে গড়ে উঠেছিল বৌদ্ধবিহার এবং স্তূপগুলি। বাংলার মেদিনীপুরের দাঁতনের মোগলমারিতে ২০০৩-০৪ সাল নাগাদ খননকার্য শুরু হয়। আর সেই খননে পাওয়া যায় নকশাযুক্ত ইট, বৌদ্ধভিক্ষু বা সন্ন্যাসীদের বাসস্থানের কুঠুরির চিহ্ন। পাওয়া যায় ত্রিরথ কাঠামো যুক্ত নকশা, যা দেখে গবেষকদের প্রাথমিক অনুমান স্থানটিতে বৌদ্ধদের মন্দির ছিল।

আরও পড়ুন-২০০ আসন জোটানোই কঠিন হবে বিজেপির, ফের বিস্ফোরক নির্মলার স্বামী

সীমান্তবর্তী দাঁতন বাংলার ইতিহাস-প্রসিদ্ধ একটি স্থান। দাঁতনের পরতে পরতে রয়েছে নানা ইতিহাস। যাঁরা ইতিহাস ভালবাসেন, ঘুরে দেখতে পারেন দাঁতনের মোগলমারি বৌদ্ধবিহারের ভূমি। খড়গপুর থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঐতিহাসিক এই মোগলমারি। এখানকার ইতিহাস নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতের অমিল রয়েছে। কিছু মানুষ মনে করেন, অতীতে এই গ্রামের নাম ছিল অমরাবতী। আর সেই অঞ্চলের রাজা বিক্রমাদিত্যের কন্যা সখীসেনার অধ্যয়নের জায়গা ছিল এটি। সেখান থেকেই এই নাম এসেছে বলে অনুমেয়। মোগলমারির এই প্রত্নক্ষেত্র একটি পাঠশালা বলে মনে হয়। অপরদিকে বাংলার পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের কাছে ভরতপুর গ্রাম থেকে উদ্ধার হয় একটি প্রাচীন বৌদ্ধস্তূপ। যার গায়ে ভূমিস্পর্শ মুদ্রায় উপবিষ্ট বুদ্ধমূর্তি পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি। সেগুলি নবম-দশক শতকের ইতিহাস। ১৯৭১-’৭২ সালে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এখানে খনন হয়।
দামোদরের কাছাকাছি ভরতপুরে একটি বৌদ্ধবিহারের সন্ধান মেলে। তা হলে বাংলার সংস্কৃতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্তূপটির ভিত চৌকো। দু’ধরনের ইট তাতে ব্যবহার করা হয়ে ছিল। ৫০ সেন্টিমিটার করে চওড়া দু’টি উনুন পাওয়া গিয়েছে সেখানে। যা দুটো আলাদা সময়ে ব্যবহার করা হত বলে অনুমান। তবে অল্প জায়গায় খননের ফলে সেখানে বিভিন্ন সময়ে তৈরি হয়ে ওঠা আবাস পরিকল্পনার আঁচ সেভাবে সেখানে মেলেনি। এই অঞ্চলের ইতিহাস বেশ প্রাচীন বলেই পুরাতত্ত্ববিদদের ধারণা। ১৯৭৩-’৭৪ সালে আবার উৎখননের পরে পুরাতত্ত্ববিদদের কাছে মোটামুটি পরিষ্কার হয়, এই অঞ্চলে এখন থেকে দু’হাজার বছর আগের সময় মানুষ বসবাস করতেন। পাণ্ডুরাজার ঢিবি, ডিহর, পোখন্নায় প্রাপ্ত প্রত্নবস্তুর সঙ্গে ভরতপুরের নিম্নস্তর থেকে প্রাপ্ত নিদর্শনের মিল রয়েছে। বাংলার আরও এক বৌদ্ধদের স্তূপ নিয়ে গৌরব আর গরিমার শেষ নেই। উত্তরের ভুটিয়া বুটি বিহার বা কর্মফল দার্জি চ্যোলিং মঠটি ভারতের দার্জিলিং জেলার ভুটিয়া বস্তিতে অবস্থিত। এটি একটি বৌদ্ধবিহার। এটি বৌদ্ধলামার রেড সম্প্রদায়ভুক্ত। মূলত সিকিমের নিয়িংমা সম্প্রদায়ের ফোডাং মঠের একটি শাখা। এটি ১৮৭০ সালে দার্জিলিংয়ে স্থানান্তরিত হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে তার আসল অবস্থানটি ছিল অবসেভেটরি পাহাড়ে। তেমনই রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় বৌদ্ধ বিহারের প্রয়োজনীয়তা প্রথম অনুভব করেন সিংহলের বৌদ্ধ অনাগারিক ধর্মপাল (১৮৬৪-১৯৩৩)।

