প্রতিবেদন : যে কোনও সংকটজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সেটাকে একটা চ্যালেঞ্জ বা সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করলে করা যায় অনেক অসাধ্যসাধন। এই ধ্রুব সত্যটাকে প্রমাণ করে দিল রাজ্যের (Covid- West Bengal) স্বাস্থ্য দফতর। তথ্য বলছে, কোভিডত্রাসের মধ্যেই দৃষ্টান্তমূলক উন্নতি হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর। অভিশাপ নয়, ছদ্মবেশে এসেছে আশীর্বাদ। ২০২০ থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারি হাসপাতালগুলিতে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট বা সিসিইউ-এর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১০০ শতাংশ। বিশেষ করে শিশুদের করোনার হাত থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ যত্ন নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও অত্যাধুনিক চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করেছে রাজ্য। কোভিড প্রতিরোধে তাই এখন রীতিমতো আত্মবিশ্বাসী বাংলা। স্বাস্থভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের প্রতিটি সাব ডিভিশনাল হাসপাতালেই এখন রয়েছে সিসিইউ-তে চিকিৎসার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা। কোভিডত্রাসের শুরুতে রাজ্যে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ক্রিটিকাল কেয়ার বেডের সংখ্যা ছিল সবমিলিয়ে ৩২৭। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫৮৫। কিছুদিনের মধ্যেই এই সংখ্যাটা দাঁড়াবে ৫২৩৫। এরমধ্যে ১২০০ শয্যা ‘হাইব্রিড’। অর্থাৎ সামান্য কিছু হেরফের ঘটিয়ে খুব সহজেই এগুলিকে শিশুদের চিকিৎসার উপযোগী পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রূপান্তরিত করে তোলা সম্ভব। উন্নয়নের ধারাটা অবাক করার মতোই। ২০২০-র মার্চ-এপ্রিলে যখন করোনা আছড়ে পড়ল মহানগরীর বুকে তখন সরকারি হাসপাতালগুলিতে কোভিড-বেডের সংখ্যা ছিল সাকুল্যে ৩২৮টি। রাজ্যের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কিছুদিনের মধ্যেই সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬,৫০০। সেইসময় হাসপাতাল বেডে পাইপলাইনে অক্সিজেন সরবরাহের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। এখন পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি গ্যাস পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে মোট ২৬,০০০ বেডে। নন-আইসিইউ রোগীদের জন্যও এখন এই পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, কোভিডযুদ্ধে জয়লাভের জন্য ৮০০ ডাক্তার এবং ১২০০ নার্সকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়েছে। অতিরিক্ত ৯০০ মেডিক্যাল অফিসার এবং ১৬০০ নার্সিং স্টাফকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র শিশু এবং ভ্যাকসিন নেওয়া হয়নি এমন রোগীদের চিকিৎসার জন্য। জরুরি পরিস্থিতির জন্য তৈরি আরও ১০,০০০-এরও বেশি শয্যা। অর্থাৎ এবারেও কোভিডযুদ্ধে প্রস্তুত রাজ্য (Covid-West Bengal)।
আরও পড়ুন: ডগ স্কোয়াডকে ঢেলে সাজাচ্ছে কলকাতা পুলিশ