সুস্মিতা মণ্ডল, ক্যানিং: বাঘ, কুমির আর বিষধর সাপ নিয়ে সুন্দরবনের জীবন। প্রতি বছর বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় বেশ কিছু মানুষের। বিশেষ করে বর্ষার সময় সাপের উপদ্রব বাড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাপে কামড়ালে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে গিয়ে ওঝা-গুনিনের কাছে ছুটে যান মানুষ।
আরও পড়ুন-নদীর ভাঙন পরিদর্শন, জল ও সেচের উন্নয়নের জন্য ঝাড়গ্রামে তিন মন্ত্রী
গত কয়েক বছর ক্যানিং যুক্তিবাদী সমিতি লাগাতার সাপের কামড় ও তার চিকিৎসা নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে গড়ে তোলা হয়েছে সাপে কামড়ানো রোগীদের জন্য বিশেষ চিকিৎসাব্যবস্থা। এই হাসপাতালে সারা বছর অ্যান্টিভেনিন ইঞ্জেকশন পাওয়া যায়। এই অ্যান্টিভেনিন সাপে কামড়ানো রোগীর প্রধান ওষুধ। এছাড়া এই হাসপাতালে ডায়ালিসিসের ব্যবস্থাও আছে। মুমূর্ষ রোগীদের ডায়ালিসিস খুবই প্রয়োজন। সম্প্রতি কুলতলির ঝিঙেখালির বাসিন্দা সুব্রত মণ্ডলকে সাপে কামড়ায়। হাতুড়ে ও বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসার পর কোমাতে চলে যান তিনি। বিষয়টি কুলতলি থানার নজরে আসার পর ক্যানিং হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর তড়িঘড়ি ডায়ালিসিস শুরু করা হয়। কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনেন চিকিৎসকেরা। আপাতত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন সুব্রত। এই হাসপাতালের পরিকাঠামোর জন্য উত্তর ২৪ পরগনা ও অন্যান্য জেলা থেকে সাপে কামড়ানো রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন।
আরও পড়ুন-তৃণমূল নেতার বাড়ি ভাঙচুর
এই হাসপাতালের সাপে-কাটা রোগের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ সমরেন্দ্রনাথ রায় পুরো বিভাগটি পরিচালনা করেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন অন্যান্য চিকিৎসকেরা। এই হাসপাতালে সাপে কামড়ানো রোগীর চিকিৎসার জন্য ডায়ালিসিস ও ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা আছে। অ্যান্টি ভেনিনের পাশাপাশি জীবনদায়ী এই ব্যবস্থা খুবই প্রয়োজন। ডাঃ রায় জানিয়েছেন, সাপে কামড়ানোর পর ঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে এলে রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করে বাড়ি ফেরানো সম্ভব। এই হাসপাতালে সব ব্যবস্থা আছে। ক্যানিং যুক্তিবাদী সমিতিও দীর্ঘদিন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তার সুফল মিলেছে। সাপে কামড়ালেই ওঝা-গুনিন না করে লোকে হাসপাতালে চলে আসছে। হাসপাতালে মৃত্যুহার শূন্যই বলা চলে।