আরও পড়ুন-জেল ভরো আন্দোলনের ডাক দিলেন কেজরিওয়াল

কলকাতা শহর জুড়ে রয়েছে অসংখ্য মন্দির, মসজিদ, চার্চ, তেমনই শহরের বৌদ্ধবিহারগুলি অনেক সময় চোখের আড়ালেই থেকে গেছে যেন। শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত, শ্রীধর্মরাজিকা চৈত্য বিহার। এখানে স্তূপের ভিতরে রয়েছে ভট্টিপ্রলুতে সম্রাট অশোকের স্তূপ থেকে পাওয়া গৌতম বুদ্ধের অস্থি। সেটির ঠিকানা কলেজ স্কোয়ারের কাছে। ৪/এ, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট। অতীতের ২৬ নভেম্বর ১৯২০ তারিখে মহাবোধি সোসাইটির চেষ্টায় এই বিহার স্থাপিত হয়েছিল। অজন্তা শৈলীর এই সৌধ ভারতীয় স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্যে এখনও আলোকিত। ইতিহাসের সঙ্গে অপূর্ব স্থাপত্যের মেলবন্ধনে সৃষ্টি এই বৌদ্ধবিহার ২০০৪ সালে কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের তরফে ঐতিহ্যশালী সৌধ হিসেবে স্থান পেয়েছে।

আরও পড়ুন-বিজেপির অপদার্থতার প্রতিবাদে গাধার পিঠে চেপে মনোনয়ন দিলেন নির্দল প্রার্থী

কালে কালে এই বৌদ্ধবিহারে এসেছেন বহু মানুষ। এসেছেন কৃপাশরণ মহাস্থবির, তিব্বতি ধর্মগুরু চতুর্দশ দলাই লামা। এসেছেন নোবেলজয়ী মাদার টেরেসা, কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও। রবীন্দ্রনাথ এখানেই ১৮ মে ১৯৩৫ সালে বৈশাখী পূর্ণিমার ভাষণে বলেছিলেন— ‘আমি যাঁকে অন্তরের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব বলে উপলব্ধি করি আজ এই বৈশাখী পূর্ণিমায় তাঁর জন্মোৎসবে আমার প্রণাম নিবেদন করতে এসেছি।’
বৌদ্ধধর্মের মহাযান শাখা থেকে কালচক্রযান, সহজযানের মতো শাখাগুলি এই বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রসারলাভ করেছিল সেই সময়। তার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে ‘চর্যাপদ’-এর মতো সাহিত্য নিদর্শনগুলি। আর এই বাংলায় উদ্ধার হওয়া বৌদ্ধস্তূপগুলির ধ্বংসাবশেষ থেকেও প্রমাণ মেলে। যেমন, পশ্চিম বর্ধমানের ভরতপুরের বৌদ্ধস্তূপটিও গুরুত্ব-সহ ইতিহাস মেখে বইছে দামোদর নদের তীরে। তাঁর বর্ণিত নিজের জীবন ও জগৎ দিয়েই সে এই ‘অনুকূল জীবন ধর্মে রূপান্তরণ’-এর মধ্যে বাঙালি আত্মস্থ করেছিল বৌদ্ধধর্মকে একদিন। মেদিনীপুরের মোঘলমারি, দার্জিলিংয়ের ভুটিয়া বুটি বিহারও তার বাইরে নয়।

আরও পড়ুন-নিরাপত্তার স্বার্থে ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের, ভারতীয় পড়ুয়াদের উপর হামলা কিরগিজস্তানে

