প্রতিবেদন : সুপ্রিম কোর্ট ও কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রকের মধ্যে ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। যার জেরে উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের ২০টি সুপারিশ অনুমোদন না করেই ফেরত পাঠিয়েছে কেন্দ্র। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কমিটির সুপারিশ আবার কলেজিয়ামার কাছে ফেরত পাঠিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। এই ২০ জনের নাম বিভিন্ন হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে মনোনীত করেছিল শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম। কেন্দ্র বলেছে, কলেজিয়াম এঁদের সম্পর্কে আরও ভাবনাচিন্তা করুক।
আরও পড়ুন-জন্ম-মৃত্যু নথিভুক্তি আসছে নতুন বিল
গত ২৫ নভেম্বর কেন্দ্রের ফেরত পাঠানো ফাইলে ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বি এন কৃপালের ছেলে সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৌরভ কৃপালের নামও রয়েছে। যিনি নিজেকে প্রকাশ্যেই সমকামী বলে উল্লেখ করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, কেন্দ্রীয় সরকার এমন সময় ২০ জনের নাম পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠিয়েছে যখন নিয়োগে বিলম্ব নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সোমবারই সর্বোচ্চ আদালত এই ব্যাপারে আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর বক্তব্যের কড়া নিন্দা করেছে। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ নভেম্বর কলেজিয়ামের কাছে ফাইলগুলি ফেরত পাঠানোর সময় সুপারিশকৃত ২০টি নামের ক্ষেত্রে তীব্র আপত্তি প্রকাশ করেছে মোদি সরকার। ২০টি নামের মধ্যে ১১টি নতুন নাম এবং ন’টি নাম শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম পুনরায় উল্লেখ করেছে। অথচ নিয়ম হল, প্রথমবার ফেরত পাঠানো নাম দ্বিতীয়বার কলেজিয়াম পাঠালে তা গ্রহণ করতেই হবে। প্রশ্ন উঠছে, বিজেপি সরকারের মনমতো না হলেই এভাবে নাম ফেরত পাঠানো বা ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করছে মোদি সরকার। এতে সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা।
আরও পড়ুন-ধর্ষিতা নাবালিকাকে ফের ধর্ষণ শিক্ষকের!
কয়েকদিন আগেই কলেজিয়াম পদ্ধতির মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তাঁর দাবি, কলেজিয়াম ব্যবস্থায় আদৌ স্বচ্ছতা নেই। রিজিজুর এই বক্তব্যে সোমবার তীব্র আপত্তি জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কাউলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কলেজিয়াম পদ্ধতি সম্পর্কে রিজিজুর সাম্প্রতিক মন্তব্য খারিজ করে বলেছে, এ ধরনের মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না। উচ্চতর বিচার বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে টালবাহানা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ সাফ জানিয়েছে, আসল সত্যিটা হল সরকার কলেজিয়ামের নামগুলি অনুমোদন করছে না। কিছু নাম গত দেড় বছর ধরে ঝুলে আছে। আদালত আরও বলে, সরকার নামগুলি গোপন রাখতে পারবে এমনটা হতে পারে না। কিন্তু সরকারের এই টালবাহানায় বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। চলতি নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রের আপত্তির পরেও সর্বোচ্চ আদালত যদি কোনও নাম বাদ দিতে রাজি না হয় তাহলে শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।