কলেজ স্কোয়ারের শ্রীধর্মরাজিকা চৈত্যবিহার। কলকাতা শহরের বৌদ্ধবিহারটি অজন্তার ধাঁচে তৈরি হয়। কলেজ স্কোয়ারের অনতিদূরে বেলেপাথরে নির্মিত যে দ্বিতল মনোরম সৌধটি নজর কাড়ে সেটি শ্রীধর্মরাজিকা চৈত্যবিহার। প্রাণের জবচার্নকের এই শহরের বৌদ্ধবিহারগুলি অনেক সময় চোখের আড়ালেই থেকে গেছে। ১৮৯১ সালের মার্চ মাস ভারতবর্ষে বৌদ্ধধর্মের জাগরণের উষাকাল। তারও কয়েক মাস আগে, ২২ জানুয়ারি ধর্মপাল বুদ্ধগয়ায় বোধিসত্ত্ব সিদ্ধার্থের বুদ্ধত্ব লাভের পুণ্যভূমিতে গিয়েছিলেন। মহাবোধি মহাবিহারের অবস্থা নিজের চোখে দেখে আসবেন বলে। তিনি সেখানে গিয়ে দেখেও আসেন, যে বৌদ্ধদের পুণ্যতীর্থ শৈবদের দখলে চলে গেছে। কোনও প্রভাব নেই বৌদ্ধদের আর। সেখানে বৌদ্ধদের পুজোরও আর কোনও অধিকার নেই। সবই হারিয়ে গেছে। তখন তিনি ঠিক করেন, ভারতবর্ষে প্রায় আট শতক ধরে লুপ্তপ্রায় বৌদ্ধ ধর্মের পুনর্জাগরণের চেষ্টা করবেন। ইতিহাসের এই ঘটনাটি ছিল বেশ ইতিহাস সমৃদ্ধ এবং গুরুত্বপূর্ণও। সেইসঙ্গে বৌদ্ধ দেশগুলির মিলিত প্রয়াসে তখনকার রেঙ্গুন যাওয়ার পথে, ধর্মপাল মার্চ মাসে কিছুদিন কলকাতায় থাকেন। সেসময়ই তিনি কলকাতায় বৌদ্ধবিহার তৈরির কথা স্থির করে ফেলেন। এই বৌদ্ধ আন্দোলনের নেতা ছিলেন প্রকৃত অর্থেই ধর্মপাল। বৌদ্ধদের সেই অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্যই ধর্মপালের উদ্যোগে ৩১ মে ১৮৯১ তারিখে কলম্বোতে স্থাপিত হয় ‘বুদ্ধগয়া মহাবোধি সোসাইটি’। আর ধর্মপালই সেখানকার সাধারণ সম্পাদক হন। তবে ১৮৯২ সালের শুরুতেই সোসাইটির প্রধান কার্যালয় কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়। তখন থেকেই কলকাতায় বিহার তৈরির বিষয়টি আরও শক্তিশালী হয়ে দানা বাঁধার সুযোগ তৈরি হয়।

আরও পড়ুন-অতই যদি ন্যায়পরায়ণ তবে কোন ন্যায়ের বলে আনন্দ বোস এখনও রাজভবনে?

সেই মতো কলেজ স্কোয়ারে বিহারের জন্য জমির সন্ধান শুরু হয়। মেলেও ইচ্ছাশক্তির জোরেই। তারও কিছুকাল পর ৪/এ কলেজ স্কোয়ারে (বর্তমান বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটের কাছে) দোতলা বাড়ি-সহ ছ’কাঠা জমি ১৯১৪ সালে, জুলাই মাসে ২০,০০০ টাকায় কেনেন ধর্মপাল। সেকালেও ধর্মপাল নিজস্ব সঞ্চয় থেকে ১০,০০০ টাকা দিয়ে ছিলেন। হনলুলুর মেরি ফস্টার, সোসাইটির বিভিন্ন গঠনমূলক কাজের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনিও পাঠালেন ৯,০০০ টাকার সমমূল্যের ডলার। বাকি টাকা সিংহলের বৌদ্ধদের থেকে এসেছিল সেদিন। গৌতম বুদ্ধের পূতাস্থি সংরক্ষিত হয়েছে এই স্তূপে। সেই স্তূপ-সহ এই বিহার নির্মিত হয়েছে চার রাজপথের সংযোগস্থলে। কলেজ স্ট্রিট আর হ্যারিসন রোডের (মহাত্মা গান্ধী রোড) চার মাথার মোড়ের একেবারে কাছে। ১৯১৫ সালে সোসাইটি, ভারতীয় আইনে ‘মহাবোধি সোসাইটি অব ইন্ডিয়া হল। আর সভাপতি হলেন স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক অনাগারিক ধর্মপাল। ততদিনে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের উদ্যোগে গান্ধার-সহ ভারতবর্ষের স্তূপ থেকে কিছু বৌদ্ধ স্মৃতিচিহ্ন পাওয়া যায়। ভারত সরকার তখন ভাবছিলেন, কী করে সেগুলি জনসাধারণের দ্রষ্টব্য হিসেবে সংরক্ষণ করবে। সেই অনুসারে ভারতের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল চেমসফোর্ড লিখিত ভাবে সোসাইটিকে কিছু প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাবেই উল্লেখ ছিল কলকাতা, সারনাথ আর তক্ষশীলায় জনসাধারণের দর্শনের জন্য উপযুক্ত মন্দির প্রতিষ্ঠার কথা। মহাবোধি সোসাইটি এই সুযোগ হাতছাড়া করেনি আর। অর্থ-সংগ্রহের পাশাপাশি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সেসময়ের কর্তা স্যর জন মার্শালের তত্ত্বাবধানে প্রাচীন বৌদ্ধবিহার নির্মাণ রীতির সঙ্গে অজন্তার শিল্পস্থাপত্যের মিশেলে তৈরি হয় বিহারের নকশা। তখন সৌধের সার্বিক অলঙ্করণের দায়িত্বে ছিলেন কলকাতার সরকারি আর্ট স্কুলের অধ্যক্ষ পার্সি ব্রাউন। এই পরিকল্পনার পর ইমারত তৈরির দায়িত্ব পালন করেন ‘কর অ্যান্ড কোম্পানি’। পাথরে পাথরে রূপ ফুটে উঠল গোপালদাস প্রেমজির হাতের দীর্ঘ ছোঁয়ায়। প্রখ্যাত ইঞ্জিনিয়ার আর ‘ওড়িশা আর্কিটেকচার’-এর লেখক মনমোহন গঙ্গোপাধ্যায় বিনা পারিশ্রমিকে তদারকির দায়িত্ব নেন। এবং বিহার নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯১৮। শেষ হয় প্রায় দু’বছর পর। ধর্মপালকে এই সময়ের বেশির ভাগটাই, ১৯১৬ থেকে ১৯১৯, মাতৃভূমি শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার কাজে যুক্ত থাকার অপরাধে তখন নানারকমের নজরদারিতে রাখে। তাই তাঁকে ইংরেজ সরকারের আদেশে কলকাতায় নজরবন্দি করা হয়। সে-কারণেও বিহার তৈরির পুরো সময়টাই প্রায় তিনি কলকাতায় উপস্থিত ছিলেন। কলকাতার নান্দনিক এই বৌদ্ধবিহারের দ্বার ২৬ নভেম্বর ১৯২০ সালের এক পূর্ণিমার সন্ধ্যায় উদ্বোধন হয়। কলকাতায় যখন বিহারের কাজ শেষের দিকে, সেই সময় মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ভট্টিপ্রলুতে পাওয়া গৌতম বুদ্ধের অস্থি মাদ্রাজ থেকে কলকাতার রাজভবনে নিয়ে আসা হয়েছিল। ১৮৯১ সালে ভট্টিপ্রলুতে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্তূপে খনন হয়। সেখানে তিনটি আধার মেলে। এই আধারগুলির ভেতরে ছিল নানান কালো পাথর, স্ফটিকের তৈরি কয়েকটি পাত্র। যার ভিতরে ছিল মুক্তো, পাতা, সোনার ফুল, আর গৌতম বুদ্ধের অস্থি। আধারের গায়ের লিপি পাঠোদ্ধার করে জানা যায় ওই দেহাবশেষ গৌতম বুদ্ধের ছিল। সেইসঙ্গে লিপির অক্ষর, লিখন-রীতি থেকে মেলে এইগুলি তার বহু পরের মৌর্য যুগের।

আরও পড়ুন-গানে গানে কবিপ্রণাম

মাদ্রাজে রক্ষিত ছিল। সেই সন্ধ্যায় লর্ড রোনাল্ডসে স্বয়ং বৌদ্ধমন্দির, ধর্মরাজিকা চৈত্যবিহার সকলের জন্য উন্মুক্ত করেন। আর দ্বারোদ্ঘাটনের পর স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের স্বাগত ভাষণ এবং অনাগারিক ধর্মপালের বক্তৃতা ছিল আকর্ষণের। এই বিহারের উপাসনাকক্ষে রয়েছে নানা বুদ্ধমূর্তি, সেইসঙ্গে নানান ঐতিহাসিক সামগ্রী। কক্ষের পূর্ব প্রান্তে স্তূপকে ঘিরে সামনের বেদীতে সাজানো শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, চিন, জাপান, থাইল্যান্ড থেকে উপহার হিসেবে আসা নানান বুদ্ধমূর্তি। একসময় এই বাংলায় বৌদ্ধদের ধর্মের এমনই জোরালো আবেদন ছিল, যে বাংলার বহুস্থানই ছিল বৌদ্ধধর্মের অন্তরে। পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা থানার পঞ্চায়েত এলাকা বৌদ্ধবিহার বা বিদবিহার নাম তারই স্মৃতি বহন করছে। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের নানা স্থানের সঙ্গে আউশগ্রামের সোমেশ্বর পণ্ডিতের গ্রাম সোমাইপুরে রয়েছে গৌতমবুড়ো নামের ধর্মদেবতা। ফলে বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে ধর্মের প্রভাব যে বিনিসুতোয় বাঁধা।

Latest article